আরজি কর ধর্ষণ-হত্যায় নতুন করে তদন্তের আর্জি প্রত্যাহার
সন্দীপ-অভিজিৎদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন না করায় সিবিআইকে শোকজ
-
সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডল
কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইকে শোকজ করেছে আদালত। আরজি কর হাসাপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে সরকার চার্জ গঠনের অনুমতি দেওয়ার পরও তা আদালতকে জানায়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এ নিয়েই আজ (বৃহস্পতিবার) সিবিআইকে এদিন শোকজ করেন আলিপুর আদালতের বিচারক।
সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার মণীশ উপাধ্যায়কে ধমক দিয়ে বিচারক বলেন, "হাইকোর্ট জানতে পারল কিন্তু ট্রায়াল কোর্ট জানল না কেন? তাহলে কি ট্রায়াল কোর্টকে বাইপাস করে হাইকোর্টে যাচ্ছেন?'
সিবিআইয়ের গড়িমসি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে বিচারক জানিয়ে দেন, আগামীকালের মধ্যে চার্জ গঠনের সমস্ত নথি জমা দিতে হবে।
গত বছরের ৮ অগস্ট গভীর রাতে আরজি করের সেমিনার হলে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই সূত্রেই সামনে আসে আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ। সেই মামলায় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ, বিপ্লব সিং, আফসার আলি, সুমন হাজরা, আশিস পাণ্ডেকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
গত ২৯ নভেম্বর এই দুর্নীতি মামলায় আলিপুর আদালতে চার্জশিটও দাখিল করেছিল সিবিআই। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে সন্দীপ ঘোষ রাজ্য সরকারি কর্মচারী হওয়ায়, এক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জগঠনের জন্য সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন। আদালত সূত্রের খবর, গত ২৭ নভেম্বর এ বিষয়ে রাজ্য প্রয়োজনীয় অনুমতিও দিয়ে দিয়েছে। অথচ সিবিআই তা আদালতকে জানায়নি।
এ বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অভিযুক্তদের অন্যতম আফসার আলির আইনজীবী শ্যামল মণ্ডল। তিনি আদালতকে বলেন, ‘‘এই মামলায় প্রথম থেকেই সিবিআই সহযোগিতা করছে না। ২৭ নভেম্বর রাজ্য থেকে অনুমতি পাওয়ার তিন দিন পরেও সেকথা আদালতকে জানায়নি।"
এরপরই ক্ষুব্ধ বিচারক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে শোকজ করেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চার্জ গঠনের সমস্ত নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আদালত জানিয়েছে, আগামী সাত দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের কাজ শেষ করতে হবে।
আরজি করে ধর্ষণ-খুন মামলা প্রত্যাহার
এদিকে, আরজি কর ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় নতুন করে তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন নির্যাতিতার মা-বাবা।
দেশের শীর্ষ আদালত আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মায়ের পক্ষের আইনজীবীকে জানান, কলকাতা হাই কোর্টে এই সংক্রান্ত একটি মামলা চলছে। এই অবস্থায় এই মামলাটির শুনানি সুপ্রিম কোর্টে হবে কি না, তা জানতে চান প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। এই আবহে মামলাকারী পক্ষের আইনজীবীকে হলফনামা জমা দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ।
শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে বলা হয়, ইতোমধ্যে আরজি করের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। তাকে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা দিয়েছেন শিয়ালদা দায়রা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। তাই সেই দিকটি মাথায় রেখে আদালতে হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। পাশাপাশি তিনি পরামর্শ দেন, নির্যাতিতার বাবা-মা এবার নতুন করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারেন। পরে নির্যাতিতার মা-বাবার আবেদনটি প্রত্যাহার করা হয় শীর্ষ আদালত থেকে।#
পার্সটুডে/এমএআর/৩০