জুলাই ১৩, ২০২১ ১৮:৪৭ Asia/Dhaka

শ্রোতা বন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের আসর 'প্রিয়জন'। প্রত্যেক সপ্তাহ’র মতো আজও আপনাদের সাথে আছি আমি গাজী আবদুর রশিদ, আমি আকতার জাহান এবং আমি আশরাফুর রহমান।

আশরাফুর রহমান: আসরের শুরুতেই আমি একটি হাদিস শোনাতে চাই। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আল্লাহর সামনে লজ্জাবোধ করো, যেভাবে তোমরা তোমাদের জাতির মাঝে ন্যায়নিষ্ঠ লোকদের সামনে লজ্জাবোধ করে থাকো।”

আকতার জাহান: খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি হাদিস শুনলাম। আমরা সবাই তা মেনে চলার চেষ্টা করব- এ কামনা করে নজর দিচ্ছি চিঠিপত্রের দিকে।

আসরের প্রথম চিঠিটি এসেছে ভারতের আসামের বড়পেটা জেলার কান্দুলিয়ার সকাল-সন্ধ্যা রেডিও লিসেনার্স ক্লাব থেকে আর পাঠিয়েছেন আব্দুস সালাম সিদ্দিক।

গাজী আবদুর রশিদ: বহুদিন পর এ শ্রোতাবন্ধুর চিঠি পেলাম। একসময় তিনি নিয়মিত চিঠি লিখতেন।

আশরাফুর রহমান: হ্যাঁ, আপনি ঠিকই ধরেছেন। তার চিঠিতে প্রেরকের তালিকায় লেখা থাকত আব্দুস সালাম সিদ্দিক, জোহরা খাতুন, লিপি ও রোজী। লিপি ও রোজী আব্দুস সালাম ভাইয়ের দুই মেয়ে। আর জোহরা খাতুন হচ্ছেন তার সহধর্মীনি। 

আকতার জাহান: আশরাফ ভাই দেখছি অনেক কিছু মনে রেখেছেন! যাইহোক, আমি বরং আব্দুস সালাম সিদ্দিক ভাইয়ের চিঠিটিই পড়ে শোনাচ্ছি। তিনি লিখেছেন,   "আমার দৃষ্টিতে রেডিও তেহরান-এর বাংলা অনুষ্ঠান হলো- আমার কুড়ানো মানিক, সাত রাজার ধন। সেই জন্ম যাতনার দুই বছর পর ১৯৮৪ সালের কোনো এক জোৎস্না বিধৌত রাতে বাড়ির আঙিনায় বসে কুড়িয়ে পেয়েছি। আজ সে রূপালী জয়ন্তী পেরিয়ে স্বর্ণ জয়ন্তীর জয়ধ্বনির দিকে ধাবমান। শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক মহীরূহ রূপে জ্বাজল্যমান। এতোগুলো বছর মজলুম-নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের পাশে থেকে বলিষ্ঠ ক্ণ্ঠস্বর হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। সেই সাথে নৈতিকতা ন্যায় পরায়ণতা, চরিত্রবান ও আলোকিত মানুষ হিসেবে এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার বড় ভূমিকা কাঁধ পেতে নিয়েছে। এ বেতারের সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানগুলো যেন এক একটা হিরে-মুক্তোর ডালি। এতে বিভিন্ন জ্ঞানের সমাহারে সবাইকে মুগ্ধ করে। তাই রেডিও তেহরানের এতো আকাশ ছোয়া খ্যাতি।"

গাজী আবদুর রশিদ: রেডিও তেহরান সম্পর্কে ব্যতিক্রমধর্মী মূল্যায়নের জন্য আব্দুস সালাম সিদ্দিক ভাইকে ধন্যবাদ। আশা করি এখন থেকে নিয়মিত লিখবেন।

ভারতের পর এবার বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানার বন্ধন & লাকী শ্রোতা সংঘ থেকে আসা একটি মেইলের দিকে নজর দিচ্ছি। এটি পাঠিয়েছেন ক্লাব সভাপতি নজরুল ইসলাম।

বর্ষাস্নাত প্রকৃতির এক নির্মল পরিবেশ থেকে রেডিও তেহরানের কর্মী ও কলাকুশলীদেরকে প্রীতি, শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা জানাবার পর তিনি চিঠিটি শুরু করেছেন। লিখেছেন,  "গত ২০ জুন তারিখের ‘আদর্শ মানুষ গড়ার কৌশল’ শীর্ষক আলোচনাটি আমার মনোযোগকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছে। স্নেহ, ভালোবাসার মর্মকথা ঐদিন আমি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছি। এত গঠনমূলক আলোচনা কার না ভালো লাগে! জানলাম শিশুদের চাহিদা শুধু খাবার আর ভরণপোষণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; সেখানে স্নেহ ভালোবাসার গুরুত্ব অপরিসীম। স্নেহ ভালোবাসাবিহীন পরিবারের শিশুরা হীনমন্যতায় ভোগে ও আস্থাহীন হয়ে পড়ে। সৌহার্দ্য ও ভালোবাসাহীন পরিবারের শিশুরা বিপথগামী হয়। তাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যায়। আশা করি এ ধরনের দার্শনিক ও জ্ঞানগর্ভ আলোচনা ভবিষ্যতেও শুনতে পাব।"

