নারী কর্মসংস্থানে ৪৪১ কোটি টাকার প্রকল্প: সংশ্লিষ্টদের অভিমত
বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বাড়াতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৪৪১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রণয়ন করেছে। এখন এটি সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির আওতায় বিউটি পারলারের পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য ৮০টি ফুড কর্নারও করে দেওয়া হবে। নির্বাচিত ৮০টি উপজেলায় নারীদের জন্য স্থাপন করা হবে বিক্রয় ও প্রদর্শনীকেন্দ্র। এ ক্ষেত্রে এককালীন অর্থ সাহায্য দেবে সরকার।
পরীক্ষামূলকভাবে দেশে ১৪টি বিউটি পারলার স্থাপন করে সফলতা পাওয়ার পর নতুন করে আরও ৮০টি গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ‘তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করেছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
যেসব নারী জাতীয় মহিলা সংস্থার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে প্রশিক্ষণ নেবেন,তাঁদেরকেই বিউটি পারলার,ফুড কর্নার ও বিক্রয়কেন্দ্র করে দেওয়া হবে। ৫ থেকে ১০ জন মিলে একেকটি বিউটি পারলার পরিচালনা করবেন। একই সঙ্গে বিউটি পারলার সাজাতে যেসব উপকরণ প্রয়োজন হয়; সেসবও সরবরাহ করা হবে।
একই পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে ফুড কর্নার ও বিক্রয়কেন্দ্র। তবে বিউটি পারলার, ফুড কর্নার এবং বিক্রয় ও প্রদর্শনীকেন্দ্র ভাড়া নিতে হবে নারী উদ্যোক্তাদের।
উপজেলা পর্যায়ে নারীদের জন্য বিউটি পারলার,ফুড কর্নার এবং বিক্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বরিশালের বানারিপাড়া উপজেলার প্রধান শিক্ষিকা খালেদ ইয়াসমীন রেডিও তেহরানকে জানান, এর ফলে মেয়েদের যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে তেমনি সেখানকার সৌন্দর্যপ্রিয় মেয়েরাও সহজে এ সেবা নিতে পারবেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যের আলোকে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র এমন ৮০টি উপজেলা বাছাই করা হয়েছে এই প্রকল্পের জন্য। এর মধ্যে কয়েকটি হলো ঢাকার সাভার,মানিকগঞ্জের ঘিওর,নরসিংদীর রায়পুরা,গাজীপুরের কালিগঞ্জ ও নীলফামারীর ডিমলা। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে আগামী ২০২৫ সাল নাগাদ এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
জাতীয় মহিলা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী,এই প্রকল্পের আওতায় সারা দেশ থেকে ২ লাখ ৫৬ হাজার নারী বাছাই করে তাঁদের ছয় মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রতিদিন একজন নারী প্রশিক্ষণার্থীকে দেড় শ টাকা করে দেওয়া হবে। কারা দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ পাবেন,তার মানদণ্ড ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। অষ্টম শ্রেণির কম পড়ালেখা এমন কেউ এই প্রশিক্ষণ পাবেন না। এসএসসি ও এইচএসসি পাস অনেক নারী এই সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
জাতীয় মহিলা সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন,এর আগে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নেওয়া প্রকল্পে ইতিবাচক ফল মিলেছে। আগে জেলা পর্যায়ে সরকারের এই কার্যক্রম থাকলেও সেটি এখন উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে,যাতে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র নারীরাও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারেন।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/গাজী আবদুর রশীদ/১২
- বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।