বাংলাদেশের ৩৪ শতাংশ বিবাহিত কিশোরী ভাবেন, ‘স্বামী মারধরের অধিকার রাখে’
'বাংলাদেশের ৩৪ শতাংশ বিবাহিত কিশোরী মনে করে, স্বামীর কথা না শুনলে স্বামী তাকে শারীরিকভাবে আঘাত করার বা মারধরের অধিকার রাখে। ১৮ শতাংশ অবিবাহিত কিশোরীর ভাবনাও এমনই।'
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশ এডোলেসেন্ট হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং সার্ভে ২০১৯-২০’ জরিপে এ তথ্য জানানো হয়। কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণ পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার উদ্দেশ্যে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়।
স্বামীর নির্যাতনের প্রতি কিশোরীদের মনোভাব নিয়ে জরিপে যে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে তাকে 'পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মানসিকতার প্রতিফলন' বলে মনে করছেন নারী নেত্রী ও সমাজবিজ্ঞানীরা।
এ জন্য আইন বাস্তবায়নে সরকারি পর্যায়ে অবহেলাকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত। পারিবারিক অশিক্ষা, ধর্মীয় গোঁড়ামি থেকে বেরিয়ে সামাজিক পর্যায়ে নারীরই প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদল করা দরকার বলেই মনে করেন এ নারী নেত্রী।
এ প্রসঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শ্যামলী শীল রেডিও তেহরানকে বলেন, নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নারীদেরকে নিজের মানসিকতায় পরিবর্তন আনাটা জরুরি। এজন্য সরকারিভাবে প্রচার অভিযান চালাতে হবে যাতে সমাজে এবং পরিবারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে।
কিশোরীদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে পরিচালিত সরকারি জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশ অনেক উন্নতি সাধন করলেও বাল্যবিবাহ, কৈশোরে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণের হার এখনও বেশি। স্বাস্থ্যখাতে অর্জিত উন্নয়ন সমুন্নত রাখতে বাল্যবিবাহ রোধ করা, কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পর্যাপ্ত তথ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, স্কুলগামী ছেলেমেয়েদের পরিবার থেকে একটা গাইডেন্স দরকার। সঠিক পথে পরিচালনা করার দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য শিক্ষকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। পরিবারে বাবা-মা, বড় ভাই এবং স্কুলে শিক্ষকদের খেয়াল রাখতে হবে যে, তারা কোথায় কাদের সঙ্গে মিশছে, কী করছে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।