অক্টোবর ২৫, ২০১৯ ১৬:২৩ Asia/Dhaka
  • সন্ত্রাস দমন করুক পাকিস্তান, কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতায় তৈরি ট্রাম্প, বলছে ওয়াশিংটন-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
    সন্ত্রাস দমন করুক পাকিস্তান, কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতায় তৈরি ট্রাম্প, বলছে ওয়াশিংটন-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ২৫ অক্টোবর শুক্রবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি বাবুল আখতার। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

প্রথমে বাংলাদেশে:

  • নেত্রী কী কঠোর, শুদ্ধি অভিযান এর প্রমাণ: কাদের-দৈনিক প্রথম আলো
  • 'যত বড় ক্ষমতাধর হোক, হাসিনা সরকার তার বিচার করবেই': দৈনিক কালেরকণ্ঠ
  • জুয়ার ৫০০ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলেছেন সম্রাট-দৈনিক যুগান্তর

  • প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় ভোলায় মুসলিম ঐক্য পরিষদের দোয়া মাহফিল স্থগিত: দৈনিক ইত্তেফা

  • হঠাৎ উত্তপ্ত এফডিসি, বিক্ষোভ পরিচালক সমিতির-দৈনিক মানবজমিন
  • সিভিলিয়ান ক্যু’র মাধ্যমে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে : মওদুদ–দৈনিক  নয়া দিগন্ত

ভারতের খবর:

  • সন্ত্রাস দমন করুক পাকিস্তান, কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতায় তৈরি ট্রাম্প, বলছে ওয়াশিংটন-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
  • ব্যবস্থা পাকা, ‌কালই হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন খট্টর-দৈনিক আজকাল 
  • সবসময় মোদির জনপ্রিয়তা জেতাতে পারবে না’, বিজেপিকে কটাক্ষ আসাদউদ্দিন ওয়েইসির-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

নেত্রী কী কঠোর, শুদ্ধি অভিযান এর প্রমাণ: কাদের-দৈনিক প্রথম আলো

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমাদের নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) কী কঠোর, শুদ্ধি অভিযানে তা তিনি প্রমাণ করেছেন।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভার পর সাংবাদিকদের সামনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা হয়।

কাদের বলেন, দীর্ঘদিন পর একটি শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে। কারও স্বার্থে আঘাত লাগতে পারে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চলা শুদ্ধি অভিযান সারা দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হচ্ছে। শেখ হাসিনার সৎসাহস আছে। দলের কেউ অপকর্ম করলে তাঁকে শাস্তি পেতে হবে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মাধ্যমে শাসক দল আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়। ইতিমধ্যে সহযোগী সংগঠনগুলোর একাধিক নেতাকে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নানা বিতর্কে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ নাথকে সম্মেলন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশ দিয়েছেন।

আজ পংকজ নাথের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে কোনো অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। তবে তাঁকে কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটা নেত্রীর নির্দেশ। সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি সম্মেলনের কাজ করবে।’

দলীয় এই শুদ্ধি অভিযানের মধ্যেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হয়েছে। আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে এসব সম্মেলন হবে।

আজ দলীয় সম্মেলন নিয়ে কাদের বলেন, ‘জাতীয় কাউন্সিল আসছে। সম্মেলন মানেই কিছু নতুন মুখ আসবে। কাউকে আমরা রিটায়ারমেন্ট দিই না, দায়িত্বে পরিবর্তন হয়। শক্তিশালী দল ছাড়া শক্তিশালী সরকার হয় না। দলকে শক্তিশালী করতে নিয়মিত সম্মেলন দরকার।’

দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, আপনারা সম্মেলনের প্রস্তুতি নিন। আমরা তারিখ পরে জানাব। সিটি করপোরেশন নির্বাচন এগিয়ে আসছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে, সম্ভাব্য তারিখ জেনে আমরা সম্মেলনের তারিখ জানব। প্রার্থী বিষয়ে নেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।’

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মনোনয়ন বোর্ড বসবে। নেত্রী সিদ্ধান্ত দেবেন কারা মেয়র প্রার্থী হবেন। তবে একক কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে আপনারা আলাপ–আলোচনা করুন, সিদ্ধান্ত নিন। পানি ছাড়া যেমন মাছ বাঁচতে পারে না, তেমনি জনগণ ছাড়াও আওয়ামী লীগ বাঁচতে পারবে না। জনগণকে আমাদের সঙ্গে রাখতে হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশে সীমাহীন উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু দলীয় পরিচয়ে দু-একজন মাস্তানের জন্য আমাদের কাজ যেন ম্লান হয়ে না যায়। বসন্তের কোকিলদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতা রাখার পার্টি নয়। জনগণের ইচ্ছার বাইরে ক্ষমতায় থাকার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪–দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের বক্তব্য নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। গত শনিবার বরিশাল নগরের অশ্বিনীকুমার টাউন হলে ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল জেলা শাখার সম্মেলনে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। এর বড় সাক্ষী আমি নিজেই। 

আজ মেননের নাম না নিয়ে কাদের বলেন, ‘মাঝে মাঝে নিজেদের অ্যালায়েন্সের কেউ কেউ উল্টাপাল্টা কথা বলেন। সরকারকে দুর্বল ভাববেন না। সততার ভিত্তির ওপর, জনগণের ইচ্ছার ওপর নেত্রী দাঁড়িয়ে আছেন।’

'যত বড় ক্ষমতাধর হোক, হাসিনা সরকার তার বিচার করবেই': দৈনিক কালেরকণ্ঠ

শেখ হাসিনার সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধ পরিকর। এই  সরকার বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বিচার পাওয়ার সংস্কৃতিতে  জাতিকে ফিরিয়ে এনেছে। জনগণকে এই বার্তা দিতে চাই, যত ক্ষমতাধর হোক না কেন, শেখ হাসিনার সরকার বিচার করবেই।'

আজ শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, 'বহুল প্রতীক্ষিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের রায় নিম্ন আদালত ঘোষণা করেছেন। যারা বর্বর এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত, রায়ে তাদের সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি হয়েছে। এই রায়ে প্রমাণিত হলো, অপরাধী যে-ই হোক না কেন, সাজা পেতেই হবে। এ রায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক।'

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

আনিসুল হক বলেন, 'আমরা আশা করবো, নিম্ন আদালতের রায় উচ্চ আদালতেও তড়িৎগতিতে সম্পন্ন হবে। জনগণকে আমরা এ বার্তা দিতে চাই, যে যত ক্ষমতাধর হোক না কেন, শেখ হাসিনার সরকার বিচার করবেই।' তিনি বলেন, 'সব আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অতি দ্রুততম সময়ের মাধ্যমে নুসরাত হত্যার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধ পরিকর। শেখ হাসিনার সরকার বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বিচার পাওয়ার সংস্কৃতিতে এ জাতিকে ফিরিয়ে এনেছে।' 

সংবিধানের আলোকে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শেখ হাসিনার উন্নয়ন টেকসই হবে। তিনি বলেন, নুসরাত হত্যা মামলায় ১৬ জনের মধ্যে ১২ জন স্বীকারোক্তি দিয়েছে। বিচারক মনে করেছেন, সবাই সমান অপরাধী, তাই ফাঁসির রায় দিয়েছেন।' তিনি বলেন, রায়ের সাত দিনের মধ্যে হাইকোর্টে কাগজপত্র আসবে। কাগজপত্র এলে সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত নিষ্পত্তি করবেন বলে আশা রাখি। এছাড়াও নুসরাতের পরিবারকে যতদিন প্রয়োজন, ততদিন নিরাপত্তা দেওয়া হবে। কোনো কুচক্রী মহল হুমকি দিলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

জুয়ার ৫০০ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলেছেন সম্রাট-দৈনিক যুগান্তর 

