সৌদি আগ্রাসনে ইয়েমেনে ভয়াবহ বিপর্যয়: আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি
ইয়েমেনের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে হুদাইদা প্রদেশের একটি জনবহুল বাজারে সৌদি বিমান হামলায় বহু সংখ্যক সাধারণ মানুষের নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। বিবৃতিতে সৌদি এ বর্বরতার বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত শুক্রবার রাতে সৌদি জঙ্গিবিমান হুদাইদা প্রদেশের আল খুনে শহরের একটি জনাকীর্ণ বাজারে ভয়াবহ বিমান হামলা চালায়। এতে ২৬ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত এবং আরো বহু লোক আহত হয়েছে। ইয়েমেনের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রণালয় ওই বিবৃতিতে আরো বলেছে, সৌদি আরবের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ইয়েমেনের বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে যে অপরাধযজ্ঞ চালাচ্ছে ও নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করছে এবং মানুষের ঘরবাড়ি ও সকল স্থাপনা ধ্বংস করে দিচ্ছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং নিন্দনীয়।
এদিকে, মানবিক বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের সচিবও বলেছেন, সৌদি আগ্রাসনের কারণে ইয়েমেনে ভয়াবহ মানবিয় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে এবং সেদেশের দুই তৃতীয়াংশ জনগণের অবিলম্বে সাহায্যের প্রয়োজন। আমেরিকা ও কয়েকটি আরব দেশের সহযোগিতায় সৌদি আরব গত ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ইয়েমেনে আগ্রাসন চালানোর পাশাপাশি সেদেশটিকে আকাশ, সমুদ্র ও স্থল পথে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এভাবে সৌদি সরকার ইয়েমেনের পলাতক প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদিকে ফের সেদেশের ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা করছে।
সৌদি আরব বিমান হামলা চালিয়ে এ পর্যন্ত ইয়েমেনের বহু স্কুল, ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, রাস্তা ও বাজার এলাকা ধ্বংস করে দিয়েছে। এ হামলায় ১১ হাজারের বেশি ইয়েমেনি নিহত হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে। এ ছাড়া ঘরবাড়ি হারা লাখ লাখ মানুষ শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে। অনেকে ধ্বংসস্তূপের নীচে কোনো মতে দিনাতিপাত করছে। জাতিসংঘ বহুবার বলেছে, ইয়েমেনের জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ওপর সৌদি আগ্রাসন আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং কোনোভাবেই তা গ্রহণযোগ্য নয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘ ইয়েমেন সংকটের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় রয়েছে এবং সৌদি আগ্রাসন বন্ধে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। সংস্থাটি কেবল উদ্বেগ প্রকাশ করেই ক্ষান্ত রয়েছে এবং ইয়েমেনে মানবিয় বিপর্যয়ের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে। অথচ জাতিসংঘ বিভিন্ন উপায়ে ইয়েমেনে যুদ্ধ বন্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত।
বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে জাতিসংঘ আজ পর্যন্ত সৌদি আরবের বিরুদ্ধে একটি পদক্ষেপও নেয়নি। এমনকি সাবেক মহাসচিব বান কি মুন ইয়েমেনে শিশু অধিকার লঙ্ঘনে জড়িত সৌদি আরবের নামও অপরাধীর তালিকা থেকে বাদ দিতে বাধ্য হন। #
পার্সটুডে/মোঃ রেজওয়ান হোসেন/১২