গাজার দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে ইরানি এক্স ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i150866
পার্স টুডে - X সোশ্যাল নেটওয়ার্কের ইরানি ব্যবহারকারীরা গাজায় ইহুদিবাদী ইসরায়েলের অপরাধযজ্ঞকে ইসলামের নবীর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (আ.)-এর যুগের ইয়াজিদের অপরাধের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে মনে করেন।
(last modified 2025-08-02T13:32:22+00:00 )
আগস্ট ০২, ২০২৫ ১৬:৩৯ Asia/Dhaka
  • গাজার দুর্ভিক্ষ ফুটে উঠেছে মৃত শিশুকে জড়িয়ে ধরা শোকাহত পিতার কান্নার দৃশ্যে
    গাজার দুর্ভিক্ষ ফুটে উঠেছে মৃত শিশুকে জড়িয়ে ধরা শোকাহত পিতার কান্নার দৃশ্যে

পার্স টুডে - X সোশ্যাল নেটওয়ার্কের ইরানি ব্যবহারকারীরা গাজায় ইহুদিবাদী ইসরায়েলের অপরাধযজ্ঞকে ইসলামের নবীর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (আ.)-এর যুগের ইয়াজিদের অপরাধের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে মনে করেন।

"আবা আবদুল্লাহ"  বা 'আবদুল্লাহর পিতা তথা আল্লাহর বান্দাহদের পিতা' এবং "সাইয়্যিদ আশ-শুহাদা" তথা শহীদদের নেতা নামে পরিচিত হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) ছিলেন ইসলামের মহানবী (সা) র ছোট নাতি। তিনি ৪ হিজরি সনে মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন। ইসলামের মহানবীর উত্তরসূরী আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী (আ.) ছিলেন তাঁর পিতা এবং ইসলামের মহানবীর কন্যা হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.আ.) ছিলেন তাঁর মাতা।

৫০ হিজরীতে তাঁর ভাই ইমাম হাসান (আ.)-এর শাহাদাতের পর তিনি ইমামত লাভ করেন এবং প্রায় এগারো বছর ধরে আহলে বাইতের অনুসারীদের নেতৃত্ব দেন। ইমাম হুসাইনের ইমামত ও মুয়াবিয়ার রাজত্বের শেষ বছরগুলো ছিল একই সময়ে। ৬০ হিজরীতে মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর তার ছেলে ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া খিলাফতের মসনদ দখল করে যদিও তা ছিল মুয়াবিয়ার সঙ্গে ইমাম হাসানের স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তির শর্তাবলীর লঙ্ঘন। ইয়াজিদ জনগণের ওপরও জুলুম করতে থাকে।

ইমাম হুসাইন-আ.ও প্রতিরোধ বা গণ-জাগরণী আন্দোলন শুরু করেছিলেন এবং ৬১ হিজরী সনের ১০ই মহররম তারিখে আশুরার ঘটনায় তাঁর কয়েকজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন ও সাথীসহ শহীদ হন। ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সাহাবি ও সাহায্যকারীদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে ইয়াজিদ তাদের তাঁবুতে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, কিন্তু তৃষ্ণা ও ক্ষুধা সত্ত্বেও, তাঁরা প্রতিরোধের আদর্শ ত্যাগ করেননি।

এক্স-নেটওয়ার্কের ইরানি ব্যবহারকারীরা গাজার ওপর সর্বাত্মক অবরোধ এবং ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর মাধ্যমে এই অঞ্চলে খাদ্য, ওষুধ এবং মানবিক সাহায্য প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে কারবালার ঘটনার সাথে খুবই সাদৃশ্যপূর্ণ বলে মনে করেন। তাদের এ সম্পর্কিত কয়েকটি মন্তব্য এখানে তুলে ধরছি:

কারবালা ও গাজা

এক্স-নেটের একজন ইরানি ব্যবহারকারী "ফাতিমা শরীফিয়ান" ইসলামের নবীর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদাতের সময়ের কারবালা এবং গাজার দুর্ভিক্ষের মধ্যে সাদৃশ্য বা মিল থাকার বিষয়ে মন্তব্য করেছেন।

তিনি লিখেছেন: কারবালায় ইয়াজিদ ইমাম হুসাইন (আ.) এবং তাঁর সঙ্গীদেরকে তৃষ্ণার চাপে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করার জন্য পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল, কিন্তু যা ঘটেছিল তা ছিল এমন এক প্রতিরোধ যা ইতিহাসে চিরকালের জন্য লিপিবদ্ধ হয়ে থাকবে। বর্তমানে ইসরায়েল গাজার বিরুদ্ধে আধুনিক স্টাইলে সেই একই পুরনো অস্ত্র ব্যবহার করেছে।

সচিত্র আশুরা

"খাদিম আল-রেজা" নামের একজন ইউজার গাজার এই দিনের খবরকে ৬১ হিজরির কারবালার ঘটনার খবরের সাথে  সাদৃশ্যপূর্ণ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন: "কারবালা এমন কোনও ঘটনা নয় যা আমরা ভার্চুয়াল রিয়েলিটির চশমা সংক্রান্ত প্রযুক্তি দিয়ে কল্পনা করতে চাই; অথবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে আশুরার একটি দৃশ্য আমাদের জন্য ডিজাইন করতে চাই।"কারবালাকে এখনই ইসরায়েল ও গাজার যুদ্ধের খবরের একের পর এক একটি লাইনে পাওয়া যাবে।

সত্যের পুনরাবৃত্তি

"ইউসুফ শামস"  নামের আরেকজন এক্স-নেট ব্যবহারকারী একটি বার্তায় শাহাদাতকে পৃথিবীর শেষ বলে মনে করেন না।তিনি লিখেছেন: আশুরা আমাদের বলেছিল: শাহাদাত মৃত্যু নয় এবং আজ গাজাও এই সত্যের পুনরাবৃত্তি; তাদের শিশু শহীদ সন্তানরা যেকোনো রাজনীতিকের চেয়েও বেশি আল্লাহর নামকে পুনরুজ্জীবিত করে।

এক চির-জীবন্ত শিক্ষা

"লতিফি" নামের আরেক ব্যবহারকারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোকে এক চির-জীবন্ত শিক্ষা বলে অভিহিত করেছেন।তিনি লিখেছেন: "আশুরা কেবল একটি ইতিহাস নয়; এটি এমন একটি শিক্ষা যা চির-জীবন্ত। এতে আছে একা থাকলেও নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শিক্ষা। আজ, ইরান থেকে গাজা পর্যন্ত আমাদের জাতি একই পথে হাঁটছে: প্রেমে ঐক্য, সত্যের পথে প্রতিরোধ।"

গাজা প্রতিরোধের শিখর

"পরি খানুম" নামের একজন ইরানি ইউজার গাজাকে প্রতিরোধের শিখর বলে অভিহিত করেছেন এবং লিখেছেন: কারবালা যদি হয় ত্যাগের শিখর তাহলে গাজা প্রতিরোধের শিখর। উভয় ক্ষেত্রেই মানবতার ও ন্যায়বিচারের আহ্বান শোনা যায়। গাজার ক্ষুধার্ত শিশুরা কারবালার তৃষ্ণার্ত শিশুদের কথা মনে করিয়ে দেয়। আর গাজার জনগণের প্রতিরোধ হুসাইনি বিপ্লবের কথা মনে করিয়ে দেয়। #

পার্স টুডে/এমএএইচ/০২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।