ভারতে একদিনে করোনা সংক্রমণ ১ লাখ ছুঁইছুঁই, ১ হাজারেরও বেশি চিকিৎসক সংক্রমিত
ভারতে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে একদিনে প্রায় এক লাখ সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে প্রকাশ, গতকাল (বুধবার) সকাল ৮ টা থেকে আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৮ টা পর্যন্ত ৯০ হাজার ৯২৮ টি নয়া সংক্রমণ রেকর্ড হয়েছে। গতকাল বুধবারের তুলনায় দেশে আজ ৫৬.৫ শতাংশ বেশি সংক্রমণ হয়েছে।
করোনার এই তৃতীয় ঢেউয়ে বিপুল সংখ্যক চিকিৎসকও আক্রান্ত হচ্ছেন। মুম্বাই, দিল্লি, কোলকাতা, পাটনা, চণ্ডীগড়, লক্ষনৌ এবং পাতিয়ালায় বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। দেশে এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
মুম্বইয়ে আক্রান্ত ২৬০ আবাসিক চিকিৎসক
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে মহারাষ্ট্র। মহারাষ্ট্রে, গত ২৪ ঘন্টায় ২৬ হাজার ৫৩৮ টি সংক্রমণ হয়েছে। মুম্বাই মহারাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর। এমন পরিস্থিতিতে মুম্বইয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন বহু সংখ্যক চিকিৎসক। এখানে গত ৩ দিনে বিভিন্ন হাসপাতালে আক্রান্ত হয়েছেন ২৬০ আবাসিক চিকিৎসক। বৃহস্পতিবার জিয়ন হাসপাতালে ৩০ আবাসিক চিকিৎসকের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে।
চণ্ডীগড়ের পিজিআইতে ২ দিনে ১৯৬ জন চিকিৎসক এবং মেডিক্যাল কর্মী সংক্রমিত
চণ্ডীগড়ের পিজিআইতে চিকিত্সকদের সংক্রমণের বিপুল সংখ্যক ঘটনা জানা গেছে। এ পর্যন্ত এখানে ১৪৬ জন চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। অন্যান্য হাসপাতালে আরও ৫০ জন চিকিৎসক সংক্রমিত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে এ পর্যন্ত এখানে ১৯৬ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন।
রাঁচিতে ১৭৯ জন ডাক্তার-চিকিৎসা কর্মী সংক্রমিত
ঝাড়খণ্ডে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনা। বুধবার, রাজ্যের বৃহত্তম সরকারি হাসপাতাল রিমস-এ করোনার রেকর্ডসংখ্যক সংক্রমণ হয়েছে। এখানে চিকিৎসক ও নার্সসহ ১৭৯ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন।
দিল্লির চারটি হাসপাতালে ১২০ জন চিকিৎসক করোনার কবলে
রাজধানী দিল্লিতে অনেক চিকিৎসকের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসছে। দিল্লির ‘এইমস’ হাসপাতালে কমপক্ষে ৫০ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া দিল্লির সফদরজঙ্গে ২৬ জন চিকিৎসক, রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের ৪৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী এবং এরমধ্যে ৩৮ জন চিকিৎসক করোনার কবলে পড়েছেন। একইসঙ্গে দিল্লির হিন্দু রাও হাসপাতালের প্রায় ২০ জন চিকিৎসক করোনার কবলে পড়েছেন। এছাড়া লোকনায়ক হাসপাতালে ৭ চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন।
পাটনায় আক্রান্ত ২০০ চিকিৎসক
বিহারের রাজধানী পাটনায় অবস্থিত এনএমসিএইচতে চিকিৎসকরা ক্রমাগত করোনা পজিটিভ হচ্ছেন। মঙ্গলবার, এখানে ৫৯ জন ডাক্তারকে সংক্রমিত পাওয়া গেছে। এরআগে সোমবার, এখানে ১৩৩ জন চিকিৎসক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীদের নমুনা নেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৭২ জনকে পজিটিভ পাওয়া গেছে। রোববার ৯৬ জন চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীকে সংক্রমিত পাওয়া যায়। এখন পাটনার এনএমসিএইচ-এ ২০০ জনেরও বেশি চিকিৎসক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থী সংক্রমিত হয়েছেন।
কোলকাতায় ৭০ জন চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী আক্রান্ত
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতার এনআরএস হাসপাতালে প্রায় ৭০ জন চিকিৎসক ও নার্সকে করোনা আক্রান্ত পাওয়া গেছে। এনআরএস হাসপাতাল কোলকাতার বৃহত্তম সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। এছাড়াও কোলকাতার চিত্তরঞ্জন শিশু সদন হাসপাতাল এবং আরও অনেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। মেদান্ত লক্ষনৌতে ২৫ জন মেডিকেল কর্মী সংক্রমিত
উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষনৌয়ের মেদান্ত হাসপাতালে পরিচালিত সাম্প্রতিক পরীক্ষায়, ২৫ জন মেডিকেল কর্মীকে সংক্রমিত পাওয়া গেছে। এই ২৫ জনের মধ্যে একজন চিকিৎসক ও প্যারা মেডিকেল স্টাফও রয়েছেন।
পাতিয়ালায় ১০০ মেডিকেল ছাত্র আক্রান্ত
পাতিয়ালা মেডিক্যাল কলেজে ১০০ জন শিক্ষার্থী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এখানে হোস্টেলে থাকা সমস্ত ছাত্রকে দ্রুত হোস্টেল ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে। পাঞ্জাব সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী রাজ কুমার ভের্কা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ২০০০ চিকিৎসকের মৃত্যু
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে চিকিৎসকদের মৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে ‘আইএমএ’। এই হিসাবে, দ্বিতীয় ঢেউয়ে কমপক্ষে ২০০০ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। ‘আইএমএ’বলছে জনসাধারণের মৃত্যুর হারের তুলনায় স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি। ‘আইএমএ’ সূত্রে প্রকাশ, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কমপক্ষে ১ লাখ চিকিৎসক সংক্রমিত হয়েছিলেন।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/ বাবুল আখতার/০৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।