আগস্ট ২১, ২০২৩ ১৯:০৯ Asia/Dhaka

আজ একুশ আগস্ট। বিশ্ব মসজিদ দিবস। দিনটিকে মসজিদ দিবস হিসেবে নামকরণ করার কারণ হল মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদে ৫৬ বছর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা।

১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট সকাল ৭টায় ডেনিস মাইকেল উইলিয়াম রোহান নামে এক চরমপন্থী ইহুদিবাদী আল-আকসা মসজিদে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। ইহুদিবাদী  ইসরাইলের তৎকালীন সরকারের মদদে সুপরিকল্পিত পদক্ষেপের ভিত্তিতে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়। ওই ন্যাক্কারজনক অভিযানে মসজিদের ১ হাজার ৫০০ বর্গমিটার পুড়ে যায়।

ওই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ওমর মসজিদ, জাকারিয়া মিহরাব, আরবাইন মাকাম, মসজিদের তিনটি বারান্দাসহ ফাউন্ডেশন এবং খিলান এবং আল-আকসা গম্বুজের খিলান এবং মূল মসজিদের গম্বুজ যে প্রধান পিলারগুলোর ওপর স্থাপিত ছিল সবগুলোতে আগুন ধরে যায়। ওই আগুনে মসজিদের ছাদও ধসে পড়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই মসজিদের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা ধ্বংস ধ্বংস হয়ে যায়। সেইসাথে মসজিদের ভেতরের কাঠের গম্বুজের কিছু অংশ, মিহরাব, কিবলার দেয়াল, মসজিদের ভেতরে ব্যবহৃত মার্বেল পাথর, প্লাস্টার এবং রঙিন কাঁচের তৈরি জানালা, কার্পেট, মিহরাবের উপর টালি ও গিল্ড করা নকশায় সূরা এসরার কারুকাজ ইত্যাদি  সবকিছু নষ্ট হয়ে যায়।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ইহুদিবাদী সরকার আল-আকসা মসজিদে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার জন্য একজন অস্ট্রেলিয়ান পর্যটককে দায়ী করে। ওই পর্যটককে গ্রেপ্তার করে তেল আবিবে একটি সাজানো আদালত বসিয়ে ওই অস্ট্রেলিয়ান ইহুদিবাদীকে মানসিকভাবে অসুস্থ ঘোষণা করে ছেড়ে দেয়া হয়।

১৯৬৭ সালের ৬ দিনের যুদ্ধে ফিলিস্তিন দখল করার সময় বায়তুল মোকাদ্দাসের পূর্ব অংশগুলিও দখল করেছিল। তখন থেকেই ইহুদিবাদীরা আল-আকসা মসজিদ তিলে তিলে ধ্বংস করার চেষ্টা করে এসেছে। আল-আকসা মসজিদ ধ্বংস করার উদ্দেশ্য হলো মসজিদের জায়গায় একটি হায়কাল মন্দির নির্মাণ করা। হায়কাল বলা হয় হযরত সোলায়মান (আ) কর্তৃক নির্মিত মসজিদ। এখনও চরম ইহুদিবাদীরা হায়কাল নির্মাণের লক্ষ্যে তাদের উগ্রপন্থা অনুসরণ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে সম্প্রতি চরমপন্থী নেতানিয়াহু সরকার গঠন করার পর হায়কাল নির্মাণ তাদের অন্যতম টার্গেটে পরিণত হয়েছে। ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। নিরাপত্তা পরিষদ ১৯৬৯ সালে জরুরি বৈঠক ডেকে ২৭১ নম্বর প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং ইসরাইলের তীব্র নিন্দা জানায়।

এই মসজিদ মুসলমানদের প্রথম কিবলা। সূরা এসরায় মসজিদটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। মাসজিদুল হারাম এবং মাসজিদুন্নাবির পরই এই মসজিদের অবস্থান। সুতরাং এই মসজিদের ঐতিহ্য সংরক্ষণে মসজিদ দিবস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ইসরাইলি ধ্বংসযজ্ঞ থেকে মসজিদকে সুরক্ষা দিতে এই দিবস ব্যাপক প্রেরণার উৎস হতে পারে।#

পার্সটুডে/এনএম/২১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