আগস্ট ৩০, ২০২২ ১৮:৩১ Asia/Dhaka

ইরাকে গতকাল ব্যাপক সহিংস ঘটনা ঘটেছে। প্রভাবশালী সাদর মুভমেন্টের নেতা মুক্তাদা সাদরের কিছু রাজনৈতিক আচরণ ও কর্মকাণ্ডের কারণে নিরাপত্তাহীনতা ও উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে।

এদিকে, ইরাকের আরেক প্রভাবশালী শিয়া নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ কাজেম হোসেইনি হায়েরি এক বিবৃতিতে বলেছেন, শারীরিক দুর্বলতা ও অসুস্থতার কারণে তিনি মারজায়ে তাকলিদ পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। অর্থাৎ তিনি  ধর্মীয় বিধি বিধানের বিষয়ে কর্তৃত্ব বা ফয়সালা দেয়ার অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ালেন। শিয়া বিশ্বে মারজায়ে তাকলিদ হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি ইসলামি আইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন। আয়াতুল্লাহ হায়েরি সাদর আন্দোলনের অনেক ভক্তের অনুকরণের উৎস হিসেবে পরিচিত। তিনি তার বিবৃতিতে ইরাকে বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির জন্য মোক্তাদা সদরের কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেছেন। আয়াতুল্লাহ হায়েরির এ বিবৃতি মুক্তাদা সাদরের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয় এবং মোক্তাদা সাদর রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। যদিও এর আগেও তিনি অনেকবার রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন কিন্তু রাজনীতির মাঠ থেকে তিনি কখনোই দূরে থাকতে পারেননি।

যাইহোক, গতকাল ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সাদরপন্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৩০ জন নিহত এবং প্রায় ৭০০ ব্যক্তি আহত হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা ইরাকে সহিংস ঘটনাকে দুদিক থেকে মূল্যায়ন করছেন। প্রথমত, এটা শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল যে মুক্তাদা সাদর তার কিছু ভুল কর্মকাণ্ডের কারণে ইরাককে নিরাপত্তাহীনতা ও বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যাবেন। গত জুন মাসেও তিনি রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক অচলাবস্থা থেকে ইরাককে বের করে আনার জন্য অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সুযোগ করে দেয়া নয় বরং তার মূল লক্ষ্য ছিল তার বিরোধী পক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং নিজ সমর্থকদের রাস্তায় নামিয়ে বিক্ষোভ করার মাধ্যমে নতুন রাজনৈতিক কাঠামো গঠনে বাধা সৃষ্টি করা। সাদরের সমর্থকরা সম্প্রতি পার্লামেন্ট ও বিচারবিভাগে যে হামলা চালিয়েছিল তার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল গোলযোগ তৈরির মাধ্যমে নিজের লক্ষ্য বা স্বার্থ হাসিল করা। মুক্তাদা সাদর রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ার কথা জানালেও তিনি তার সমর্থকদেরকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কিংবা বিক্ষোভ করা থেকে বিরত থাকার জন্য কোনো আহ্বান জানাননি। এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে তিনি না থাকলেও তার সমর্থকরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবে। 

দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, মুক্তাদা সাদর গত কয়েক সপ্তাহে এমন কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করেছেন যার ফলে তার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্ররাও তার থেকে দূরে সরে গেছে এবং তিনি কার্যত একা হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া, কুর্দি মিত্র ও সুন্নিরাও মোক্তাদা সাদরের কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেছেন। সর্বশেষ আয়াতুল্লাহ হায়েরিও মুক্তাদা সাদরের ওপর প্রচণ্ড সমালোচনা ও চাপ সৃষ্টি করেন। সব মিলিয়ে মোক্তাদা সাদরের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে যা তার কাম্য ছিল না।#

 পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩০ 

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