র‌্যাব হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ওরফে ক্যাসিনো সম্রাট। র‌্যাব জানতে পেরেছে, ঢাকার অন্তত ১০টি ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রণ করতেন সম্রাট। এসব জুয়ার আখড়া থেকে দৈনিক লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন তিনি। তার কাছে অন্তত ৪০০-৫০০ কোটি টাকা রয়েছে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর এসব টাকা সরিয়ে ফেলেছেন সম্রাট।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাট জানিয়েছেন- ক্যাসিনো, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি থেকে তিনি কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা বগলদাবা করেছেন। ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর তিনি কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে নগদ টাকা অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু কোথায়, কার কাছে রেখেছেন সে বিষয়ে কিছুতেই মুখ খুলছেন না সম্রাট।

আরমান-সম্রাট

তদন্তসংশ্লিষ্ট র‌্যাবের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সম্রাটের ক্যাশিয়ার হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি এনামুল হক আরমান। ক্যাসিনো, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির টাকার বড় একটি অংশ আরমানের কাছে রাখতেন সম্রাট। সম্রাটের টাকা সম্পর্কে ও আরমানের কর্মকাণ্ড জানতে গত সোমবার আরমানকে দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তার কাছ থেকে সম্রাটের ওই টাকার বিষয়ে জানার চেষ্টা চলছে।

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা র‌্যাব ১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম গণমাধ্যমকে বলেন, সম্রাট কোথায় ও কার কাছে টাকা রেখেছেন, সে বিষয়ে আরমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন—দুদক এখন পর্যন্ত সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেনি। দুদক সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সম্রাটের এক কোটি ৮৩ লাখ টাকার নথিপত্র পাওয়া গেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে মামলা করলে কমিশন প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। কারণ যে বিপুল অর্থসম্পদ তার রয়েছে, সেই তুলনায় দুদকের পাওয়া এই তথ্য খুবই কম। তাই সম্রাটের আরও সম্পদের তথ্য বের করতে দুদক ২৪টি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে চিঠি দেবে।

সম্রাট ঢাকার অন্তত ১০ ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রণ করতেন। তার হয়ে এগুলো দেখাশোনা করতেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ থেকে বহিষ্কৃত সভাপতি মোল্লা কাওছার, যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ, এনামুল হক আরমান ও কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ।

এদিকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন সম্রাট। তার অবৈধ আয়ের সুবিধাভোগী হিসেবে অন্তত ২৫ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম বলেছেন এই ক্যাসিনো সম্রাট। এদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রভাবশালী নেতা এবং প্রশাসনের কয়েক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

রাজনৈতিক নেতা নামধারী অনেকেই সম্রাটের দফতরে হাজির হতেন জুয়ার টাকার ভাগ নিতে। প্রতি মাসে ব্যাগভর্তি করে জুয়ার টাকা নিয়ে তারা বেরিয়ে যেতেন। সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজেও এর প্রমাণ রয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের বিভিন্ন নেতা ছাড়াও টাকার ভাগ পেতেন পল্টন, মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকার প্রভাবশালীরা।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাট তার চাঁদাবাজির টাকার ভাগ নেয়া প্রভাবশালী যাদের নাম বলেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওছার এবং যুবলীগের একজন শীর্ষ নেতা।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের জুয়ার নেশা থেকে শুরু করে ঢাকার ক্যাসিনো সাম্রাজ্যের আদ্যোপান্ত সবিস্তারে খুলে বলছেন সম্রাট। তার গডফাদার কে, কীভাবে তিনি ক্যাসিনো জগতে এলেন এবং জুয়ার টাকা কার কার পকেটে গেছে সবার নামই তিনি বলছেন। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া নামগুলোর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই শেষে নামের তালিকা পাঠানো হচ্ছে সরকারের উচ্চপর্যায়ে।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাট জানিয়েছেন মতিঝিলের ছয়টি ক্লাবের ক্যাসিনো থেকে তিনি প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৫০ লাখ টাকা চাঁদা পেতেন। ক্যাসিনোর পাশাপাশি গুলিস্তানের ছয়টি মার্কেট থেকে তোলা চাঁদার টাকাও তার কাছে আসত। মতিঝিল ও গুলিস্তানের ফুটপাত থেকে প্রতি সপ্তাহে পাঁচ–ছয় লাখ টাকা করে পেতেন তিনি।

