মিয়ানমার সীমান্তে জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা; প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সমস্যার প্রভাব
(last modified Sat, 28 Jan 2023 13:29:29 GMT )
জানুয়ারি ২৮, ২০২৩ ১৯:২৯ Asia/Dhaka

বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের সংকট আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে। বিশেষ করে পাহাড়ের পর নব্য জঙ্গি সংগঠনের ‘সামরিক শাখার প্রধান ও বোমা বিশেষজ্ঞের’ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। আত্মগোপন নাকি সদস্য সংগ্রহ এবং প্রশিক্ষণের জন্য ক্যাম্পে জঙ্গিদের অবস্থান, তা নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর স্বাধীনতাকামী সংগঠন আরসার (আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি) সঙ্গে বাংলাদেশের নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছে বলে দাবী করেছে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‍্যাব। মিয়ানমারের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে ন্যাইক্ষংছড়ির পাহাড়ে সশস্ত্র ট্রেনিং নিয়েছে শারক্কীয়ার জঙ্গিরা। এরপর আত্মগোপনের জন্য তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্প বেছে নেয়। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের দলের সদস্য বানানোরও চেষ্টায় আছে এই নতুন জঙ্গি সংগঠন এমন দাবীও তুলে ধরা হয়েছে। এর আগে জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। আদালতে দেওয়া সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইয়ের জবানবন্দিতে এসব তথ্য রয়েছে গোয়েন্দা বিশ্লেষনে। এমন পরিস্থিতিতে পাহাড়ে র‍্যাবসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।

এছাড়া রোহিঙ্গাদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টাও চালাচ্ছে এমন  তথ্য পাচ্ছেন বলেও দাবী গোয়েন্দাদের। নতুন করে আরসার নাম যুক্ত হওয়ায় এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

জানা যায়, ২০২১ সাল থেকে এই জঙ্গি সংগঠনকে সহায়তা প্রদান এবং সামরিক প্রশিক্ষণে সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে কেএনএফের ১৪ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে, শারক্বীয়ার আমীর আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদের নেতৃত্বে উগ্রবাদী সংগঠনটি পরিচালিত হচ্ছে।

পরিস্থিতি বিশ্লেষন করেছেন মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। তিনি রেডিও তেহরানকে বলেছেন,সীমান্ত এলাকা যখন গহিন অরণ্যে বেষ্টিত হয়, তখন সেখানে দুস্কৃতিকারীরা সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবেই। তবে মিয়ানমার সীমান্ত ইস্যুটা একটু ভিন্ন। এখানে বাস্তুচ্যুত কয়েক লাখ মানুষ তাদের অধিকার দাবী আদায়ের যখন সোচ্চার তখন তাদের সঙ্গে তাদের নিজ রাষ্ট্রের আভ্যন্তরীন সরকারের দ্বন্দ বিবদমান। এমন পরিস্থিতিতে তাদের ওপার যখন কোন অনৈতিক চাপ আসে তার বিরুপ প্রভাব পড়ে বাংলাদেশ সীমান্তে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের অনেক স্বজন রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে শংকার কিছু নেই, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের পরামর্শ সাবেক এই জেনারেলের।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. জিয়া রহমান রেডিও তেহরানকে বলেছেন, ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই সংকটকে বিবেচনায় রেখেই প্রস্তুতি নিতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। একই সাথে রোহিঙ্গাদের মানবিক বিষয় খেয়াল রেখেই অপরাধ বিশ্লেষন জরুরী বলে মনে করেন ড. জিয়া রহমান।#   

পার্সটুডে/নিলয়/২৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