ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৩ ২০:৪১ Asia/Dhaka
  • ভারতের অসমে বাল্যবিবাহের ঘটনায় ধরপাকড় ইস্যু উঠল মুসলিম পার্সোনাল ল'বোর্ডে

ভারতে বিজেপিশাসিত অসমে বাল্যবিবাহের ঘটনায় ধরপাকড় ইস্যু উঠল মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের বৈঠকে। গোটা বিষয়টির উপরে নজর রাখতে বোর্ডের আইনি সেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গতকাল (রোববার) উত্তর প্রদেশের লখনৌতে মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের বৈঠকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বিশিষ্ট আইনজীবী হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, বাল্যবিবাহের ঘটনায় অসমে যেভাবে ধরপাকড় চলছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের বৈঠকে। তিনি বলেন, ‘মুসলিম মেয়েদের বিয়ের বয়সের ক্ষেত্রে শরীয়াহ আইনই প্রযোজ্য হবে বলে রায় দিয়েছিল পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্ট। পরবর্তীতে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়। ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় না দেওয়া পর্যন্ত বাল্যবিবাহের ঘটনায় অসম সরকার যাতে আর কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তা নিয়ে বোর্ডের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে।’   

এ প্রসঙ্গে আজ (সোমবার) অসমের হাইলাকন্দির বিশিষ্ট সমাজকর্মী আব্দুল মান্নান লস্কর রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা সব সময়ে প্রচার মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে থাকতে চান। তার বর্তমান বাল্যবিবাহ নিয়ে যে পদক্ষেপ তা অত্যন্ত অবিবেচক ও অপরিপক্ক একটা পদক্ষেপ। মানুষকে উচিত ছিল সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা।’ 

হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী

অসমের বিশিষ্ট আইনজীবী হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, ‘মুসলিম মেয়েদের বিয়ে, তালাক ইত্যাদিতে ১৯৩৭ সালের শরীয়াহ আইনই প্রযোজ্য হওয়ার কথা উল্লেখ আছে। বিভিন্ন হাইকোর্ট মুসলিম মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রে বয়সের ব্যাপারে শরীয়াহ আইনের পক্ষে রায় দিয়েছে। বাল্যবিবাহের ঘটনায় ‘পকসো’ আইনের একটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট। রাজ্যে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন ২০০৬ সালে কার্যকর হয়েছে। কিন্তু সেই আইনের রুল এখনও তৈরি হয়নি। এমনকি সেই আইনের ১৬ ধারায় বাল্যবিবাহের ঘটনা রোধে কর্মকর্তা নিয়োগের কথা রয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি রাজ্যের প্রত্যেকটি পঞ্চায়েতে একজন করে কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। কিন্তু কোনও কিছু চিন্তা না করে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে যেভাবে চার হাজারের বেশি মামলা দায়ের এবং তারপর ধরপাকড় যেভাবে শুরু হয়েছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। কেননা আইন মেনে মামলা দায়ের করা হয়নি। হাজারে হাজারে স্বামী গ্রেফতার করা হলেও একটিও বিয়ে কিন্তু অবৈধ নয়।’

স্বামীদের ছাড়াতে স্ত্রীদের থানায় ভীড়

বিয়ে ভাঙতে গেলে ২০০৬ সালের আইনের ৩  ধারা অনুযায়ী নাবালিকার পরিবারকেই আবেদন করতে হবে বলেও বিশিষ্ট আইনজীবী হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী মন্তব্য করেন।  এদিকে, অসম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ভূপেন বরা বলেছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শ্রমাকে নিশানা করে বলেছেন, ‘বাল্যবিবাহ নিয়ে যদি এত মায়া কান্না তাহলে, আপনারা পুলিশকে বলুন, বাল্যবিবাহের অপরাধে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতার করুন। তাহলে চিরতরে বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়ে যাবে।’

‘১৯৬৭ সালে বাল্যবিবাহের আইন তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৬৮ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী এক  নাবালিকাকে বিয়ে করেছেন’ বলেও মন্তব্য করেন রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি ভূপেন বরা। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/জিএআর/৬  

ট্যাগ