সূত্রটি জানায়, এসব চাঁদা নিয়মিত তুলতেন সম্রাটের লোকজন। তাদের কাছ থেকে এসব চাঁদার টাকার হিসাব নিতেন সম্রাটের সহযোগী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি এনামুল হক আরমান। আরমান সেই টাকার ভাগ বিভিন্ন ব্যক্তির হাতে পৌঁছে দিতেন। যাদের টাকা দিয়েছেন, তাদের সবার নাম র‌্যাবকে বলেছেন সম্রাট। আবার এসব চাঁদার টাকার ভাগ যে ২৫ জনকে দিতেন সেগুলোও হিসাব করে দিতেন আরমান। সব শেষে আরমান সম্রাটকে হিসাব বুঝিয়ে দিতেন।

সূত্রটি জানায়, সম্রাট জিজ্ঞাসাবাদে যে ২৫ জনের নাম বলেছেন তাদের বিরুদ্ধে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তদন্তের জন্য। এখন থেকেই তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাট আরও জানান, তিনি জুয়া খেলতে যেতেন সিঙ্গাপুরের মেরিনা বে ক্যাসিনোতে। সঙ্গে নিতেন লাগেজভর্তি ডলার। ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে বিমানে উঠতেন সম্রাট। তার লাগেজ চেক করা দূরের কথা কখনই তাকে দেহতল্লাশির মুখোমুখিও হতে হয়নি। ক্যাসিনোতে তিনি দু’হাতে টাকা উড়ান। কখনও হারেন, কখনও জেতেন। সম্রাট জুয়ার বোর্ডে একদিনে ৪৫ কোটি টাকা পর্যন্ত খুইয়েছেন।

সূত্র বলছে, ক্যাসিনো কিং সম্রাটের অর্থ-সম্পদের একটি লম্বা ফিরিস্তি পাওয়া গেছে। দুবাই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে টাকা জমা রেখেছেন সম্রাট। তার ভাই বাদলের নামে রাজধানীর আশপাশে কয়েকটি প্লট ও ফ্ল্যাট কিনে রেখেছেন তিনি। এ ছাড়া ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের জনৈক নেত্রী মৌসুমীর সঙ্গে সম্রাটের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মৌসুমীর নামে পুলিশ প্লাজায় একাধিক দোকান কিনেছেন।

প্রসঙ্গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় চাঁদা দাবির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে অপসারণের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি যুবলীগ নেতাদের বিষয়েও চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, যুবলীগের এক নেতা অস্ত্র উঁচিয়ে চলে। আরেকজন প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করে বেড়ায়।

এর পর গণমাধ্যমে যুবলীগ নেতাদের সংশ্লিষ্টতায় ঢাকার ৬০টি জায়গায় ক্যাসিনো পরিচালনার খবর প্রকাশ হয়। ১৮ নভেম্বর ফকিরাপুলের ইয়াংমেনস, ওয়ান্ডারার্স এবং গুলিস্তানে মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম, বিপুল পরিমাণ মদ ও ৪০ লাখের বেশি টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব। ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে ওই দিনই যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়, যিনি ইয়াংমেনস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।

পাশের ওয়ান্ডারার্স ক্লাব থেকেও জুয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ক্লাব পরিচালনার নেতৃত্বে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওছার। এর পর ধানমণ্ডির কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে অভিযান চালিয়েও ক্যাসিনো চালানোর প্রমাণ পায় র‌্যাব। অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয় ক্লাবের সভাপতি কৃষক লীগের সহসভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজকে।

