নোয়াখালীতে নির্যাতিত নারীর সঙ্গে কথা বললেন ডিআইজি: গ্রেফতার আরও ২
বাংলাদেশের নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে রাতের আঁধারে ঘরে ঢুকে এক নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় আরও দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- একলাসপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ (৪৮) ও মামলার পাঁচ নম্বর আসামি পূর্ব একলাসপুর গ্রামের সাজু (২১)। এ নিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত চারজনসহ মোট ছয়জন আসামিকে গ্রেফতার করা হলো।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেমকে জয়কৃষ্ণপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নন। কিন্তু, ভুক্তভোগী তার জবানবন্দিতে জানান, ঘটনার পর তিনি বিচারের আশায় মোয়াজ্জেমের কাছে গিয়েছিলেন। মোয়াজ্জেম বিচার করবেন বলে ভুক্তভোগীকে আশ্বাস দিলেও বিচার করেননি। সে কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকেও মামলায় আসামি করা হবে। আর সাজুকে গতকাল দিনগত রাত আড়াইটার দিকে ঢাকার শাহবাগ থেকে নোয়াখালী জেলা পুলিশের একটি দল গ্রেফতার করেছে বলেও জানান ওসি।
এর আগে গ্রেফতার হওয়া চার জন হলেন- বেগমগঞ্জ একলাশপুর এলাকার রহমত উল্যার ছেলে ও মামলার প্রধান আসামি বাদল (২২), দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার, রহমত উল্লাহ ও আবদুর রহিম (২২)। এদের মধ্যে চার জন মামলার এজাহারভুক্তহ আসামি এবং দুই এজাহার-বহির্ভূত। ওই দুই জন হলেন- দেলোয়ার ও মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ।
এদিকে, পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীর সঙ্গে কথা বলেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন (পিপিএম)। আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১০টায় বেগমগঞ্জ মডেল থানার একটি কক্ষে একান্তে ভিকটিমসহ তার স্বজনদের সঙ্গে আধা ঘণ্টা ধরে কথা বলেন তিনি।
পরে ডিআইজি সাংবাদিকদের জানান, নির্যাতিতা নারীর মুখ থেকে তিনি বিস্তারিত শুনেছেন। এ ঘটনায় কী করণীয় সে বিষয়ে পুলিশকে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে পুলিশ। ওই নারী ও তার স্বজনদের নিরাপত্তার বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, নোয়াখালীতে দেলোয়ার বাহিনীর মতো তথাকথিত যেসব বাহিনী রয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এরপর ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকায় ওই নারীকে নির্যাতন করা সেই টিনের ঘর পরিদর্শনে যান। এ সময় ডিআইজির সঙ্গে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান শেখ ও বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মো. হারুনুর রশিদ চৌধূরী উপস্থিত ছিলেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের বড় খালপাড় এলাকায় ঘরে ঢুকে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে একদল তরুণ। সেসময় ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণ করে তারা। গত এক মাস ধরে তারা এ ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগী নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।