ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে অবাধ চলাচল ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত
(last modified Thu, 08 Feb 2024 12:20:05 GMT )
ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৪ ১৮:২০ Asia/Dhaka
  • ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে অবাধ চলাচল ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে অবাধ চলাচল ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে চালু রয়েছে অবাধ চলাচল ব্যবস্থা। কোনও নথিপত্র ছাড়াই সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশের ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ভিতরে যেতে পারেন দু’দেশের নাগরিকরা। আপাতত সেই ছাড়পত্র মিলবে না। আজ (বৃহস্পতিবার) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এক বার্তায় প্রকাশ- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখার সঙ্কল্প গ্রহণ করেছেন। সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর জনসংখ্যার কাঠামো বজায় রাখতে ফ্রি মুভমেন্ট রেজিম ব্যবস্থা বাতিল করা হবে। প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি বলেছিলেন, ভারত, মিয়ানমারের সাথে পুরো ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে বেড়া দেবে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য টহল ট্র্যাকও তৈরি করবে।         

মণিপুরে কুকি (যাদের মিয়ানমারের চিন রাজ্যের সম্প্রদায়ের সাথে জাতিগত সম্পর্ক রয়েছে) এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের মধ্যে জাতিগত সহিংসতার ঘটনার মধ্যে অবাধ যাতায়াত ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা এলো। সীমান্তে বেড়া দেওয়ার জন্য ইম্ফল উপত্যকার মেইতেই গোষ্ঠীগুলো একনাগাড়ে দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের অভিযোগ- উপজাতীয় জঙ্গিরা প্রায়ই খোলা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। মেইতেই গ্রুপগুলোর আরও অভিযোগ, বেড়মুক্ত আন্তর্জাতিক সীমান্তের সুবিধা নিয়ে ভারতে মাদক পাচার করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ভারতের চারটি রাজ্য- অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর এবং মিজোরামের সঙ্গে মিয়ানমারের ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। 

এদিকে, মিয়ানমারে চলমান সহিংসতার মধ্যে সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রাখাইনে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ল্যান্ডলাইনসহ সম্পূর্ণ টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত ধ্বংস হয়ে পড়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাবের কারণে চাহিদা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় নাগরিকদের রাখাইনে ভ্রমণ করতে নিষেধ করা হচ্ছে।’ একইসঙ্গে আরও বলা হয়েছে, ‘যে সব ভারতীয় নাগরিক ইতোমধ্যেই রাখাইনে রয়েছেন, তাদের অবিলম্বে ওই রাজ্য ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠার আগেই দেশের নাগরিকদের নিরাপদে ভারতে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। 

অন্যদিকে, গতকাল (বুধবার) দিল্লিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের মধ্যে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উভয়ের মধ্যে বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ভারত-বাংলাদেশ এক সঙ্গে কাজ করবে। এ বিষয়ে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পরে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত কর্মপদ্ধতি ঠিক করা হবে।’ প্রসঙ্গত, গত (রোববার) ঢাকায় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল মিয়ানমার পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সেদেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।  #

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমআরএইচ/৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।      

ট্যাগ