এর মধ্যে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি করা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ ও বিসিবির পরিচালক লোকমান ভূঁইয়াকে।

দুবাই থেকে গ্রেফতার করা হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে। পরে গ্রেফতার করা হয়েছে ক্যাসিনো সম্রাট যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর শুরুতে লোকজন নিয়ে কাকরাইলের কার্যালয়ে শো-ডাউন দিলেও পরে আড়ালে চলে যান সম্রাট। দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টায় ছিলেন। ৬ অক্টোবর ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামে স্টার লাইন পরিবহনের মুনীর হোসেন চৌধুরীর বাসা থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে আটক করে র‌্যাব।                    

প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় ভোলায় মুসলিম ঐক্য পরিষদের দোয়া মাহফিল স্থগিত: দৈনিক ইত্তেফাক

ভোলার বোরহানউদ্দিনে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে নিহতদের স্মরণে শুক্রবারের সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের পূর্ব ঘোষিত দোয়া মাহফিল প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় স্থগিত করেছে সংগঠনটি। বৃহষ্পতিবার রাতে সংগঠনটির যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, প্রশাসনের সাথে গত কয়েক দিনের আলোচনায় তারা আমাদেরকে শুক্রবারের দোয়া মাহফিলের মৌখিক অনুমতি দিয়েছে। আমরা সে অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানটি করার প্রস্তুতিও নিয়েছি। কিন্তু বৃহষ্পতিবার বিকেলে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অনুমতি চাইলে তিনি আমাদেরকে অনুমতি দেননি। বরং উল্টো শুক্রবার ভোলায় সকল ধরনের সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাতে আমাদের কাছে একটি চিঠি পাঠায়। এমতাবস্থায় আমরা আমাদের দোয়া মাহফিল স্থগিত করেছি। পরবর্তীতে আমারা আলোচনা করে আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করবো।

লিখিত নিধোজ্ঞায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক উল্লেখ করেন, ভোলার বোরাহনউদ্দিনের উদ্ভুত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভোলা জেলার আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে আপতত সভা সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। এ কারণে আগামীকাল (২৫/১০/২০১৯ খ্রি.) ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আপনাদের (সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের) আয়োজনের অনুমতির বিষয়টি না মঞ্জুর করা হল।

হঠাৎ উত্তপ্ত এফডিসি, বিক্ষোভ পরিচালক সমিতির-দৈনিক মানবজমিন

আজ সকাল নয়টা থেকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিল্পীরা এফডিসিতে ভিড় করছেন। সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ চলছিলো। কিন্তু বেলা সাড়ে এগারটার পরে হঠাৎই পরিচালক সমিতির সামনে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিচালক সমিতির অভিযোগ, তাদের এফডিসিতে ঢুকতে দিতে হবে। পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম  খোকন অভিযোগ করেন, এফডিসিতে শিল্পী সমিতির  ভোটার বাদে, অন্য কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের দাবি পরিচালক সমিতির সদস্যসহ সব সমিতির কলাকুশলীদের এফডিসিকে প্রবেশ করতে দিতে হবে।

এক পর্যায়ে পরিচালক সমিতির উত্তপ্ত পরিবেশ শান্ত করতে সেখানে হাজির হন এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম এবং শিল্পী সমিতির বর্তমান সভাপতি ও এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী মিশা সওদাগর।বদিউল আলম  খোকন তাদের কাছে জানতে চান, আজ এফডিসি কার নিয়ন্ত্রণে। জবাবে আবদুল করিম বলেন, আজ যেহেতু  চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। তাই শিল্পী সমিতির নির্বাচন কমিশন এফডিসি নিয়ন্ত্রণ করছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চনের নির্দেশে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাল্টা বদিউল আলম খোকন জানান, পরিচালক সমিতি এ সিদ্ধান্ত মানে না। এ সময় মিশা সওদাগর তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলে তারা বাক-বিত-ায় জড়িয়ে পড়েন। এর এক পর্যায়ে মিশা সওদাগর ও এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিচালক সমিতি ত্যাগ করলে সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন লোকজন নিয়ে এর প্রতিবাদ জানান। তার নেতৃত্বে এফডিসিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে পরিচালক সমিতি। উল্লেখ্য, নিমন্ত্রিত মিডিয়াকর্মী ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্য বাদে আজ অন্য কোনো সমিতির সদস্যদের এফডিসিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

