ডলারের ভবিষ্যৎ কী?
-
ডলারের ভবিষ্যৎ কী?
পার্সটুডে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বছরের পর বছর ধরে ডলারকে আর্থিক ও বাণিজ্য অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। সোমবার হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের দৃষ্টিতে ব্রিকস জোটের পদক্ষেপ তার দেশের স্বার্থের পরিপন্থী এবং অগ্রহণযোগ্য। ট্রাম্প বলেছেন, যে দেশই ব্রিকসের আমেরিকা-বিরোধী নীতির সাথে নিজেকে যুক্ত করবে তাদের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে এবং এই নীতির কোনও ব্যতিক্রম হবে না।
পার্সটুডে জানিয়েছে, ট্রাম্পের বক্তব্যের বিষয়ে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টসহ ব্রিকস সদস্য দেশগুলোর কিছু কর্মকর্তা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
ব্রিকস সদস্যদের ওপর আরও শুল্ক আরোপের ট্রাম্পের হুমকি সম্পর্কে লুলা দ্যা সিলভা বলেছেন, "আমার মতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বৃহৎ দেশের প্রেসিডেন্টের পক্ষে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বকে হুমকি দেওয়াটা সমীচীন নয় এবং এটা দায়িত্বশীলতার পরিচায়কও নয়।"
ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, শুল্ক ও বাণিজ্য যুদ্ধে কোনও পক্ষই বিজয়ী হতে পারে না এবং এই ধরনের প্রস্তাবে কিছুই অর্জিত হবে না।
ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর বিরুদ্ধে ট্রাম্পের হুমকি এমন এক সময়ে এসেছে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বছরের পর বছর ধরে ডলারকে আর্থিক ও বাণিজ্যিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।
ডলারের এই আধিপত্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বে তার ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে এসেছে। আমেরিকা এই অবস্থানকে অপব্যবহার করে অন্য দেশকে সুইফট ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়া এবং অন্যের সম্পদ কুক্ষিগত করার মতো অন্যায় পদক্ষেপ নিতে পেরেছে।
এই কারণে বিভিন্ন দেশ এর বিকল্প সম্পর্কে চিন্তাভাবনা এবং স্থানীয় মুদ্রা ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এছাড়াও, আমেরিকার বিশাল ঋণের বোঝার কারণে বিভিন্ন দেশ ডলারের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।
এই বিষয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, মার্কিন মুদ্রার ওপর আস্থা কমে গেছে। মার্কিন ঋণ দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে এবং এর পরিমাণ বেড়ে ৩৭ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
এদিকে, বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের আকস্মিক ও ব্যাপক মাত্রার শুল্ক ঘোষণা এবং তার বাণিজ্য নীতির অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা আমেরিকা থেকে তাদের তহবিল প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে, এর ফলেও ডলার দুর্বল হয়ে পড়েছে।
সব দিক বিবেচনা করে এটা বলা যায়, আমেরিকার স্বার্থ অন্য দেশের মাধ্যমে নয় বরং মার্কিন কর্মকর্তাদের বাস্তবায়িত নীতির কারণে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। কিন্তু এরপরও ট্রাম্প একতরফাভাবে মার্কিন স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখতে অন্যান্য দেশের ওপর চাপ দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।#
পার্সটুডে/এসএ/৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।