এপ্রিল ১৭, ২০২৩ ১৬:০৩ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: আজ ১৭ এপ্রিল সোমবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম :

  • মানুষের দৃষ্টি সরাতে সরকার নিজেই আগুন লাগাচ্ছে: মির্জা ফখরুল-ইত্তেফাক
  • মেঘ আসছে, আর্দ্রতা বেড়ে কমেছে তাপমাত্রা, ঘাম আর অস্বস্তি বাড়বে-প্রথম আলো
  • গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা তীব্র দাবদাহে শিশু ও বয়স্করা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে-যুগান্তর
  • তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং-কালের কণ্ঠ
  • কুমিল্লায় দুই টেনের সংঘর্ষ : ৩ জন সাময়িক বহিষ্কার, দুটি তদন্ত কমিটি-বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • নির্বাচিত কলাম-সময় অসময়-এত আগুন তবু কেন সতর্ক নই?-মানবজমিন

কোলকাতার শিরোনাম:

  • ১৪৪ এখনও জারি উত্তরপ্রদেশে, ‘‘পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যে যদি কেউ খুন হন, তবে আমজনতার নিরাপত্তা কোথায়?-অখিলেশ যাদব -আনন্দবাজার পত্রিকা
  • ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চক্রান্ত করছেন!’, রাজ্য সরকারের পতন নিয়ে মন্তব্যে শাহর পদত্যাগ দাবি মমতার-সংবাদ প্রতিদিন
  • গ্রেপ্তার তৃনমূল বিধায়ক-গণশক্তি

এবার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মানুষের দৃষ্টি সরাতে সরকার নিজেই আগুন লাগাচ্ছে: মির্জা ফখরুল-ইত্তেফাকের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজির কারণে মার্কেটগুলো অরক্ষিত- এমন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কিছু হলেই খোঁজেন বিএনপি আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। অথচ সরকারের লোকেরাই বঙ্গবাজারে আগুন লাগিয়েছে, ব্যবসায়ীরা তাই বলেছে। অগ্নিকাণ্ডের জন্য সম্পূর্ণ দায় সরকারের। তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর দাবি থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতেই সরকার নিজেই আগুন লাগাচ্ছে, উল্টো বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। আজ দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন

গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা

গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা তীব্র দাবদাহে শিশু ও বয়স্করা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বড় সমস্যা ডিহাইড্রেশন * অনেকে মাথাব্যথা, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত * ঘরের বাইরে যেতে না পারলে ভালো -স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ--যুগান্তর পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, সারা দেশে মৃদু থেকে তীব্র দাবদাহ বইছে। প্রচণ্ড গরমে দেশে হিট স্ট্রোকে মৃত্যুর খবরও পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, দাবদাহে শিশু, বয়স্ক ও কোমরবিডিটি (বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি) রোগীরা বেশি বিপাকে পড়ছেন। তাদের পরিচর্যায় তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগের মেডিসিন বিভাগের প্রধান আবাসিক চিকিৎসক (আরএস) শাইখ আবদুল্লাহ জানান, সারা দেশে কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে। গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছে। অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ মানুষ হাসপাতালে আসছে। তাদের অনেকে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ, মাথাব্যথা, হিটস্ট্রোক, বমি, ডায়রিয়া, অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টের কথা বলছেন। গলাব্যথা, কাশি, সর্দি ও ঘুমের সমস্যা বেড়ে যওয়ার কথাও বলছেন অনেকে।

ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, সারা দেশে কয়েকদিন ধরে চলা তীব্র গরমে যে কেউ যে কোনো সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। কৃষক ও রিকশা চালকদের মতো যারা রোদে পুড়ে ঘাম ঝরানো পরিশ্রম করেন তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি ডায়াবেটিস ও কিডনি বিকলসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, বয়স্ক ও শিশুরাও ঝুঁকিতে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তীব্র গরমে ডিহাইড্রেশন অর্থাৎ শরীরে পানিশূন্যতা বা স্বল্পতা দেখা দিচ্ছে। অনেকের রক্তচাপ ও প্রস্রাব কমে যেতে পারে। গরমে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রির উপরে উঠলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া ও পালস (নাড়ির স্পন্দন) কমে যেতে পারে। এ সময় ঘরের বাইরে যতটা কম যাওয়া যায়, ততই ভালো। যারা প্রয়োজনে বাইরে যাচ্ছেন তারা পানির সঙ্গে একটু লবণ মিশিয়ে স্যালাইনের মতো করে খেতে পারেন। এতে ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বের হওয়া লবণের ঘাটতি পূরণ হবে। এছাড়া ঢিলেঢালা সুতি কাপড় পড়তে হবে।