সিভিলিয়ান ক্যু’র মাধ্যমে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে : মওদুদ–দৈনিক  নয়া দিগন্ত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ২০১৯ সাল এই সরকারের জন্য একটা ব্যাড লাক। কারণ হলো, এই সরকার সত্যিকার অর্থে সংবিধানসম্মত নির্বাচিত সরকার নয়। আর গত ২৯ ডিসেম্বর একটা সিভিলিয়ান ক্যু’র মাধ্যমে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে। তাই একটি ভোটবিহীন সরকার দেশ পরিচালনা করতে শুরু করেছে। সেজন্য ব্যাড লাক তো আসতে বাধ্য।

তিনি বলেন, গত ১০ বছরে যে নির্যাতন, নিপীড়ন, অত্যাচার, দুর্নীতি, দুঃশাসন ও কুশাসন চলেছে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ২০১৯ সালে। প্রথমে তারা (সরকার) মাদক ও ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করতে অভিযান শুরু করলেন, অনেক অভিযান করেছেন। অনেক মানুষকে ক্রসফায়ারে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করেছেন। কিন্তু একজন গডফাদারকেও তারা ধরতে পারে নাই! কারণ এরা সবাই আওয়ামী লীগের লোক। আর এটা এখনো চলছে। তারা কিছুই করতে পারে নাই। সুতরাং এগুলো হচ্ছে আইওয়াশ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রধান স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত এক স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘অধ্যাপিকা রেহানা প্রধানের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে’ এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু মোজাফফর মো: আনাছের সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জাগপার সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সভায় মওদুদ বলেন, মাদক ও ইয়াবার পর ছাত্রলীগের শোভন ও রাব্বানীর কাণ্ড কাহিনী শুরু হলো। গত ১০ বছর যুবলীগ ও ছাত্রলীগ দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজী করেছে। কিন্তু সেই সময় সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তারপরে আসলো যুবলীগের খালেদ, শামীম ও সম্রাটের কাহিনী। এটা তো কিছুই না। ধরা পড়েছে বলে আজকে তাদেরকে নিয়ে আলোচনা। কিন্তু ক্যাসিনো থেকে সরকারের মন্ত্রীরা এবং প্রশাসনের যারা শেয়ার পেতেন, তাদের এমন একটা ভাব যে, তারা কিছুই জানেন না।

দুর্নীতি দমন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সরকার তো করবে না, আপনাদের একটু যদি সাহস থাকে তাহলে আপনারা সকল এমপি ও মন্ত্রীর সম্পদের হিসাব চান। আসল জিনিস তখন বের হয়ে আসবে যে, তারা এই শাসন আমলে কত অর্থ সঞ্চয় করেছেন।

এবার ভারতের বিস্তারিত খবর তুলে ধরছি

সন্ত্রাস দমন করুক পাকিস্তান, কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতায় তৈরি ট্রাম্প, বলছে ওয়াশিংটন-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা

কাশ্মীর বিষয়ে ভারত-পাকিস্তান চাইলে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত ডোনাল্ড ট্রাম্প।তবে তার আগে পাকিস্তানকে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর এবং স্থায়ী পদক্ষেপ করতে হবে। বৃহস্পতিবার ফের এমনটাই জানালেন মার্কিন বিদেশ দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।

