প্রিয়জন: 'কোথায় কী ঘটছে তার সঠিক সংবাদ রেডিও তেহরান থেকে জানতে পারছি'
নাসির মাহমুদ: শ্রোতা বন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের আসর 'প্রিয়জন'। আজকের অনুষ্ঠানে আপনাদের সঙ্গে আছি আমি নাসির মাহমুদ, আমি গাজী আবদুর রশিদ এবং আমি আশরাফুর রহমান।
আশরাফুর রহমান: আসরের শুরুতেই আমি একটি বাণী শোনাতে চাই। ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছেন, ‘কেউ নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করলে, আল্লাহ তার লজ্জাজনক ত্রুটিসমূহ ঢেকে রাখেন।”
গাজী আবদুর রশিদ: আমরা সবাই রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করব- এ প্রত্যাশা করে নজর দিচ্ছি চিঠিপত্রের দিকে।
আসরের প্রথম চিঠিটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুপী গ্রাম থেকে। আর পাঠিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল মিতালি লিসনার্স ক্লাবের সভাপতি হাফিজুর রহমান। ৭ জুন প্রচারিত পুরো অনুষ্ঠান শোনার পর তিনি এই মেইলটি পাঠিয়েছেন। শ্রোতাদের চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন সম্পর্কে এই শ্রোতাবন্ধু লিখেছেন, "রেডিও তেহরানের প্রিয় শ্রোতাদের সুন্দর মতামত ও পর্যালোচনা শুনে সব সময়ই সমৃদ্ধ হয়ে থাকি। আজ মাত্র ৭ জন শ্রোতার মতামত পরিবেশত হলো। তবু বলবো সুন্দর আয়োজন ছিল এই প্রিয়জন। প্রিয়জনের শেষে বরাবরের মতো একটি গান উপহার পেলাম। ইরানের নাসিমে রাহমাত শিল্পী গোষ্ঠীর গাওয়া "সালাম বার কুদস" বা 'কুদসের প্রতি সালাম' শিরোনামের গানটি ছিল দারুণ! সুন্দর, আকর্ষণীয় ও উপভোগ্য অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার জন্য রেডিও তেহরানের সবার প্রতি রইল আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।"
নাসির মাহমুদ: শ্রোতাবন্ধু হাফিজুর রহমান আরও কিছু চিঠি পাঠিয়েছেন। সেসব চিঠিতে অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত, পরামর্শের পাশাপাশি সমালোচনাও করেছেন; পাঠিয়েছেন শ্রবণমান রিপোর্টও। নিয়মিত ইমেইল পাঠানোয় হাফিজুর ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভারতের পর এবার বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ থেকে আসা একটি মেইল পড়ব। এটি পাঠিয়েছেন আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব, কিশোরগঞ্জের অর্থ সম্পাদক শরিফা আক্তার পান্না।
তিনি লিখেছেন, "৩ জুন বৃহস্পতিবার রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলো হল- বিশ্বসংবাদ, দৃষ্টিপাত, রংধনু আসর ও কথাবার্তা। ওইদিনের প্রতিটি অনুষ্ঠানই ভালো লেগেছে। তবে সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান রংধনু আসরে কুস্তিবিদ ওস্তাদ ও তার সাগরেদের গল্প এবং কথাবার্তায় সিরাজুল ইসলামের বিশ্লেষণ খুব ভালো লেগেছে।"
আশরাফুর রহমান: বোন শরিফা আকতার পান্নাকে ধন্যবাদ, মতামতসমৃদ্ধ চিঠিটির জন্য।
রংধনু আসর সম্পর্কে মতামত জানিয়ে পরের মেইলটি পাঠিয়েছেন হারুন অর রশীদ, জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানার পূর্ব নলছিয়া থেকে। তিনি লিখেছেন, “পুস্প যেমন তার সৌরভ ছড়িয়ে আমাদেরকে মোহিত করে রাখে; সমুদ্র যেমন তার অপার সৌন্দর্য মহিমায় আমাদের চোখ ও হৃদয়কে শীতল করে দেয়; ঠিক তেমনিভাবে ‘রংধনু আসর’ অনুষ্ঠানটি তার নানা শিক্ষণীয় গল্পে আমাদেরকে সমৃদ্ধ করে যাচ্ছে। আলোকিত মানুষ হবার মন্ত্র শিখিয়ে যাচ্ছে। ‘রংধনু আসর’ যেন এক অবারিত জ্ঞান ভাণ্ডার! শ্রোতারা যা মুঠোয় ভরে নিচ্ছে রেডিও তেহরান থেকে।” ইন্টারনেটের এই অস্থির সময়ে মানবিক সম্পর্কের ভাঙন রোধ করতে রংধনু আসর অনুষ্ঠানটি পশ্চিমা বিশ্বসহ সকলেরই শোনা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
