উগ্রবাদে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বাড়ছে নারীদের: করণীয় নিয়ে বিশ্লেষক অভিমত
(last modified Tue, 10 Dec 2019 09:19:25 GMT )
ডিসেম্বর ১০, ২০১৯ ১৫:১৯ Asia/Dhaka
  • উগ্রবাদ বিরোধী জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করলেন স্পিকার
    উগ্রবাদ বিরোধী জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করলেন স্পিকার

বাংলাদেশে যদিও অতীতে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো নারীদের সরাসরি হিংসাত্মক কাজে ব্যবহার করেনি; কিন্তু বর্তমানে নারীদের উগ্রবাদে জড়ানোর প্রবণতা বাড়ছে।

গতকাল (সোমবার) রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে উগ্রবাদবিরোধী প্রথম জাতীয় সম্মেলনে উপস্থাপিত পৃথক গবেষণাপত্রে এরকম তথ্য ফুটে উঠেছে।

সম্মেলনে বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে নারী বা পুরুষ দুই ধরনের জঙ্গিরাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে নারীদের জড়িয়ে পড়ার হার ঊর্ধ্বমুখী।

সিটিটিসিতে কর্মরত পুলিশের উপকমিশনার আবদুল মান্নান তাঁর উপস্থাপনায় বলেছেন, ২০১৬ সালে রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান রেষ্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার পর পুলিশ ৮৫ জন নারীকে গ্রেপ্তার করেন। এদের প্রত্যেকেই বিপজ্জনক মাত্রায় জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ। গত তিন বছরে ১১ জন আত্মঘাতী হয়েছেন বা পুলিশি অভিযানে নিহত হয়েছেন।

নারীদর উগ্রবাদে জড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিষ্টার সাদিয়া আরমান রেডিও তেহরানকে বলেন, বিশ্বব্যাপী নারীদের উপর সহিংসতা যেভাবে বাড়ছে তার একটি বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতে পারে মেয়েরাও নিজেকে শক্তিশালি করতে এভাবে উগ্রবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।

ব্যারিষ্টার সাদিয়া আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এ রকম প্রচারণার মাধ্যমে নারীদের বিরুদ্ধে উগ্রবাদের লেবেল লাগিয়ে জঙ্গী দমন আইনের আরো কিছু অপপ্রয়োগের নেপথ্য উদ্দেশ্য থাকতে পারে।

তাছাড়া, পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তারের পর যেভাবে একটা লেবেল লাগিয়ে গণমাধ্যমে প্রচার করে দেয় তা শেষপর্যন্ত আদলতের বিচারে প্রমাণিত হয়েছে কী না সেটা অনেকসময় বলা হয় না।  এমনকি বন্দুকযুদ্ধের নামে কথিত জঙ্গি কেউ নিহত হলে আসল সত্য আর প্রকাশ পায় না। পুলিশ যেমনটি  বলে  জনগণকে সেভাবেই মেনে নিতে হয়।

উগ্রবাদবিরোধী গতকালের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সন্ত্রাসীরা কীভাবে কী কারণে সন্ত্রাসী হয়, জঙ্গি হয় ও উগ্রবাদী হয়, সেটা খুঁজে বের করতে হবে। তাহলে কী কারণে তারা এই পথ বেছে নিল এবং কী উপায়ে জঙ্গিবাদ প্রতিহত করা যায়, তা খুঁজে বের করা সম্ভব হবে।

জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো বলেন, বৈষম্য, ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতি এবং সুযোগের অভাব মানুষকে হতাশাগ্রস্ত করে। আর এই হতাশাই মানুষকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করে।

অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ দমনে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, উগ্রবাদ দমনে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ৩৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে। প্রয়োজনে আরও সহায়তা করবে।

জাতিসংঘ ও ইউএসএআইডি’রর সহযোগিতায় বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) আয়োজিত উগ্রবাদবিরোধী দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনটি আজ মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ধর্মীয় প্রতিনিধি, সাংবাদিক, বিদেশি কূটনীতিকসহ আমন্ত্রণিত বিশিষ্টজনেরা।#

পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/বাবুল আখতার/১০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