যে কারণে আইএস জঙ্গিরা আবারো দলে দলে সিরিয়া থেকে ইরাকে ঢুকছে
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i86380
ইরাকের জনপ্রিয় আধা সামরিক বাহিনী হাশদ আশ শাআবির অন্তত ১১ যোদ্ধা উগ্র তাকফিরি জঙ্গিগোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস সন্ত্রাসীদের হাতে শহীদ হয়েছেন। গত শনিবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় সালাউদ্দিন প্রদেশে অতর্কিত হামলায় এসব যোদ্ধা নিহত হন। আহত হয় আরো আটজন।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
জানুয়ারি ২৫, ২০২১ ১৫:৫০ Asia/Dhaka

ইরাকের জনপ্রিয় আধা সামরিক বাহিনী হাশদ আশ শাআবির অন্তত ১১ যোদ্ধা উগ্র তাকফিরি জঙ্গিগোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস সন্ত্রাসীদের হাতে শহীদ হয়েছেন। গত শনিবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় সালাউদ্দিন প্রদেশে অতর্কিত হামলায় এসব যোদ্ধা নিহত হন। আহত হয় আরো আটজন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩৫ জন নিহত এবং ১১০ জন আহত হয়েছিল। উগ্র তাকফিরি জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস বাগদাদে বোমা হামলার দায় স্বীকার করে। মার্কিন হামলায় ইরাকের ইসলামি প্রতিরোধ সংগঠন হাশদ আশ শাআবির উপপ্রধান আবু মাহদি আল মোহান্দেস এবং ইরানের আইআরজিসির কুদস ব্রিগেডের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি শহীদ হওয়ার পর ইরাক থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের বিষয়ে দেশটির পার্লামেন্ট গত বছরের ৫ জানুয়ারি একটি প্রস্তাব পাস করেছিল। প্রস্তাব পাসের পর এক বছর পেরিয়ে গেলেও মার্কিন সেনারা সেখান থেকে বহিষ্কার তো হয়নি এমনকি ইরাকের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

ইরাকের প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলো এবং বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল সে দেশ থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু দেশটির কোন কোন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিত্ব যাদের অনেকে সরকারের সঙ্গে রয়েছে তারা চায় সে দেশে মার্কিন সেনা উপস্থিতি বজায় থাকুক। ধারণা করা হচ্ছে ইরাকে সম্প্রতি যে আইএস সন্ত্রাসীদের বোমা হামলা ও আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে তার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে সে দেশে মার্কিন সেনা উপস্থিতি বজায় রাখার ক্ষেত্র সৃষ্টি করা এবং সে দেশ থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের বিষয়ে পার্লামেন্টে গৃহীত প্রস্তাবকে অকার্যকর করা। ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হোসেন বলেছেন আমরা চাই মার্কিন নতুন সরকার কৌশলগত আলোচনা প্রক্রিয়া যেন অব্যাহত রাখে এবং ইরাকে মার্কিন সেনা উপস্থিতির ব্যাপারে আলোচনার জন্য নতুন টিম তৈরি করে।

বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণের দেখা গেছে ইরাকে মোতায়েন মার্কিন সেনারা সিরিয়া থেকে হাজার হাজার আইএস সন্ত্রাসীদেরকে ইরাকে এনে জড়ো করেছে এবং তারা সন্ত্রাসীদেরকে দিয়ে হামলা ও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ইরাকে মার্কিন সেনা উপস্থিতির প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। ইরাকের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সাবা আল আকিলি এ ব্যাপারে বলেছেন আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে ইরাকে মোতায়েন মার্কিন সেনারা সিরিয়া থেকে ৪০০০ আইএস জঙ্গিকে ইরাকে এনে জড়ো করেছে। এমনকি সন্ত্রাসীদের বহনের জন্য মার্কিন এসব কনভয়কে তদন্ত করার অনুমতিও ইরাকি নিরাপত্তাবাহিনীকে দেয়া হচ্ছে না। ইরাকের নতুন করে আত্মঘাতী বোমা হামলা এবং হাশদ আশ শাআবির সঙ্গে সংঘর্ষের যে ঘটনা ঘটেছে তার পেছনে এইসব সন্ত্রাসীদের ভূমিকা রয়েছে।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, গত বৃহস্পতিবার বাগদাদে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ইরাকের সেনাবাহিনী ও হাশদ আশ শাআবির যোদ্ধারা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নেয়। আর এ সুযোগে টহলরত হাশদ আশ শাআবির যোদ্ধাদের উপর আইএস সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে ইরাক থেকে আইএস জঙ্গিরা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিন্তু তারপরও সাম্প্রতিক এসব হামলার ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় তারা এখনো ইরাকে তৎপর। হাশদ আশ শাআবির যোদ্ধাদের ওপর হামলার ঘটনা থেকে বোঝা যায় জনগণের নিরাপত্তা ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের ভূমিকার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো খুবই অসন্তুষ্ট।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৫