জানুয়ারি ৩০, ২০২৪ ১০:১৩ Asia/Dhaka

ইহুদিবাদী বসতি স্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে তাদের অমানবিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তার চালান প্রবেশে বাধা দিয়ে ইসরাইলি সেনাদের অপরাধযজ্ঞের সাথে শরীক হয়েছে।

সোমবার ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীরা টানা চতুর্থ দিনের মতো 'করম আবু সালেম' ক্রসিংয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন কোরে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেয়। গাজা যুদ্ধের ১১৫ দিন পর ইসরাইলি সেনাদের ক্রমাগত বর্বর হামলার কারণে এই ভূখণ্ডের বাসিন্দাদের পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে এবং ক্ষুধা ও সংক্রামক রোগের ঝুঁকি গাজার জনগণকে হুমকির মুখে ফেলেছে। গত ৭ অক্টোবর আল-আকসা তুফান অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে, গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী বসতিগুলোর বাসিন্দারা ইসরাইলি সৈন্যদের সাথে মিলে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ইসরাইল সরকার ও উগ্র ইহুদিবাদীরা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে তাদের অমানবিক পরিকল্পনা ও লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য অবৈধ ইহুদি বসতির বাসিন্দাদের ব্যবহার করছে।

মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়কারী টর ভ্যান্সল্যান্ড ফিলিস্তিনের সম্পত্তি ধ্বংস ও বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ইহুদি বসতিগুলো অবৈধ এবং শান্তির জন্য তারা প্রধান বাধা। তিনি বলেন, জাতিসংঘ এখনও ফিলিস্তিনে ইসরাইলি দখলদারিত্ব অবসানের প্রতি সমর্থন দেয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উদাসীনতা এবং আমেরিকা ও পশ্চিমা সরকারগুলোর নীরবতার সুযোগে ইসরাইল বহু সংখ্যক ইহুদি বসতি স্থাপন করেছে। এই ইহুদি বসতিগুলোর জায়গাজমি ফিলিস্তিনিদের ছিল যারা কিনা ইসরাইলি সেনা এবং উগ্র ইহুদিদের জুলুম নির্যাতনের কারণে নিজেদের বাসস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। ইসরাইল ১৯৬৭ সালে দখলিকৃত এলাকার ব্যাপারে জাতিসংঘের ঘোষিত কোনো প্রস্তাব আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করেনি।  ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে, ইসরাইল পশ্চিম তীর ও গাজা দখল করেছিল। এরপর ২০১৬ সালে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ২৩৩৪ নম্বর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়, যেখানে দখলকৃত অঞ্চলে ইহুদিবসতি স্থাপনের কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু তেলআবিব ওই প্রস্তাব সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছিল। স্বাধীন রাজনৈতিক মহল, ফিলিস্তিনের সমর্থক ও মানবাধিকার সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দাবি সত্ত্বেও, ইসরাইল কোনো অবস্থাতেই জাতিসংঘের ওই প্রস্তাব মেনে চলেনি এবং নির্বিঘ্নে ফিলিস্তিনি ভূমি দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। আমেরিকাসহ পাশ্চাত্যের নীরবতার সুযোগে ইসরাইল হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে তাদের আবাসস্থল থেকে বাস্তুচ্যুত করেছে এবং উগ্র ইহুদিবাদীদেরকে সেখানে বসবাসের জায়গা করে দিয়েছে।

গাজায় প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর অভিযান ইসরাইলের বৈষম্যমূলক ও অমানবিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া, যারা ফিলিস্তিনি ভূমি দখলের জন্য ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যায় লিপ্ত হয়েছে। এখন ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা, ইহুদি বাহিনীর সৈন্যদের সহযোগিতায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বিশেষ করে গাজা উপত্যকায় ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা চালাচ্ছে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