'সিএএ' ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, মার্কিন উদ্বেগের জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
(last modified Fri, 15 Mar 2024 12:36:33 GMT )
মার্চ ১৫, ২০২৪ ১৮:৩৬ Asia/Dhaka
  • 'সিএএ' ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, মার্কিন উদ্বেগের জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বহুলালোচিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ/ক্যা) নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যের জবাব দিয়েছে ভারত।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘সিএএ’ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ‘সিএএ’ বাস্তবায়ন নিয়ে আমেরিকার বক্তব্য ভুল এবং অন্যায্য। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই প্রতিক্রিয়া মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের পরিপ্রেক্ষিতে এল, যেখানে বলা হয়েছিল যে তারা ১১ মার্চ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন। 

গতকাল (বৃহস্পতিবার)মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ‘সিএএ’ নিয়ে ওয়াশিংটনের উদ্বেগের কথা জানান। গোটা বিষয়টি তারা পর্যবেক্ষণ করছেন বলেও মন্তব্য করেন মিলার। মিলার বলেন, ‘গত ১১ মার্চ ভারত সরকার ‘সিএএ’ নিয়ে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, আমরা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই আইন কীভাবে প্রণয়ন করা হচ্ছে, আমরা সেদিকে নজর রেখেছি। ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং আইনে সব সম্প্রদায়ের সমান অধিকার মৌলিক গণতান্ত্রিক নীতি।’   

মার্কিন বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায়, আজ (শুক্রবার) ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ২০১৯ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এটির প্রয়োগের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতি ভুল, অজ্ঞাত এবং অন্যায্য। রণধীর জয়সওয়াল বলেন, এই আইনটি আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের নিরাপদ আশ্রয় প্রদান করে যারা ২০১৪ সালের ডিসেম্বর বা তার আগে ভারতে এসেছে। ‘সিএএ’-এর মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে, কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না। 

তিনি বলেন, ‘সিএএ’ রাষ্ট্রহীনতার সমস্যা সমাধান করে, মানবিক মর্যাদা প্রদান করে এবং মানবাধিকারকে সমর্থন করে। ভারতের সংবিধান তার সকল নাগরিককে ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়। সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনো উদ্বেগ বা আচরণের কোনো ভিত্তি নেই।  

প্রসঙ্গত, ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল আইনে পরিণত হয়েছিল ২০১৯ সালে।  আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের মুখে গত সোমবার ‘আচমকা’ ‘সিএএ’ আইন চালু করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে অমুসলিম যে সব শরণার্থী ধর্মীয় উৎপীড়ন থেকে বাঁচতে এ দেশে এসেছেন, তাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।  

এটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসেই বিল থেকে আইনে পরিণত হলেও গত সোমবার সন্ধেয় আচমকা সেটির 'রুল' নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর তার পর থেকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধী শিবিরের নেতাদের অভিযোগ, এই বিজ্ঞপ্তিতে যে নিয়মবিধি রয়েছে, তা 'অসাংবিধানিক', 'বৈষম্যমূলক' এবং  'সংবিধানস্বীকৃত ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিকত্ব নীতির পরিপন্থি।'  তাদের আরও বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচনের মুখে এটি কার্যকর করার পিছনে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক অঙ্ক রয়েছে। না হলে সাড়ে চার বছর আগে পাশ হয়ে যাওয়া আইনের বিধির বিজ্ঞপ্তি এখন জারি করা হল কেন?  তৃণমূলনেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কারও নাগরিকত্ব বাতিল হলে জোরালো প্রতিবাদ হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বিরোধীদের সমালোচনা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমআরএইচ/ ১৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন