কথাবার্তা: লাদাখ উত্তেজনা, যুদ্ধের জন্য তৈরি থাকতে চিনফিংয়ের বার্তা সেনাবাহিনীকে
প্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ১৫ অক্টোবর বৃহষ্পতিবারের কথাবার্তার আসরে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতেই ঢাকা ও কোলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রধান প্রধান বাংলা দৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি।
প্রথমে বাংলাদেশের শিরোনাম:
- ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর-দৈনিক ইত্তেফাক
- ধর্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করা ছেলেটি ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার!-বাংলাদেশ প্রতিদিন
- কালের কণ্ঠসহ বিভিন্ন দৈনিকর খবর-ধর্ষণ: অধ্যাদেশ জারির পর প্রথম রায়ে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
- বিএনপি আওয়ামী লীগের শক্র নয়, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ-দৈনিক কালের কণ্ঠ
- রান্নার জ্বালানি-গ্যাসের ব্যয় এক দেশে তিনরকম-প্রথম আলোবিশ্বে করোনায় মৃত্যু ১০ লাখ ৯০ হাজার ছাড়ালো-
- দৈনিক সমকাল
- ইন্দো-প্যাসিফিক সেন্টার পিস বা কেন্দ্রবিন্দুতেই বাংলাদেশের অবস্থান বিগান-মানবজমিন
- বিটিসিএলের ১২৬৫ কোটি টাকার প্রকল্প ফেরত, অনুমোদনের আগেই ব্যয় বৃদ্ধি-দৈনিক যুগান্তরের
ভারতের শিরোনাম:
- যুদ্ধের জন্য তৈরি থাকতে চিনফিংয়ের বার্তা সেনাবাহিনীকে-আনন্দবাজার পত্রিকা
- কোটিপতি মোদ, একবছরে প্রধানমন্ত্রীর সম্পত্তি বাড়ল ৩৬ লক্ষ টাকার-সংবাদ প্রতিদিন
- ‘করোনা মোকাবেলায় হার্ড ইমিউনিটর ধারণা অবৈজ্ঞানিক’ দাবি হু প্রধানের -দৈনিক আজকাল
শ্রোতাবন্ধুরা! এবারে চলুন বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের আইন হলেও ধর্ষণ কমছে না। এ সম্পর্কে দৈনিক ইত্তেফাকের শিরোনাম- ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্ষণ প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণসহ এ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রশাসনের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘এ ধরনের ঘটনা (ধর্ষণ) রোধ করার ব্যাপক ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। আর সব থেকে বড় কথা মানুষের মাঝেও জনসচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।’সমসাময়িক কালে সামাজিক এই ব্যাধির প্রকোপ বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইদানিং ধর্ষণটা ব্যাপকভাবে হচ্ছে এবং প্রচারও হচ্ছে। এটার যত বেশি প্রচার হয় প্রাদুর্ভাবটাও তত বাড়ে।’
এদিকে,টাঙ্গাইলে ধর্ষণের দায়ে ৫ জনের ফাঁসির খবরটি পরিবেশিত হয়েছে দৈনিক কালের কণ্ঠে। এ খবরে লেখা হয়েছে, টাঙ্গাইলে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে অপহরণের পর দলবেঁধে ধর্ষণের দায়ে ৫ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন এ আদেশ দেন। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
দিনে টোল ওঠে ৩০ টাকা, সরকার পায় ৩ লাখ টাকা-দৈনিক ইত্তেফাকের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে অবস্থিত ধলেশ্বরী সেতুতে প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ টাকা টোল আদায় হলেও সরকারের কোষাগারে যায় মাত্র ৩ লাখ টাকা। এই হিসাবে ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার। এরকম অভিযোগ নিয়ে বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত প্রতিবেদন সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
মাথাপিছু জিডিপিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ-দৈনিক প্রথম আলো