কিডনি বিকল রোগীদের কিডনিতে চাপ পড়তে পরে। যারা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাচ্ছেন গরমে তাদের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। প্রখর রোদে বেশি সময় বাইরে অবস্থান করলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। মাথা ঝিম ঝিম করা, মাথা ঘোরা, হার্টের ওপর চাপ তৈরি হয়ে কলাপস (রক্তচাপ কমে গিয়ে অজ্ঞান হওয়ার প্রবণতা) হতে পারে। মোটা বা স্থূল ব্যক্তিদের শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে গিয়ে সংকট তৈরি হতে পারে। তীব্র রোদে ত্বক পুড়ে যেতে পারে। ডায়রিয়া হতে পারে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা শামসাদ যুগান্তরকে বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে বর্তমানে শিশুদের চিকেন পক্স, মামসসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি হচ্ছে। গরমকালে ধুলাবালি বেড়ে যাওয়া শিশুদের অ্যাজমা ও কাশির প্রকোপ বেড়ে যায়। অনেকের ঘামাচি ও পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তবে আতঙ্কিত না হয়ে শিশুদের স্বাভাবিক পানি পান করাতে হবে। কাপড় ভিজিয়ে শিশুদের কিছুক্ষণ পরপর মুছে দিতে হবে। নিয়মিত গোসল করাতে হবে। রোদ এড়িয়ে চলতে হবে।

নিউ সুপার মার্কেটে আগুন

মানবজমিনের- নিউমার্কেটের পাশে নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লেগেছে। কথায় আছে আগুন আর পানি কিছুই রাখে না। আগুন সবকিছু পুড়িয়ে ফেলে। আর পানি সবকিছু ভেসে নিয়ে যায়। অথচ এই আগুন আর পানি না হলে মানুষের বেঁচে থাকাই মুশকিল। পানির অপর নাম জীবন। আবার আগুন ছাড়া জীবনধারণ সম্ভব নয়। আগুন ছাড়া খাবার তৈরির বিকল্প নাই। সেই আদি যুগে বাঁচার প্রয়োজনে পাথরে পাথর ঘষে মানুষ আগুন আবিষ্কার করেছিল। সেই আগুন এখন আতঙ্ক ও ভয়ের কারণ। কিন্তু কেন?  এইতো কিছুদিন আগে বঙ্গবাজার পুড়ে ছাই হয়ে গেল। 

আগুন এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল যে, ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৫০টি ইউনিট মিলে যৌথভাবে লড়াই করেও আগুন নেভাতে ৭ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। বঙ্গবাজারের আগুন আতঙ্ক দূর হতে না হতেই নিউ সুপার মার্কেটে আবার আগুন লাগলো। এটা কিসের আলামত? বঙ্গবাজারের আগুন লেগেছিল ভোরে। নিউ সুপার মার্কেটেরও আগুন লাগলো ভোরে। বঙ্গবাজারে আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো জানা যায়নি। নিউ সুপার মার্কেটের আগুন লাগার কারণও আদৌ জানা যাবে কিনা সন্দেহ। দুটিই ভয়াবহ বাস্তব ঘটনা। বঙ্গবাজারে নিমিষে পুড়ে ছাই গেল হাজার হাজার কোটি টাকা। অনেক মানুষের স্বপ্নও পুড়ে গেল। নিউ সুপার মার্কেটেও তাই ঘটলো। পুড়ে গেল স্বপ্ন, পুড়ে গেল ভবিষ্যৎ।  এখন প্রশ্ন হলো, এই যে একের পর এক বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হাজার হাজার কোটি টাকা ছাই হয়ে যাচ্ছে এর শেষ কোথায়? অতীত থেকে আমরা কি আদৌ শিক্ষা নিচ্ছি?