আশরাফুর রহমান: আদর্শ মানুষ গড়ার কৌশল অনুষ্ঠানটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমাদেরও ভালো লাগছে। চিঠি আর মতামতের জন্য নজরুল ইসলাম ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আশরাফুর রহমান: আসরের পরের চিঠিটি এসেছে কিশোরগঞ্জের ভূবিরচর গ্রাম থেকে আর পাঠিয়েছেন আরআরআইবি ফ্যান ক্লাব কিশোরগঞ্জের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম আতিক।

বর্ষার রিমঝিম ও বৃষ্টি ভেজা কদম ফুলের শুভেচ্ছা জানানোর পর তিনি লিখেছেন, "মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রতিনিধি হিসেবে সমসাময়িক শক্তি হিসেবে ইরান অন্যতম। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় সন্ত্রাসী ও ইহুদিবাদী ইসরা্ইলের আগ্রাসন ও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের পক্ষে জনমত তৈরি এবং তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা তারই প্রমাণ। শুধু তাই নয়, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরাকের অসহায় মুসলমানদের নানাভাবে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে ইরান। আর এই সংবাদ পরিবেশন করে বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরিতে অনন্য ভূমিকা রেখে চলছে রেডিও তেহরান।"

চিঠির একাংশে তিনি জানিয়েছেন রেডিও তেহরান থেকে প্রচারিত ‘আদর্শ মানুষ গড়ার কৌশল’ ও ‘রংধনু আসর’- তার খুব ভালো লাগে।

আকতার জাহান: ভাই আতিকুল ইসলাম, নির্যাতিত ও বিপদগ্রস্ত মুসলিম দেশগুলোতে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সহায়তা এবং রেডিও তেহরানর ভূমিকার বিষয়টি তুলে ধরায় আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আশা করি আবারো আপনার চিঠি পাব।

গাজী আবদুর রশিদ: বেশ কিছু চিঠির জবাব দেওয়া হলো। এবার আমরা ভারতের শ্রোতাবন্ধু নিজামুদ্দিন সেখের সঙ্গে সরাসরি কথা বলব।

আকতার জাহান: বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজেলে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ শাহাদত হোসেন পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

সালাম, প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানানোর পর তিনি ইরানের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে কয়েকটি প্রশ্ন করেছেন। জানতে চেয়েছেন- ইরানে প্রাথমিক শিক্ষা কি বাধ্যতামূলক? কত বছর পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা বিবেচনা করা হয়? সেই সাথে আরো জানতে চাই: ইরানে শিক্ষার হার কত শতাংশ? তন্মধ্যে পুরুষ ও নারী শিক্ষার হারের মধ্যে পার্থক্য কেমন?

আশরাফুর রহমান: ভাই শাহাদত হোসেন, আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিচ্ছেন রেডিও তেহরানের সিনিয়র সাংবাদিক ড. সোহেল আহম্মেদ।  

গাজী আবদুর রশিদ: প্রশ্ন করার জন্য শাহাদত ভাইকে আর উত্তর দেওয়ার জন্য সোহেল ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

প্রশ্নোত্তরের পর আবারো নজর দিচ্ছি চিঠিপত্রের দিকে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুপী থেকে মহ: হাফিজুর রহমানের বেশকিছু মেইল আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। একটি মেইলে তিনি লিখেছেন, "নিয়মিত শ্রোতা দর্শক হিসেবে আমার প্রিয় রেডিও তেহরান। দর্শক বলার যথেষ্ট কারণ আছে। এখন আর শুধু শোনা নয়, দেখছিও। ওয়েব সাইট, ফেসবুক আর ইউটিউবে রাখা নানা ভিডিও দেখে আমি আপ্লুত। সেইসাথে ওয়েব সাইটে এক মাসের পুরো অনুষ্ঠান রাখা থাকে। রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগ অনুষ্ঠান শোনা ও দেখার বিরাট একটা সুযোগ আমাদের করে দিয়েছে। তার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।" ইউটিউবে রেডিও তেহরানের লাইভ অনুষ্ঠানের সাউন্ড কোয়ালিটি অত্যন্ত ভালো বলে এ শ্রোতাবন্ধু জানিয়েছেন।

আকতার জাহান: ইউটিউবে আমাদের লাইভ অনুষ্ঠান ভালো শোনা যাচ্ছে- এটা অনেক আনন্দের খবর। ইউটিউবে যারা রেডিও তেহরানের লাইভ অনুষ্ঠান শুনতে চান তারা ভিজিট করতে পারেন এই চ্যানেলে- youtube.com/RadioTehranBangla1982