চলতি বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ, ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমবে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। আইএমএফের এই পূর্বাভাস ঠিক থাকলে ভারত মাথাপিছু জিডিপির ক্ষেত্রে পাকিস্তান ও নেপালের থেকে সামান্য এগিয়ে থাকবে। সে হিসাবে বাংলাদেশ আসলে ভারত, পাকিস্তান, নেপালের আগে চলে আসবে।
আইএমএফ গত মঙ্গলবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক (ডব্লিউইও) প্রকাশ করেছে। সেখানেই এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মূলত করোনার এই সময়ে ভারতের অর্থনীতি বেশি মাত্রায় সংকুচিত হবে বলে আইএমএফ বলছে। সে তুলনায় বাংলাদেশে এবার ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হবে। এ কারণেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সামনে।
দিল্লির চোখে বাংলাদেশকে দেখে না যুক্তরাষ্ট্র: মোমেন-ইন্দো-প্যাসিফিকে সেন্টার পিস বা কেন্দ্রবিন্দুতেই বাংলাদেশের অবস্থান: বিগান-দৈনিক মানবজমিনের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে,
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে বাংলাদেশকে প্রধান অংশীদার হিসাবে বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। একথা জানালেন ঢাকা সফররত মার্কিন উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী স্টিফেন ই বিগান। পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনের সূচনা বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে এভাবেই আখ্যায়িত করেন। আজ সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঘন্টাব্যাপী ওই বৈঠক হয়। মার্কিন মন্ত্রীর ভাষ্য মতে, ইন্দো-প্যাসিফিকে সেন্টার পিস বা কেন্দ্রবিন্দুতেই বাংলাদেশের অবস্থান। আর এ কারণেই তিনি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।মন্ত্রী মোমেন এবং বিগান উভয়ে জানান, ঢাকার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার বিশেষত বড় মার্কিন বিনিয়োগ নিয়ে তাদের মধ্যে বিস্তৃত আলোচনা চলছে।
ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
যুদ্ধের জন্য তৈরি থাকতে চিনফিংয়ের বার্তা সেনাবাহিনীকে-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে,
লাদাখে সীমান্ত সঙ্ঘাতের মধ্যেই দেশের সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। বুধবার গুয়াংডং প্রদেশের একটি সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন চিনফিং। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম ‘জিনহুয়া’ জানাচ্ছে, গুয়াংডং প্রদেশের চাওঝাও শহরে চিনের গণমুক্তি ফৌজের নৌবাহিনীর যে ঘাঁটি রয়েছে সেখানে যান চিনফিং। কোরের সদস্যদের ‘চূড়ান্ত সতর্ক’ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বাহিনীর উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘আপনাদের মন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করে রাখুন।’’বাহিনীর প্রতি চিনফিংয়ের এই বার্তা মুহূর্তেই সাড়া ফেলে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। আসলে তিনি যে ঘুরিয়ে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন সে কথাও স্পষ্ট। কিন্তু চিনের নিশানায় কোন দেশ? সম্প্রতি তাইওয়ান প্রণালী (চিন এবং তাইওয়ানের মাঝে প্রণালী)-তে নজরে এসেছে মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ। যদিও আমেরিকার তরফে বলা হচ্ছে এটা ‘রুটিন’ সফর। কিন্তু ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপের পিছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য দেখছে বেজিং। আর তা নিয়েই দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক পারদ নতুন করে চড়ছে বলে আন্তর্জাতিক মহলের একটা বড় অংশ মনে করছে। তাঁদের ধারণা, সে কারণেই মেরিন কোরের সদস্যদের যুদ্ধের জন্য ‘প্রস্তুত’ থাকার বার্তা দিয়েছেন চিনফিং।
