জাতিসংঘের বিশেষ দূতের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানাল হামাস
-
ফ্রানচেসকা আলবানিজ
জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রানচেসকা আলবানিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। সংগঠনটি বলেছে, আমেরিকার এ পদক্ষেপ থেকে আবারও সবার সামনে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, তারা আন্তর্জাতিক আইন মানে না।
গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন দেওয়ায় জাতিসংঘের এই বিশেষ দূতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
হামাস আজ (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে বলেছে, এই পদক্ষেপ ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের প্রতি আমেরিকার সমর্থন এবং সহযোগিতার স্পষ্ট প্রমাণ।
হামাস আরও বলেছে, জাতিসংঘের বিশেষ দূতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমেরিকা বুঝিয়ে দিয়েছে তারা সকল আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, সেগুলোর প্রতিনিধিবৃন্দ এবং গাজা উপত্যকায় দখলদারিত্বের ফলে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয় সম্পর্কিত প্রতিবেদনগুলোকে গুরুত্ব দেয় না। তারা এসবকে অবজ্ঞা করে।
হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় গণহত্যামূলক আগ্রাসনের বিষয়ে পেশাদার ও নৈতিক ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। এমন নিষেধাজ্ঞার সর্বশেষ শিকার হলেন ফ্রানচেসকা আলবানিজ। আমেরিকার এসব পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক ও মানবিক আইনের ভিত্তিকে দুর্বল করছে এবং দখলদার ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী নেতাদেরকে তাদের বর্বরতা ও অপরাধ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করছে।
গত বুধবার এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, তাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে আলবানিজের যদি কোনো সম্পদ থেকে থাকে, তা জব্দ করা হবে। এ ছাড়া তার যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণও সীমিত হয়ে পড়বে।
তার দাবি, আলবানিজ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যুদ্ধ চালাচ্ছেন।
২০২২ সালের মে মাস থেকে আলবানিজ অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ দায়িত্ব পালনকালে তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আইনি মতামত ও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে কয়েকজন জোরালো দাবি জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
আলবানিজের প্রকাশিত প্রতিবেদনের মধ্যে আছে ফিলিস্তিনে আত্মনিয়ন্ত্রণ আইনের লঙ্ঘন; ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার ব্যাপক বঞ্চনা; ফিলিস্তিনি শিশুদের অধিকার লঙ্ঘন ও ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যার অভিযোগসংক্রান্ত দুটি প্রতিবেদন।
গত বছরের মার্চে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে আলবানিজ বলেন, গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড গণহত্যার পর্যায়ে পৌঁছেছে—এমন বিশ্বাস করার যৌক্তিক ভিত্তি আছে।
আলবানিজ সেখানে গণহত্যার প্রমাণ হিসেবে গণহারে হত্যা, বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস এবং এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি, যেগুলো ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে—এসব বিষয় তুলে ধরেন।#
পার্সটুডে/এসএ/১১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।