আশরাফুর রহমান: আসরের এবারের মেইলটি এসেছে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার মল্লিকাদহ বালাপাড়া থেকে। আর পাঠিয়েছেন রায় শ্রোতা ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হরিদাস রায়।

তিনি এ চিঠিতে তাদের ক্লাবের তথ্যসম্বলিত দুটি পিডিএফ ফাইল পাঠিয়েছেন। সেইসাথে অনুরোধ করেছেন রেডিও তেহরান থেকে যেন ক্লাবটির নিবন্ধন দেওয়া হয়।

গাজী আবদুর রশিদ: ক্লাবের নিবন্ধনের আবেদনটির জন্য হরিদাস রায়কে ধন্যবাদ। তবে, বর্তমানে রেডিও তেহরান ক্লাব নিবন্ধন দিচ্ছে না, ভবিষ্যতে যখন দেওয়া হবে তখন আপনারা নিশ্চয়ই পাবেন। অবশ্য চলতি বছর আমরা তিনটি ক্লাবকে শ্রেষ্ঠ শ্রোতা ক্লাবের স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছি। আপনারা এতে অংশ নিতে পারেন।

আকতার জাহান: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার প্রত্যাশা বেতার শ্রোতা সংঘের সভাপতি এস, এম, ছবেদ আলী পাঠিয়েছেন পরের মেইলটি।

বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের শুভেচ্ছা জানানোর পর তিনি লিখেছেন, “কিছুদিন আগে রেডিও  তেহরানের  বিশ্ব সংবাদে  ইরানের  দূর নিয়ন্ত্রিত  সার্জারী  করার কথা জানলাম। আরও  জানলাম- এই টেলি সার্জারীর কাজে ব্যবহৃত হয়েছে ‘সিনা রোবট'। ইরানের এই সাফল্যে আমি মহাখুশি।”

চিঠির শেষাংশে তিনি উল্লেখ করেছেন একবার রেডিও তেহরানের কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী  হয়েও আজ পর্যন্ত পুরস্কার হাতে পাননি।

আশরাফুর রহমান: এস, এম, ছবেদ আলী ভাইয়ের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে ইরানের ডাকযোগাযোগ দীর্ঘ দিন ধরেই বন্ধ আছে। একই কারণে রেডিও তেহরানের কর্মীরাও দেশে যাচ্ছেন না। সেজন্য কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার পাঠানোও সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিজয়ীদের সবাই পুরস্কার পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।

আসরের শেষ চিঠিটি ক্লাব কার্যক্রম সম্পর্কে। এটি এসেছে সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব বাংলাদেশ-এর সিলেট জেলা শাখা থেকে। এতে বলা হয়েছে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসিকে অভিনন্দন জানাতে গত ২৫ জুন বিকাল ৪টায় সিলেট কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় একটি বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করে সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব-এর সিলেট জেলা শাখা। ক্লাবের সভাপতি মো: চাঁন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রেডিও এক্টিভিস্ট ও ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান দিদারুল ইকবাল।

গাজী আবদুর রশিদ: সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাবের সিলেট জেলা শাখাকে ধন্যবাদ এমন একটি সময়োপযোয়ী কর্মসূচি পালন করার জন্য।

অনুষ্ঠানের এবারে কয়েকজন ডিএক্সার বন্ধুর নাম-ঠিকানা জানিয়ে দিচ্ছি যারা আমাদের অনুষ্ঠান শুনে শ্রবণমান রিপোর্ট পাঠিয়েছেন।

  • ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ থেকে এসএম নাজিমউদ্দিন
  • পশ্চিম মেদেনিপুর থেকে সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য
  • দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে বিধান চন্দ্র সান্যাল।
  • পূর্ব বর্ধমান থেকে হাফিজুর রহমান
  • ছত্তিশগড়ের ভিলাই থেকে আনন্দমোহন বাইন
  • নয়াদিল্লি থেকে জয়ন্ত চক্রবর্তী
  • বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ থেকে শাহাদত হোসেন
  • এবং টাঙ্গাইল থেকে আবু তাহের।

আকতার জাহান: যারা অনুষ্ঠান শোনার পাশাপাশি কষ্ট করে শ্রবণমান রিপোর্ট পাঠিয়েছেন তাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তো বন্ধুরা, আজও অনুষ্ঠান শেষ করব একটি গান শুনিয়ে। ‘হাবিবি’ শিরোনামের গানটির কথা ও সুর আশরাফ বিন আবদুল হকের। আর গেয়েছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় নাশিদ শিল্পী ইকবাল এইচ জে।  

আশরাফুর রহমান: তো বন্ধুরা, আপনারা গানটি শুনতে থাকুন আর আমরা বিদায় নিই প্রিয়জনের আজকের আসর থেকে।  

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