ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪ ২১:৩৫ Asia/Dhaka

পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো গণমাধ্যম হিসেবে রেডিও বা বেতারের তথ্য ও বিনোদন সবসময়ই মানুষের হৃদয় ছুঁয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও অসামান্য ভূমিকা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের।

বাংলাদেশ ১২টি আঞ্চলিক বেতার কেন্দ্র এবং ৩৫টি এফএম জনগণকে তথ্য সরবরাহের পাশাপাশি দিচ্ছে বিনোদন। জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব বেতার দিবস আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি। ইউনেসকো ঘোষিত দিবসটি ২০১২ সাল থেকে পালিত হচ্ছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা বেতার থেকে সারা দেশের সব কটি আঞ্চলিক কেন্দ্রে একযোগে দিবসটি পালনের সূচনা হয় ২০১৬ সাল থেকে। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শতাব্দীজুড়ে তথ্য, বিনোদন ও শিক্ষাবিস্তারে বেতার’।

দেশের অনেক স্থানে এখনও বিদ্যুৎ নেই থাকলেও নিরবচ্ছিন্ন নয়। অনেক স্থানে স্যাটেলাইট সংযোগও নেই। সেখানে এতসংখ্যক জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য ও বিনোদনের চাহিদা পূরণের একমাত্র নির্ভরশীল মাধ্যম হচ্ছে বেতার। যেখানে সরকারি গণমাধ্যম বাংলাদেশ বেতারের পাশাপাশি বেসরকারি রেডিও আন্তর্জাতিক রেডিও, আইআরআইবি রেডিও তেহরান কাজ করছে। দেশের বেশিরভাগ জনগোষ্ঠীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে এই গণমাধ্যম। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ এই দেশে প্রায়ই উপকূলবর্তী এলাকাগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকে তখনও সেসব এলাকাতে তথ্য, আবহাওয়া কিংবা মুহূর্তের সংবাদ পৌঁছে দিয়ে থাকে বেতার।

এছাড়া প্রতিনিয়তই সরকারি বেসরকারি বেতারের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদ, সংসদ, খেলাধুলা, সাক্ষাৎকার, জনসচেনতা, সরকারি নীতি, কার্যক্রম, উন্নয়ন, জনগণকে অবহিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব বাংলাদেশের সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া চৌধুরী যুবরাজ বলেন, দেশের সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করে ইরানকেন্দ্রীক রেডিও তেহরানও তার শেকড়সন্ধানী মনোভাব নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান শ্রোতাদের প্রতিনিয়তই উপহার দিয়ে যাচ্ছে।

আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব ঢাকার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আলম রিপন মনে করেন, একবিংশ শতাব্দীর আকাশছোঁয়া প্রযুক্তির বিস্তারের পরও বেতার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপকভাবে কাজ করছে।

ফ্রেন্ডস ডি-এক্সিং ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মো. সোহেল রানা হৃদয় বলেন, অনেকেরই ধারণা ইন্টারনেটের অগ্রযাত্রার এই সময়ে রেডিও তার গুরুত্ব হারিয়েছে। ধারণাটি মোটেই সঠিক নয়! কারণ সময় যেমন বদলেছে, ঠিক তেমনই সময়ের সঙ্গে তালমিলিয়ে প্রচারণার ধরনও বদলে গেছে। এখন মানুষ রেডিও শোনে মোবাইল ফোনে কিংবা ইন্টারনেট অ্যাপস দিয়ে।

কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব কিশোরগঞ্জের সভাপতি মোঃ শাহাদত হোসেন বলেন, এখনও রেডিওর ওপর নির্ভর করে অনেক মানুষ। সারাবিশ্বে বেতার এখনও অন্যতম জনপ্রিয় গণমাধ্যম।

সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বের ২০ শতাংশ মানুষ এখনও প্রতিদিন একবার করে রেডিও শোনে। বেতারের রয়েছে পৃথিবীর দুর্গম স্থানে পৌঁছানোর অসীম শক্তি। তথ্য-প্রযুক্তির অবাধ প্রসারের ফলে সম্প্রচার জগতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রতিযোগিতাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। গ্রামগঞ্জ ও দুর্গম এলাকায় এখনও বেতার তথ্য আদান-প্রদানের গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম হিসেবেই বিবেচিত।

তাই বলা চলে ‘বেতার সবার জন্য, সবসময়, সবখানে।’ বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তির যুগে গণমানুষের স্বপ্ন, আশা-আকাঙ্খা পূরণে বেতার আরো সামনে এগিয়ে যাবে, বেতার এগিয়ে চলুক তার স্বমহিমায়, ‘বিশ্ব বেতার দিবস ২০২৪’- এ এমনটাই প্রত্যাশা। #

পার্সটুডে/বাদশা রহমান/গাজী আবদুর রশীদ/১৩

ট্যাগ