আগস্ট ০২, ২০২১ ১৬:২৬ Asia/Dhaka

লন্ডনভিত্তিক ইসরাইলি ধনকুবের ইয়াল অফারের ‘জোডিয়াক মেরিটাইম কোম্পানি’ শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, ওমান উপকূলে ইসরাইলি মালিকানাধীন একটি জাহাজে হামলা হয়েছে। ওই হামলায় তাদের দুই ক্রু নিহত হয়েছে।

জাহাজে হামলার ঘটনার পর  ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত কোনো দলিল প্রমাণ ছাড়াই দাবি করেছেন, আমাদের হাতে যে গোয়েন্দা রিপোর্ট রয়েছে তাতে দেখা যায় ইসরাইলি জাহাজে হামলার সাথে ইরান জড়িত রয়েছে। এদিকে, ওমান সাগরে ইসরাইলি মালিকানাধীন একটি জাহাজে হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করে ওয়াশিংটন ও তেল আবিব যে বক্তব্য দিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবজাদে এই অভিযোগকে ‘শিশুসুলভ’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, ‘আমেরিকায় ইহুদিবাদী লবির চাপে ওয়াশিংটন ইরানকে অভিযুক্ত করে বক্তব্য দিয়েছে’। তিনি আরো বলেন, ‘অবৈধ ইহুদিবাদী সরকারকে ইরানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন বন্ধ করতে হবে। তেহরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলের এ ধরনের অভিযোগ উত্থাপন এটিই প্রথম নয়’। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বায়তুল মোকাদ্দাস দখলদার ইসরাইল এ অঞ্চলের যেখানেই পা বাড়িয়েছে সেখানেই নিরাপত্তাহীনতা, সহিংসতা, হত্যা ও যুদ্ধ বাধিয়েছে। আর এর জন্য দায়ী সেইসব দেশ যারা ইসরাইলকে এ অঞ্চলে ডেকে এনেছে।

এ অঞ্চলের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে ইসরাইলের হাত রয়েছে এবং নাশকতার মাধ্যমে তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে ইরানের পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সাইয়্যেদ হাদি বোরহানি বলেছেন, আমরা সবাই জানি যে গত বহু বছর ধরে ইসরাইল ইরানের বিরুদ্ধে অসংখ্য নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। আর এটাকে তেহরান উপেক্ষা করতে পারে না। সম্প্রতি জাহাজে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে ইসরাইল এ অঞ্চলে নতুন করে সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর পরমাণু সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসা এবং এ ইস্যুতে বিরাজমান মতভেদ নিরসনের একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ কারণে ইসরাইল ক্ষুব্ধ ও চিন্তিত হয়ে পড়েছে। সে কারণে তারা নানান কৌশলে এমন এমন এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে যাতে যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু সমঝোতায় ফিরে না আসে। 

ইসরাইলের সাবেক সংসদ সদস্য তালাব আবু আরার সম্প্রতি ফাজিরে বন্দরে তেল ট্যাংকারে হামলার ঘটনায় ইসরাইলের হাত থাকা এবং এ অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টিতে ইসরাইল ও তার মিত্রদের প্রচেষ্টার কথা বলেছিলেন। তাই নিঃসন্দেহে সর্বশেষ ইসরাইলি জাহাজে হামলার ঘটনায় যারই হাত থাকুক না কেন এটাকে কেন্দ্র ইসরাইল এ অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। তাদের মতে এ অঞ্চলের আরব দেশগুলোর এটা বোঝা উচিত যে এ অঞ্চলে ইসরাইলের উপস্থিতি শান্তি ও নিরাপত্তা দিতে পারবে না। কেননা ইসরাইল হচ্ছে একটি দখলদার শক্তি এবং তারা আগ্রাসী ও যুদ্ধবাজ। তাই ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে আরব সরকারগুলো অবৈধ ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিতে পারে না। #      

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২

ট্যাগ