দীর্ঘদিন ধরে ভারত বলে আসছে সন্ত্রাসবাদ এবং আলোচনা পাশাপাশি চলতে পারে না। সেই মনোভাবকে গুরুত্ব দিয়েই ওই আধিকারিক বলেন, আলোচনার জন্য সদর্থক পরিবেশ তৈরি করা এক্ষেত্রে জরুরি।সে ক্ষেত্রেপ্রথমে জঙ্গিবাদ দমনে পদক্ষেপ করতে হবে ইসলামাবাদকে।যদিও কাশ্মীর প্রশ্নে তৃতীয়পক্ষের মধ্যস্থতার যে সুযোগ নেই, তা ভারত বরাবরাই বলে এসেছে। এদিন ওই আধিকারিক সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্তার কথায়, ‘‘ভারত-পাকিস্তান চাইলে নিশ্চিত ভাবে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও ভারত প্রথম থেকেই এ ব্যাপারে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চায় না।’’

কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে বারবারই নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে সে ব্যাপারে খোলাখুলি আলোচনাও করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে শান্তিচুক্তি স্থাপনেও তিনি উদ্যোগী হতে পারেন বলে জানাচ্ছে ওয়াশিংটন। এদিন সাংবাদিকদের ওই প্রশাসনিক কর্তা বলেন, তবে শান্তিস্থাপনে মতবিনিময়ে দুই দেশ রাজি হলে মার্কিন প্রেসিডেন্টও সদর্থক ভূমিকা নিতে উদ্যোগী হবেন। সেক্ষেত্রে অবশ্য পাকিস্তানকে দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদ দমন করতে বন্ধ করতে হবে।

সম্প্রতি পাকিস্তানকে সন্ত্রাসদমনের বিষয়ে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ফাইনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স বা এফএটিএফ-ও। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে তা সম্ভব না হলে এই দেশকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে প্যারিসে আয়োজিত পাঁচ দিনের অধিবেশনে।

এদিন আধিকারিকের মুখে ছিল কাতারাপুর মৌ চুক্তির প্রশংসাও। বৃহস্পতিবারই করতারপুর করিডর দিয়ে পাকিস্তানে গুরুদ্বার দরবার সাহিবে যাওয়ার জন্য অনলাইনে নাম নথিভুক্তের শুরু হয়েছে। এর ফলে পাকিস্তানের নরওল জেলার দরবার সাহিব গুরুদ্বারে যেতে পারবেন ভারতীয় তীর্থযাত্রীরা। এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক এবং তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এমন ছোট ছোট পদক্ষেপই দুই দেশকে মুখোমুখি বসতে সাহায্য করবে, শান্তিপূর্ণ ভাবে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান আনবে।’’

ব্যবস্থা পাকা, ‌কালই হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন খট্টর-দৈনিক আজকাল 

হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কালই শপথ নিতে পারেন মনোহরলাল খট্টর। ইতিমধ্যেই দিল্লি চলে গিয়েছেন তিনি। সকালেই রাজধানীর হরিয়ানা ভবনে তিনি বৈঠক করেন বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জেপি নাড্ডা ও হরিয়ানায় বিজেপির দায়িত্বে থাকা অনিল জৈনের সঙ্গে। দলের বাকি নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করার সম্ভাবনা রয়েছে খট্টরের।জানা গেছে, বৈঠকেই খট্টরকে হরিয়ানা বিধানসভায় বিজেপির নেতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এবার সরকার গঠনের দাবি নিয়ে হরিয়ানার রাজ্যপাল সত্যদেব নারায়ণ আর্যর সঙ্গে দেখা করবেন খট্টর।

হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কালই শপথ নিতে পারেন মনোহরলাল খট্টর

