দিল্লিতে মন্দির ভাঙার প্রতিবাদে দলিতদের বিক্ষোভ ও সহিংসতায় গ্রেফতার ৯১
(last modified Thu, 22 Aug 2019 10:21:53 GMT )
আগস্ট ২২, ২০১৯ ১৬:২১ Asia/Dhaka
  • ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ
    ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ

ভারতের রাজধানী দিল্লির তুঘলকাবাদে ৫০০ বছরের পুরোনো সন্ত রবিদাস মন্দির ভাঙার প্রতিবাদ ও মন্দিরটি পুনর্নির্মাণের দাবিতে দলিত সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ ও সহিংসতার অভিযোগে পুলিশ ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদসহ ৯১ জনকে গ্রেফতার করেছে।

গতকাল (বুধবার) রাতের ওই ঘটনার পরে আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে গোটা এলাকা শিবিরে পরিণত হয়েছে। দিল্লি পুলিশের পাশপাশি আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দলিত সমাজের পক্ষ থেকে দিল্লির রামলীলা ময়দানে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। পরে তুঘলকাবাদ ও আশেপাশের এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল সহিংস আকার ধারণ করে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত ১০ অগস্ট তুঘলকাবাদের গুরু রবিদাস মন্দির ভেঙে দেয় দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (ডিডিএ)। এরপরেই রবিদাস সম্প্রদায়ের সদস্যদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পাঞ্জাব, হরিয়ানা। উত্তর প্রদেশসহ রাজধানী দিল্লিতেও ওই ঘটনার আঁচ পড়ে।

দলিত সংগঠন ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা ছড়ানো, সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ক্ষতি করা, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ সদস্যদের উপরে আক্রমণের অভিযোগ করা হয়েছে। ওই ঘটনায় ১৫ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা কমপক্ষে ১০০ যানবাহন ভাঙচুর ও ২টি মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা যানবাহনের মধ্যে বেশকিছু পুলিশের গাড়ি ও সাধারণ মানুষের গাড়ি রয়েছে। পুলিশ এসময় মারমুখী জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে লাঠিচার্জ করার পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া দিল্লি সরকারের মন্ত্রী রাজেন্দ্র পাল গৌতম এনডি টিভিকে বলেন, ‘যেদিন থেকে কেন্দ্রীয় (বিজেপি) সরকার ক্ষমতায় এসেছে তখন থেকে আমরা দেখছি কোথাও রবিদাস মন্দির ভাঙা হচ্ছে, কোথাও বাল্মিকি মন্দির ভাঙা হচ্ছে, কোথাও বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূর্তি ভাঙা হচ্ছে। যে প্রতীকে আমাদের আস্থা, এরসঙ্গে ৪০ কোটি মানুষের বিশ্বাস জড়িত রয়েছে। কিন্তু বেছে বেছে এসব মন্দিরকে ভাঙা হচ্ছে!’  

তার প্রশ্ন, জরিপ করে দেখা হোক বিভিন্ন রাস্তার ধারে, ফুটপাথে, পার্কে কত মন্দির তৈরি হয়েছে। কিন্তু বেছে বেছে আমাদের মন্দিরের উপরে আক্রমণ কেন?’

দিল্লির তুঘলকাবাদের সংরক্ষিত অরণ্য এলাকায় গড়ে উঠেছিল প্রাচীন এই মন্দিরটি। কিন্তু এতে আইন লঙ্ঘন করা হয়েছিল বলে জানতে পারে শীর্ষ আদালত। এরপরেই মন্দিরের ওই জমি খালি করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। সেই নির্দেশ পালন না করায় সুপ্রিম কোর্ট মন্দিরটি ভেঙে ফেলতে বলে। এরপর থেকে বিভিন্ন রাজ্যের রবিদাস সমাজের মানুষজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

মন্দির ভাঙাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি পাঞ্জাবে বনধের ডাক দেয় গুরু রবিদাস জয়ন্তী সমারোহ সমিতি। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। তার বক্তব্য, গোটা বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি লিখেছেন, পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সরকারের উচিত মন্দিরকে তার পুরোনো জায়গায় ফিরিয়ে দেয়া।

ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ বলেন, ‘মন্দির  ধ্বংস করে আমাদের সম্প্রদায়কে অপমান করা হয়েছে।’ অপমানের যোগ্য জবাব দিতে যতদূর যেতে হয়, ততদূর পর্যন্ত যেতে প্রস্তুত বলেও চন্দ্রশেখর আজাদ মন্তব্য করেন।#

পার্সটুডে/ এমএএইচ/এআর/২২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