আমেরিকার আতঙ্ক হাশদ আশ শাবির সঙ্গে ‌ইরাক সরকারের বিরোধের কারণ
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i92336-আমেরিকার_আতঙ্ক_হাশদ_আশ_শাবির_সঙ্গে_ইরাক_সরকারের_বিরোধের_কারণ
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইরাকের মোস্তফা আল কাজেমি সরকারের সঙ্গে জনপ্রিয় হাশদ আশ শাবি জোটের মধ্যে ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তত্বাবধানে থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল এই জোটের কমান্ডার কাসেম মোসলেহকে গ্রেফতার করার পর নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
মে ২৯, ২০২১ ১৮:০২ Asia/Dhaka

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইরাকের মোস্তফা আল কাজেমি সরকারের সঙ্গে জনপ্রিয় হাশদ আশ শাবি জোটের মধ্যে ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তত্বাবধানে থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল এই জোটের কমান্ডার কাসেম মোসলেহকে গ্রেফতার করার পর নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

অবশ্য মোস্তফা আল কাজেমি সরকারের সঙ্গে হাশদ আশ শাবির মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির ঘটনা এবারই প্রথম নয়। যদিও মোস্তফা আল কাজেমি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভের পর এই জোটের প্রধান ফলেহ আল ফাইয়াজের সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন এবং তাদের বিশেষ সামরিক পোশাক পরে এই জোটকে ইরাকের জনগণ ও দেশের জন্য গৌরবের বিষয় বলে এর ব্যাপক প্রশংসা করেছিলেন কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই নানান কারণে কয়েক দফা তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। যদিও ইরাকে উগ্র আইএস জঙ্গিগোষ্ঠির বিরুদ্ধে যুদ্ধে এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে হাশদ আশ শাবির যোদ্ধারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে কিন্তু তারপরও সরকারের সঙ্গে জনপ্রিয় এ জোটের বিরোধের কারণ কি সেটাই এখন সবার প্রশ্ন।

প্রথমত এ উত্তেজনার কারণ খুঁজতে গেলে বলা যায় প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল কাজেমির সঙ্গে হাশদ আশ শাবি সংগঠনের নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গিগত বেশ পার্থক্য রয়েছে। কেননা প্রধানমন্ত্রী কিছুটা পাশ্চাত্যের চিন্তাচেতনা দ্বারা প্রভাবিত। অন্যদিকে হাশদ আশ শাবি হচ্ছে বিভিন্ন ধর্মীয় জোট ও ইসলামি মিলিশিয়া বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি জোট। এ ছাড়া, মোস্তফা আল কাজেমির নিয়ন্ত্রণাধীন বাহিনী সরাসরি তার নির্দেশেই পরিচালিত হয়। মোস্তফা আল কাজেমির সাম্প্রতিক কথাবার্তা ও কর্মকাণ্ডে প্রমাণিত হয়েছে হাশদ আশ শাবির সশস্ত্র মিলিশিয়া বাহিনী ইরাক সরকারের নিরাপত্তা কাঠামোর মধ্যে থেকে পরিচালিত হলেও প্রধানমন্ত্রী নানা অজুহাতে এ জোটের সামরিক শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন। ধারনা করা হচ্ছে তিনি বর্তমানে তুরস্কের আদলে 'ইরাকের এরদোগান' হওয়ার চেষ্টা করছেন।

হাশদ আশ শাবি ইরাকে বিদেশী সেনা উপস্থিতি ও তাদের হস্তক্ষেপমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র বিরোধী। এ জোট ইরাক থেকে মার্কিন সেনাদের বহিষ্কারের জোর দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল কাজেমি ও তার সরকার সেদেশ থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের দাবিকে সমর্থন করছে না। এ কারণেই এক বছর আগে ইরাকের সংসদ মার্কিন সেনাদের  বহিষ্কারের বিষয়ে প্রস্তাব পাশ করলেও প্রধানমন্ত্রী ওই প্রস্তাব বাস্তবায়ন থেকে বিরত রয়েছেন। জানা গেছে আইন আল আসাদ সামরিক ঘাটিকে আরো শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে মার্কিন সেনারা।

আগামী ১০ অক্টোবর ইরাকে পার্লামেন্ট অধিবেশন বসবে। প্রধানমন্ত্রী ভালো করেই জানেন ইরাকের প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলো তাকে সমর্থন দেবে না। এ কারণে তিনি ও তার সমর্থকরা সম্প্রতি একজন মানবাধিকার কর্মীকে হত্যার জন্য হাশদ আশ শাবির পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে জনগণের কাছে এই সংগঠনের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করেছেন যাতে ক্ষমতার মসনদে নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করা যায়।

হাশদ আশ শাবি ও ইরাক সরকারের মধ্যে বিরোধের আরেকটি কারণ হচ্ছে মার্কিন নীতি নিয়ে বিতর্ক। নিঃসন্দেহে হাশদ আশ শাবির বিরুদ্ধে যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণে সবচেয়ে লাভবান হবে যুক্তরাষ্ট্র। কেননা যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরাকে তাদের সেনা মোতায়েন রাখতে কিন্তু এ ক্ষত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে হাশদ আশ শাবি সংগঠনের সশস্ত্র যোদ্ধারা। সে কারণে সরকারের সঙ্গে এই জোটের যেকোনো বিরোধে খুব খুশী যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এমন কি হাশদ আশ শাবির বিরুদ্ধে সহিংস পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীকে উস্কানি দিচ্ছে ওয়াশিংটন। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৯