সম্ভবত কালই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন তিনি। দিওয়ালির পর গঠন হবে নতুন মন্ত্রিসভা। হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে ৪০ আসন পেয়েছে বিজেপি। যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে ৬টি আসন কম। কংগ্রেস পেয়েছে ৩১ আসন। দুষ্মন্ত চৌতালার জেজেপি পেয়েছে ১০ আসন। বাকিরা ৯টি। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও সরকার গড়ার ব্যাপারে আশাবাদী বিজেপি। তবে ৯০ আসনের বিধানসভায় সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়ায় সরকার গড়ার দাবি করতেই পারে বিজেপি। সেক্ষেত্রে সমর্থন লাগবে নির্দল প্রার্থীদের। এদিনের বৈঠক শেষে নির্দল প্রার্থীরা জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা বিজেপিকে সমর্থন করবেন। এমনকি বিজেপির শীর্ষ নেতা অমিত শাহের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে দুষ্মন্ত চৌতালার। তিনিও বিজেপিকে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। ‌‌

সবসময় মোদির জনপ্রিয়তা জেতাতে পারবে না’, বিজেপিকে কটাক্ষ আসাদউদ্দিন ওয়েইসির-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

সবসময় নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা জয় নিয়ে আসতে পারবে না।’ বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশ পেতেই বিজেপিকে কটাক্ষ করে একথাই বললেন আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। গতকাল এই দুটি রাজ্য-সহ সারা দেশের মোট ৫১টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনের ফল প্রকাশ পায়। লোকসভা নির্বাচনে যেরকম মোদি সুনামি দেখতে পাওয়া গিয়েছিল গতকালের ফলে তা সেভাবে পরিলক্ষিত হয়নি। আর এই বিষয়টিই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।

এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি

বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশের পর দেখা যায় বিহারের কিষাণগঞ্জ বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছেন  এআইএমআইএমের কামরুল হোদা। বিজেপি প্রার্থী সুইটি সিংকে তিনি ১০ হাজার ২০৪টি ভোটে পরাজিত করেছেন। বৃহস্পতিবার এই বিষয়টির উল্লেখ করে ওয়েইসি বিজেপিকে মেরুকরণের রাজনীতি বন্ধ করার পরামর্শ দেন। কিষাণগঞ্জে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠক থেকে তিনি বলেন, ‘মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানাতে মেরুকরণের রাজনীতি কোনও কাজে দেয়নি সেটা আশাকরি করি  বিজেপি বুঝতে পেরেছে। ওই দুটি রাজ্য আশানরূপ ফলও করতে পারেনি তারা। নির্বাচনের আগে মহারাষ্ট্রে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার দাবি করেছিল বিজেপি। কিন্তু, ফলাফল প্রকাশ পেতে দেখা যায় তাদের আশা পূরণ হয়নি। এবং আমি বলতে চাই যে হরিয়ানাতে বিজেপির পরাজয় হয়েছে। তাই তাদের উচিত মেরুকরণের রাজনীতি বন্ধ করে অর্থনীতি ও গ্রামোন্নয়নের কথা ভাবা।’  

মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা ফলাফল দেখে বিজেপির সজাগ হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, এই দুটি বিধানসভার ফল বিজেপির পক্ষে একটা সতর্কবার্তা। সবসময় যে নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে নির্বাচনে জয়ী হওয়া সম্ভব নয় এই ভোটের ফলাফল তা প্রমাণ করেছে। হরিয়ানায় এবার ১০ থেকে ১২টি জনসভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তা সত্ত্বেও আশা অনুযায়ী ফল করতে পারেনি বিজেপি। এটা দেখে তাদের বোঝা উচিত যে সময়ের পরিবর্তন হচ্ছে।  

তবে শুধু বিজেপি নয়, বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক বৈঠক থেকে কংগ্রেসেরও তীব্র সমালোচনা করেন হায়দরাবাদের সাংসদ। বলেন, ‘আমার মনে হয়, মহারাষ্ট্রে কঠোর পরিশ্রম করতে পারেনি কংগ্রেস। হরিয়ানাতেও তাদের যে ফল হয়েছে তা আঞ্চলিক নেতাদের সাফল্য।’#

পার্সটুডে/বাবুল আখতার/২৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।