গাজী আবদুর রশিদ: ভাই হারুন অর রশীদ, বরাবরের মতোই আকর্ষণীয় ভাষায় চিঠিটি লিখেছেন আপনি। উপমা ও দরদ দিয়ে চিঠিটি লেখার জন্য আপনাকে ইরানি গোলাপ ও টিউলিপ ফুলের শুভেচ্ছা। আশা করি আবারো লিখবেন।
গাজী আবদুর রশিদ: শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে আমরা রেডিও তেহরানের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে 'আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব বাংলাদেশ' আয়োজিত প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্য থেকে একজনের লেখার কিছু অংশ পড়ে শোনাতে চাই। আজ আমরা পড়ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার নওপাড়া শিমুলিয়ার শ্রোতা নিজামুদ্দিন সেখের লেখা। তিনি ওই প্রতিযোগিতায় বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, “আশির দশকে আমাদের দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সংবাদ পৌঁছানোর একমাত্র মাধ্যম ছিল রেডিও। ঠিক এমনি এক সন্ধিক্ষণে আমি আবিষ্কার করি রেডিও তেহরানকে। সবে কলেজে পদার্পণ ঘটেছে। বিশ্বকে সঠিকভাবে জানার কৌতুহল মনের মধ্যে ভিড় করে চলেছে। সত্যকে চাপা দিয়ে মিথ্যার আস্ফালন ঘটিয়ে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের বেতার কেন্দ্র যখন তাদের সংবাদ প্রচার করে যাচ্ছিল তখন রেডিও তেহরান সত্যের মূর্ত প্রতীক হিসেবে আমাদের কাছে আত্মপ্রকাশ করে।”
নাসির মাহমুদ: নিজামুদ্দিন সেখ আরও লিখেছেন, “ইরান-ইরাক যুদ্ধের অর্থাৎ ইরানের উপর চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের সঠিক তথ্যসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো কিভাবে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে তাদের হিংস্র থাবা বসিয়ে মুসলিম রাষ্ট্রের সম্পদ লুট করে চলেছে তা জানতে পারছি রেডিও তেহরানের মাধ্যমে। মুসলিম দেশের প্রাণ কেন্দ্র হিসেবে আমরা যাকে জানি সেই সৌদি আরব তার রাজতন্ত্রকে ধরে রাখার জন্য যায়নবাদী ইসরাইল ও সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার গোলামী কিভাবে করে যাচ্ছে তা জানতে পারছি। ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের উপর ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলা, ইয়েমেনের উপর সৌদি আগ্রাসী জোটের নির্লজ্জ আক্রমণ এবং জাতিসংঘকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আমেরিকা কিভাবে ইরানের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে- তা জানতে পারছি রেডিও তেহরান থেকে। এক কথায় বিশ্বের কোথায় কী ঘটছে তার সঠিক সংবাদ আমি রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান থেকে জানতে পারছি।”
আশরাফুর রহমান: রেডিও তেহরান সম্পর্কে চমৎকার মূল্যায়নের জন্য নিজামুদ্দিন সেখ আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আশা করি সবসময় আমাদের পাশে থাকবেন।
আসরের এ পর্যায়ে আমরা অনুষ্ঠানে সম্পর্কে সরাসরি মতামত জানব বাংলাদেশের এক শ্রোতাবন্ধু জায়েদ ইসলাম জসিমের কাছ থেকে।
নাসির মাহমুদ: আনন্দ মোহন বাইনকে ধন্যবাদ অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত জানানোর পাশাপাশি কুইজ নিয়ে যৌক্তিক মন্তব্যের জন্য। আশা করি আবারো লিখবেন।
বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারীর উত্তর ধলডাঙ্গার শাপলা শর্টওয়েভ রেডিও লিসেনার্স ক্লাব সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার পাঠিয়েছেন পরের মেইলটি। তিনি লিখেছেন, ৭ জুন প্রিয়জন অনুষ্ঠানের শুরুতে জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ রাখা প্রসঙ্গে সুন্দর অনুসরণীয় একটি হাদিস খুব ভালো লেগেছে। এ সপ্তাহের প্রিয়জনে ভারতের কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ থেকে নতুন শ্রোতা রাসেল মণ্ডলের সাক্ষাৎকার শুনলাম। সম্ভবতঃ কোনো বেতারে এটিই তার প্রথম সাক্ষাৎকার। সরাসরি নির্দিষ্ট কোনো অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত না থাকলেও মুসলিম বিশ্বের বর্তমান অবস্থা এবং এতে ইরানের সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে রাসেলের অনুভূতি ভালো লেগেছে।
এছাড়া, শ্রোতাবোন রুশিয়া জামান রত্নার ‘ফিলিস্তিনময় পার্সটুডে’ বিষয়ে লেখাটি হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। বন্ধু হারুন অর রশীদ ও অন্যান্যদের লেখাগুলোও ছিল আকর্ষণীয়। সবশেষে আরবি ফার্সি ও ইংরেজি ভাষার সমবেত গানটিও ছিল হৃদয়গ্রাহী।
গাজী আবদুর রশিদ: অনেকদিন পর আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার ভাইয়ের চমৎকার চিঠিটি পেয়ে খুব ভালো লাগল। এ ধরনের চিঠি শ্রোতাবন্ধুরাও প্রত্যাশা করেন।
আসরের শেষ চিঠিটি এসেছে ভারতের নয়াদিল্লি থেকে আর পাঠিয়েছেন জয়ন্ত চক্রবর্তী। তিনি জানিয়েছেন, ইরানের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ঐতিহাসিক দিক এবং শিল্প ও প্রযুক্তিগত বিকাশ থেকে জ্ঞানার্জানের পাশাপাশি ডিএক্সিং, সামাজিক কাজ, ভ্রমণ এবং ডাকটিকিট সংগ্রহ করা তার শখ।
৯ জুন প্রচারিত অনুষ্ঠানের রিসেপশন রিপোর্টে তিনি লিখেছেন, রেডিও তেহরানের রাতের অনুষ্ঠান শুনলাম। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের পর স্থানীয় ও বিশ্ব সংবাদ এবং সংবাদ পর্যালোচনা আপডেটেড এবং নিরপেক্ষ ছিল। রেডিও তেহরান শুনে তিনি ইরান এবং পার্শবর্তী এলাকার বহু ঘটনার একটি পরিষ্কার চিত্র পান বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।
আশরাফুর রহমান: শ্রোতাবন্ধু জয়ন্ত চক্রবর্তীকে ধন্যবাদ অনুষ্ঠান শোনার পাশাপাশি মতামত জানিয়ে চিঠি লেখার জন্য। এবারে কয়েকজন ডিএক্সার বন্ধুর নাম-ঠিকানা জানিয়ে দিচ্ছি যারা আমাদের অনুষ্ঠান শুনে শ্রবণমান রিপোর্ট পাঠিয়েছেন।
- ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ থেকে এসএম নাজিমউদ্দিন
- কোচবিহারের আমলাগুড়ি থেকে তপন বসাক
- দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে বিধান চন্দ্র সান্যাল।
- পশ্চিম মেদিনিপুর থেকে সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য
- বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ থেকে শাহাদত হোসেন
- এবং টাঙ্গাইল থেকে আবু তাহের।
নাসির মাহমুদ: যারা অনুষ্ঠান শোনার পাশাপাশি কষ্ট করে শ্রবণমান রিপোর্ট পাঠিয়েছেন তাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তো বন্ধুরা, অনুষ্ঠান থেকে বিদায় নেয়ার আগে আজও রয়েছে একটি গান। পথশিশুদের নিয়ে গানটি লিখেছেন ইমতিয়াজ মেহেদি হাসান আর সুর করেছেন হাবিব মোস্তফা। গানটি গেয়েছেন পরান।
গাজী আবদুর রশিদ: আপনারা গানটি শুনতে থাকুন আর আমরা বিদায় নিই প্রিয়জনের আজকের আসর থেকে।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।