অক্টোবর ০৭, ২০২৩ ১৮:৩১ Asia/Dhaka

হামাসের 'আল-আকসা তুফান' নামের বিস্ময়কর অভিযানে ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীসহ সীমান্ত এলাকায় বসতি স্থাপনকারীরা এখন চোখে-মুখে দুঃস্বপ্ন দেখছে। হামাস তেল আবিব, আশদোদসহ অধিকৃত অঞ্চলে আজ (শনিবার) সকাল থেকে ৭ হাজারেরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা চালিয়েছ।

ইসরাইল টাইমস সংবাদপত্রের মতে আল-আকসা তুফান অভিযানে শতাধিক ইহুদিবাদী নিহত এবং সহস্রাধিক আহত হয়েছে। ইহুদিবাদী মিডিয়া আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে। স্থল, আকাশ এবং সমুদ্র থেকে একযোগে ওই অভিযান চালানো হয়েছে। ওই অভিযানে ইহুদিবাদী বহু সেনাও গ্রেফতার হয়েছে।

আল-আকসা তুফান অভিযানে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইহুদিবাদী বসতি 'নাহাল ওজ'ও দখল করেছে। তারা অধিকৃত অঞ্চলের দক্ষিণে ইহুদিবাদী সেনাদের একটি বিমান ঘাঁটিতে প্রবেশ করে তাদের বেশ কয়েকটি এফ-১৬ বোমারু বিমান গাজায় স্থানান্তর করেছে। ইহুদিবাদী টিভি চ্যানেল-১৩ জানিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের আজকের অভিযান ছিল ২০০৮ সালের পর থেকে নজিরবিহীন।

এই ভূমি দখলের শুরু থেকে ফিলিস্তিনি প্রতিরক্ষামূলক অভিযানের ইতিহাসে আজকের অভিযানকে একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

আল-আকসা তুফান অভিযানের মাধ্যমে হামাস ১৯৪৮ সালের ইসরাইল নামে পরিচিত অধিকৃত অঞ্চলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হিজবুল্লাহর চেয়ে এগিয়ে ছিল। প্রকৃতপক্ষে হিজবুল্লাহ ইতোপূর্বে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীকে অধিকৃত ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরে অভিযান চালানোর যে হুমকি দিয়েছিল হামাস তা বাস্তবায়ন করেছে। পার্থক্য হলো তারা অধিকৃত ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চলের পরিবর্তে দক্ষিণে তা বাস্তবায়ন করেছে।

তার মানে হলো প্রতিরোধ যোদ্ধারা  একইসঙ্গে অধিকৃত ফিলিস্তিনের উত্তর এবং দক্ষিণ দিক থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ঝটিকা আক্রমণ করতে সক্ষম। হামাসসহ অপরাপর প্রতিরোধ যোদ্ধারাও ইতোপূর্বে বারবার হুমকি দিয়েছিল আল-আকসা মসজিদে ইসরাইলি বাহিনীর ক্রমবর্ধমান আক্রমণের মুখে তারা চুপ থাকবে না। সেই হুমকিও যেন আজ বাস্তবায়ন করা হলো।

এই অভিযানের মাধ্যমে হামাস কেবল আল-আকসা মসজিদে ইহুদিবাদীদের ক্রমবর্ধমান আক্রমণের জবাবই দেয় নি বরং পশ্চিম তীরে ইহুদিবাদীদের দমনমূলক অভিযানেরও প্রতিশোধ নিয়েছে।

আজকের অভিযানে ইহুদিবাদী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ব্যর্থতার ইতিহাসে আরেকটি ঐতিহাসিক ব্যর্থতা যুক্ত হলো। এই ব্যর্থতা নেতানিয়াহুর জোট সরকারের পতন ডেকে আনতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা অধিকৃত ফিলিস্তিনে তাদের পা রাখার পর থেকে এরকম পরাজয় আর অপমানের সম্মুখিন হয় নি কোনোদিন।

নেতানিয়াহুর সামনে এই ক্ষতি পূরণ করার কোন উপায় নেই। বড় আকারের কোনো অভিযান যদি ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে শুরু করে, তাহলে তার পরিণতি যে কীরকম ভয়ংকর হবে তা আজকের আল-আকসা তুফান অভিযান থেকে নিশ্চয়ই অনুমান করা যায়।#

 

পার্সটুডে/এনএম/৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