‘দুই রাষ্ট্র-ভিত্তিক সমাধান মেনে নেয়া হবে না’
ইসরাইলকে ধ্বংস করার প্রত্যয় জানালেন হামাস নেতা খালেদ মিশাল
ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলেছে, তাদের চালানো ৭ অক্টোবরের আল-আকসা তুফান অভিযান প্রমাণ করেছে, ‘নদী থেকে সাগর পর্যন্ত’ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড মুক্ত করা এখন আর কোনো স্বপ্ন নয় বরং বাস্তবসম্মত ধারনা। সংগঠনটি ইহুদিবাদী ইসরাইলকে স্বীকৃতি না দিতে নিজের অনমনীয় অবস্থানও পুনর্ব্যক্ত করেছে।
হামাসের সিনিয়র নেতা খালেদ মিশাল কুয়েতের প্রখ্যাত পডকাস্টার আম্মার তাকিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। দখলদার ইসরাইল যখন গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে এবং তেল আবিব মনে করছে এভাবে বর্বরতা চালিয়ে হামাসকে ধ্বংস করে ফেলা যাবে তখন হামাস নেতা প্রকারান্তরে ইসরাইলকে ধ্বংস করার প্রত্যয় জানালেন।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে এ বিষয়ে প্রায় পুরোপুরি ঐক্যমত্য রয়েছে যে, জর্দান নদীর পশ্চিম তীর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত পুরো ভূমি ফিলিস্তিনের এবং এ ব্যাপারে ছাড় দেয়া যাবে না। মিশাল যে ভূমির কথা বলেছেন তা জর্দান নদীর পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা ও গোটা ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত। হামাস নেতা ইসরাইলের সঙ্গে একটি রাজনৈতিক সমাধান বিশেষ করে দুই রাষ্ট্র-ভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনা সুস্পষ্টভাবে নাকচ করে দেন। মিশাল বলেন, ইসরাইল নামক রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেয়া হামাসের ‘কঠোর রেড লাইন’ এবং তা অতিক্রম করা যাবে না।
সাক্ষাৎকারে খালেদ মিশালকে বলা হয়, ৭ অক্টোবরের আগে গাজাবাসীর জীবন অনেক সুখের ছিল। তারা স্বাভাবিক জীবন কাটাচ্ছিল এবং স্বাধীনভাবে বাজারে, স্কুলে এবং হাসপাতাল যেতে পারত। কিন্তু এখন সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে এবং গাজাবাসী না খেয়ে মারা যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০০৭ সালে গাজার ওপর ইসরাইল ও মিশর অবরোধ আরোপ করার পর থেকে গাজাবাসী ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। দৃশ্যত, গাজার জনগণ গত ১৭ বছর যাবত ভালো ছিলেন কিন্তু আসলে তারা অবরুদ্ধ অবস্থায় কারাগারের মতো জীবন কাটাচ্ছিলেন। তারা দখলদারিত্বের অধীনে থেকে নিজেদের জীবনমানের উন্নতি পছন্দ করেন না।
হামাসের সাবেক শীর্ষ নেতা মিশাল বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য জানমালের ক্ষতি এবং ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের পক্ষে এসব ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবে তারা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে বদ্ধপরিকর যেখানে ফিলিস্তিনি জনগণ সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যত গঠন করতে পারবে।
এর আগে ৭ অক্টোবরের অভিযানের পর এক সাক্ষাৎকারে মিশাল বলেছিলেন, প্রচুর প্রাণ বিসর্জনের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়। তিনি ফরাসি উপনিবেশবাদের হাত থেকে আলজেরিয়ার স্বাধীনতা অর্জনের প্রতি ইঙ্গিত করেছিলেন যেখানকার স্বাধীনতা যুদ্ধে ৬০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। #
পার্সটুডে/এমএমআই/২৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।