কোটিপতি মোদি, একবছরে প্রধানমন্ত্রীর সম্পত্তি বাড়ল ৩৬ লক্ষ টাকার-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
‘আরে হম তো ফকির আদমি হ্যায়, ঝোলা লেকে নিকল পড়েঙ্গে…” একাধিকবার একাধিক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) একথা বলতে শোনা গিয়েছে। আসলে কিন্তু আদৌ ‘ফকির’ নন নরেন্দ্র মোদি। রীতিমতো কোটি টাকার মালিক তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বলছে, এই মুহূর্তে মোদির মোট সম্পত্তির পরিমাণ নয় নয় করতে করতে ২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে স্রেফ গত একবছরেই মোদির সম্পত্তি বেড়েছে ৩৬ লক্ষ টাকার।
আসলে, নিজেকে গরিব ঘরের অভাবী সন্তান হিসেবে পরিচয় দিতেই পছন্দ করেন প্রধানমন্ত্রী। বারবার তাঁর মুখে শোনা যায় গুজরাটের ভাদনগর স্টেশনে চা বিক্রির কথা। এই ‘চাওয়ালা’ পরিচয়ই রাজনীতির আঙিনায় প্রতিষ্ঠিত করেছে তাঁকে। দীর্ঘদিন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী (Gujarat CM) ছিলেন মোদি, দেশের প্রধানমন্ত্রী পদেও আছেন ৬ বছর। স্বাভাবিকভাবেই আগের মতো নুন আনতে পান্তা ফুরনোর পরিস্থিতি যে তাঁর থাকবে না, সেটা বলে দেওয়ায় যায়। বস্তুত এই মুহূর্তে কোটিপতি দেশের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। আগের বছর ছিল ২ কোটি ৪৯ লক্ষ। অর্থাৎ গত এক বছরে তা বেড়েছে ৩৬ লক্ষ। আসলে এই একবছরে মোদির ব্যাংক ব্যালেন্স বেড়েছে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। আর ৩৩ লক্ষ টাকা তিনি স্থায়ী বিনিয়োগের থেকে ফেরত পেয়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় নিজের সম্পত্তির হিসেব দিয়েছিলেন মোদি। যাতে দেখা যায়, মাত্র ৫ বছরে তাঁর সম্পত্তি বেড়েছে ৫২ শতাংশ।
করোনা মোকাবিলায় হার্ড ইমিউনিটির ধারণা অবৈজ্ঞানিক’, দাবি হু প্রধানের –দৈনিক আজকাল
কোভিড–১৯ ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ বা গোষ্ঠীগতভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার বিষয়টি অনৈতিক তো বটেই। এটি আদৌ বিজ্ঞানসম্মতও নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসুস বুধবার এমনটাই জানালেন। তাঁর মতে, মহামারীর সঙ্গে লড়তে হার্ড ইমিউনিটি কোনও ন্যায়সঙ্গত কৌশল হতে পারে না। বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, রোগ ছড়িয়ে হার্ড ইমিউনিটি তৈরির ধারণা নিয়ে কয়েকবার আলোচনা হয়েছে মাত্র। এটা নিয়ে না ভেবে মানুষকে সচেতন করে তোলা, সংক্রমণ চিহ্নিত হলে তাঁদের আইসোলেশনের ব্যবস্থা ইত্যাদির উপরে জোর দিয়েছেন তিনি।
হার্ড ইমিউনিটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এটা একটা ধারণা যা ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যার দ্বারা একটি জনগোষ্ঠীকে কোনও নির্দিষ্ট ভাইরাসের হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। তাঁর কথায়, ‘উদাহরণ হিসেবে বলা যায় হামের ক্ষেত্রে হার্ড ইমিউনিটি গড়তে ৯৫ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া প্রয়োজন। বাকি ৫ শতাংশ হাম থেকে সুরক্ষিত থাকবে কেননা যাঁদের ভ্যাকসিন দেওয়া হল, তাঁদের থেকে ওঁদের সংক্রমিত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা থাকবে না। পোলিওর ক্ষেত্রে এটা ৮০ শতাংশ।’তিনি আরও বলেন, ‘হার্ড ইমিউনিটি মানুষকে ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচিয়েই অর্জন করা সম্ভব। তাঁদের ভাইরাসের সংস্পর্শে রেখে নয়।’ তাঁর সংযোজন, ‘কখনওই কোনও সংক্রমণ রুখতে হার্ড ইমিউনিটিকে ব্যবহার করা হয় না। এটা বিজ্ঞানসম্মত নয়, এবং নৈতিক দিক থেকেও ভুল।’
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৫
- বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।