দেশের মানুষের গড় আয়ু কমল-মানবজমিন/যুগান্তর/ইত্তেফাক

আগের তুলনায় কমেছে দেশের মানুষের গড় আয়ু। এই প্রথমবার বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু কমল। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, এখন দেশে একজন মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৩ বছর। যা আগে ছিল ৭২ দশমিক ৮ বছর। বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরুষের গড় আয়ু এখন ৭০ দশমিক ৬ বছর; আর নারীর গড় আয়ু ৭৪ দশমিক ১ বছর।

 এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

মমতা বন্দোপাধ্যায়

‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চক্রান্ত করছেন!’, রাজ্য সরকারের পতন নিয়ে মন্তব্যে শাহর পদত্যাগ দাবি মমতার-সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ৩৫ আসনে জেতার টার্গেট দিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। গত শুক্রবার সিউড়ির জনসভা থেকে এ নিয়ে দলকে চাঙ্গা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ”চব্বিশে বাংলা থেকে ৩৫ আসন বিজেপিকে দিন, ২০২৫-এই তৃণমূল সরকারের পতন হবে।” কীভাবে তিনি নির্বাচিত সরকারকে এই উপায় উৎখাতের কথা বলেন, তা নিয়ে সেদিনই নিন্দায় মুখর হয়ে উঠেছিল শাসকদল। নেতা, মন্ত্রীরা আলাদা আলাদাভাবে এ নিয়ে নিজেদের বক্তব্য পেশ করেছিলেন। তিনদিন পর, সোমবার অমিত শাহর সেই মন্তব্যের জবাবে তাঁর পদত্যাগ চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সোমবার নবান্নে (Nabanna) সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এনিয়ে কার্যত গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ”উৎসবের আমেজ ছিল, তাই কোনও রাজনীতির কথা বলিনি। কিন্তু আজ উত্তরটা দিতেই হচ্ছে।তিনি কোন আইন মেনে বললেন যে বাংলা থেকে বিজেপি ৩৫ আসনে জিতলে আর অপেক্ষা করতে হবে না, তারপরই তৃণমূল সরকারের পতন ঘটবে?

অমিত শাহ

দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ করে তিনি একথা বলতে পারেন না। দেশরক্ষার বদলে একটা নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করছেন! এত ঔদ্ধত্য! আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইছি।”

৭২ ঘণ্টার ম্যারাথন জেরা, অবশেষে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার জীবনকৃষ্ণ সাহা- সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির এজেন্ট হিসাবে পরিচিত কৌশিক ঘোষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, এই অভিযোগে শুক্রবার তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। ওইদিন দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে জীবনকৃষ্ণকে টানা জেরা করে যান চার সিবিআই (CBI) আধিকারিক। সূত্রের দাবি ছিল, কৌশিককে জেরা করেই বড়ঞার বিধায়কের নাম পেয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। তারপরেই তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে গিয়ে জেরা শুরু করেন।প্রায় ৭২ ঘন্টা পর সোমবার ভোর পাঁচটা পনেরো নাগাদ বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jiban Krishna Saha) কে গ্রেফতার করে কলকাতা নিজাম প্যালেস নিয়ে গেলেন সিবিআই আধিকারিকেরা।বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি চলাকালীনই নিজের দু’টি মোবাইল ফোন পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক।পুকুর ছেঁচে সেই মোবাইল উদ্ধারের কাজ শুরু করে সিবিআই। প্রায় দেড়দিন কেটে যাওয়ার পরে উদ্ধার হয় একটি মোবাইল।

দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ। সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে স্থগিতাদেশ। আগামী ২৪ এপ্রিল মামলায় পরবর্তী শুনানি। কিন্তু আজই আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিল সিবিআই। কুন্তল ঘোষের চিঠি স‌ংক্রান্ত বিষয়ে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, দুপুর দেড়টা নাগাদ ইমেল পাঠানো হয়েছে অভিষেকের কাছে।

আতিক

মাথা, ঘাড়, বুক, কোমর— ২২ সেকেন্ডে ঝাঁঝরা আতিক! ৮ বুলেটের সন্ধান ময়নাতদন্তে-আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, আতিক এবং আশরফের জন্য মোট ১৩টি গুলি খরচ করা হয়েছিল। প্রথমেই আতিকের মাথায় গুলি করা হয়। তার পর একে একে গুলি লাগে তাঁর ঘাড়ে, বুকে এবং কোমরে।

দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, এক দিন পরেই ছেলের পাশে কবর দেওয়া হল বাবা আতিককে, ১৪৪ এখনও জারি উত্তরপ্রদেশে।ময়নাতদন্তের পর শেষকৃত্যের জন্য আতিক এবং আশরফের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অ্যাম্বুল্যান্সে করে প্রয়াগরাজের পৈতৃক ভিটের কাছে কাসারি মাসারি কবরখানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের দেহ।গ্রামের কবরখানায় শনিবারই ছেলের দেহ কবর দেওয়া হয়েছে। শেষকৃত্যে তাঁদেরও আসার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। রবিবার সেই ছেলের পাশেই কবর দেওয়া হল বাবা আতিক আহমেদ এবং কাকা আশরফকে। কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই সম্পন্ন হল শেষকৃত্য।

শনিবার রাতে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে টিভি চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে কথা বলতে বলতে খুন হয়েছিলেন ‘গ্যাংস্টার’ তথা সমাজবাদী পার্টির প্রাক্তন সাংসদ আতিক এবং আশরফ। খুন হতে পারেন, এই ভয়ে গুজরাতের সাবরমতী জেল থেকে উত্তরপ্রদেশে আসতে চাননি আতিক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়েছে সেই আশঙ্কা। গত ১৩ এপ্রিল ঝাঁসিতে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এসটিএফের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন আতিকের ছেলে আসাদ এবং তাঁর সহযোগী গুলাম।

আতিক-আশরাফ

হাতকড়া পরা অবস্থায় পুলিশের সামনে দুই বন্দিকে প্রকাশ্যে খুনের ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের শাসকদল বিজেপির সমালোচনায় ফেটে পড়েছে বিরোধীরা। ঘটনার রাতেই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। গড়া হয়েছে তিন সদস্যের একটি কমিশনও। ২ মাসের মধ্যে কমিশনকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের সব ক’টি অর্থাৎ ৭৫টি জেলাতেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। প্রয়াগরাজে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।আতিক এবং আশরফকে গুলি করে খুনের পর ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান তুলে ‘উল্লাসের’ সময়ে ঘটনাস্থল থেকে তিন জনকে বন্দুক-সহ গ্রেফতার করে পুলিশ।

অখিলেশ যাদব

সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব টুইটারে লেখেন, ‘‘পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যে যদি কেউ খুন হন, তবে আমজনতার নিরাপত্তা কোথায়? কিছু লোক ইচ্ছে করেই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করছে।’’ সমাজবাদী পার্টি সমর্থিত সাংসদ তথা আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে আতিকের পাশাপাশি আইনের শাসনকেও খুন করা হয়েছে।’’ যোগী রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ তুলে আক্রমণ করতে শুরু করেছে তৃণমূলও। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটে লেখেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে নৈরাজ্য এবং আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার ছবি দেখে আমি স্তম্ভিত। এটা চূড়ান্ত লজ্জার যে, অপরাধীরা পুলিশ এবং সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতিতে আইন হাতে তুলে নিচ্ছে। সাংবিধানিক গণতন্ত্রে এই ধরনের বেআইনি কাজের কোনও জায়গা নেই।’’ তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষও টুইটে লেখেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে ৩৫৬ ধারার পরিস্থিতি কি হয়নি? বিজেপি কী বলে?’’

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও মুখ না খুললেও উত্তরপ্রদেশের অর্থমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুরেশ খান্না আতিক-হত্যাকে ‘ঈশ্বরের বিচার’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা ঈশ্বরের বিচার ছাড়া আর কিছু নয়।’’ যোগী সরকারের আর এক মন্ত্রী স্বতন্ত্র দেব সিংহ বলেন, ‘‘পাপ, পুণ্যের হিসাব এই জন্মেই হয়!’’#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৭