কথাবার্তা: লাদাখে যুদ্ধের প্রস্তুতি, শুরু হচ্ছে ভারত-চীনের নতুন লড়াই!
(last modified Fri, 04 Sep 2020 11:36:41 GMT )
সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২০ ১৭:৩৬ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি মুজাহিদুল ইসলাম। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম :

  • সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান-শাবাশ নির্বাচন কমিশন–প্রথম আলো
  • হাইপারসনিক বিমান তৈরির প্রতিযোগিতায় পরাশক্তিগুলো-দৈনিক যুগান্তর 
  • ইউএনও'র ওপর হামলা-যুবলীগ নেতাসহ আটক ৪, জ্ঞান ফিরেছে ইউনও ওয়াহিদার-দৈনিক মানবজমিন
  • ২০৩০ সাল নাগাদ দেশে বেকার হবে ৫৭ লাখ মানুষ-দৈনিক ইত্তেফাক
  • মালেশিয়ায় বাংলাদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা-কালের কণ্ঠ
  • বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৮ লাখ ৭৩ হাজার ছাড়াল-সমকাল
  • অপরাধী যেই হোক তাকে ছাড় দেওয়া হবে না-ওবায়দুল কাদের-বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:

  • সেফটি জোন, দিল্লিতে লাইনের দু’ধার থেকে ৪৮ হাজার বসতি সরানোর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের -দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
  • প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় কিছুটা উত্তেজনা রয়েছে , বলছেন সেনা প্রধান-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
  • প্রধানমন্ত্রীকে খুনের নির্দেশ! NIA’এর হাতে হুমকি চিঠি -দৈনিক আজকাল

পাঠক/শ্রোতা! এবারে চলুন, বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

শুরুতেই বিশ্বজুড়ে  করোনার সর্বশেষ খবর। তারপর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবর। 

করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিস্থিতি

একনজরে বিশ্ব করোনার খবর: ওয়ার্ল্ডওমিটারের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী বিশ্বব্যাপী মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ৬৪ লাখ ৮১ হাজার। আর মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৮ লাখ ৭৩ ছাড়িয়েছে। 

ভারতে ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত প্রায় ৮৪ হাজার। মোট আক্রান্ত ৩৯ লাখ ছাড়ালো। বাংলাদেশের করোনার সর্বশেষ খবরে বিভিন্ন দৈনিকে লেখা হয়েছে, ২৪ ঘন্টায় ২৯জন মারা গেছেন। শনাক্ত ১৯২৯ জন।প্রথম আলোর এ সম্পর্কিত একটি খবরের শিরোনাম রোগী শনাক্তের হার কমছে, তবু শীর্ষ দশে বাংলাদেশ।

দৈনিক ইত্তেফাকের একটি খবরের শিরোনাম এরকম- চলছে ভ্যাক্সিন তৈরির লড়াই। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে,

চলছে ভ্যাক্সিন তৈরির লড়াই

প্রতিষেধক তৈরি নিয়ে বরাবরেই সতর্ক করে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলছে ‘প্রতিষেধক নিয়ে রাজনীতি করলে, তার দাম গুনতে হবে গোটা দুনিয়াকে’। তবে এসব তোয়াক্কা না করেই রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিলেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের রিপোর্ট হাতে আসার আগেই এ মাসেই বাজারে আসছে তাদের বহু বিতর্কিত প্রতিষেধক ‘স্পুটনিক ভি’।

এদিকে ভ্যাকসিন তৈরি নিয়ে চুপ নেই আমেরিকাও। পাল্টা হুঙ্কার ছেড়েই যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগেই ঘোষণা করেছিলেন, রুশ ও চিনা প্রতিষেধক ছুঁয়েও দেখবে না তাঁর দেশ। কারণ হিসেবে ‘অসম্পূর্ণ ট্রায়াল’ উল্লেখ করেছিলেন। যদিও দু’দিন আগে মার্কিন আধিকারিকদের কথাতে ইঙ্গিত মেলে, রুশ ভ্যাকসিন গ্রহণ না-করলেও, তাদের পথ অনুসরণে নেই কোন বাধা।

ইউএনওর ওপর হামলার ফলোআপ খবরে প্রায় সব দৈনিকে লেখা হয়েছে, ইউএনও'র হামলার ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের একটি খবরে লেখা হয়েছে, গ্রেফতার যুবলীগের দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

এদিকে, ঐ ঘটনায় অপরাধী যেই হোক, আইনের আওতায় আনা হবে বলে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি ঐ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন। ওবায়দুল বলেন, ইউএনওর সুচিকিৎসায় সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। অপরাধী যেই হোক, আইনের আওতায় আনা হবে। ওবায়দুল কাদের করোনা প্রসঙ্গে বলেন, করোনার সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে সচেতনতার দিক থেকে গা–ছাড়াভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

অস্ত্রোপচারের পর দুর্বৃত্তের হামলার শিকার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি কথাও বলেছেন। তাঁর মাথায় কমপক্ষে ৯টি আঘাতের ক্ষত দেখা গেছে।

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া চিকিৎসক জাহেদ হোসেন প্রথম আলোকে এই তথ্য জানান।

দৈনিক প্রথম আলোতে -সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান -শাবাশ নির্বাচন কমিশন-অধ্যাপক আসিফ নজরুলের লেখা এ শিরোনামের নিবন্ধে বলা হয়েছে,

নির্বাচন কমিশন একের পর এক চমক উপহার দিয়ে চলেছে মানুষকে। এর সর্বশেষ কাণ্ড নিজেকে নিজে ক্ষমতাহীন করার বিভিন্ন প্রস্তাব। নানা মহলের সমালোচনার মুখে এ প্রস্তাবগুলো থেকে কমিশন এখন সরে এসেছে বলা হচ্ছে। তবে বিষয়টি এখনো খুব স্পষ্ট নয়। কমিশনের সচিব দাবি করেছেন তাঁরা ‘ভুল করে’ বা ‘বোঝাপড়ার মাধ্যমে’ প্রস্তাবগুলো করেছিলেন। যেভাবেই করা হোক না কেন, এটি বিস্ময়কর, অত বড় একটি সাংবিধানিক কমিশনের জন্য।

সাবেক আমলা কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন এই কমিশন অবশ্য বিস্ময়কর কর্মকাণ্ডের জন্যই খ্যাতিমান। তাদের অতুলনীয় কীর্তির স্বাক্ষর হয়ে আছে ২০১৮ সালের ‘নৈশ’ নির্বাচন। এর আগে ২০১৪ সালে এক অদ্ভুত নির্বাচন আয়োজন করে বসেছিল রকিবউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন তখনকার নির্বাচন কমিশন। সেই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে একাধিক প্রার্থী না থাকায় ভোট গ্রহণ ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে যায়, নির্বাচনের দিনের আগেই সরকারি দল নির্বাচনে জিতেছে তা নিশ্চিত হয়ে যায়। নজিরবিহীন এ কাণ্ড করার জন্য শতাধিক আসনে নির্বাচন কমিশন নিজেই একজন বাদে অন্য প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা করে দেয়। আমার মতো দুর্মুখরা নির্বাচনটির নাম দেয় প্রার্থীবিহীন নির্বাচন।

বিস্ময়ের কশাঘাতে আমরা যারা স্তব্ধ হয়ে বসেছিলাম, তাদের জন্য আরও বিস্ময় বাকি ছিল। ২০১৮ সালে নূরুল হুদার নির্বাচন কমিশন এগিয়ে যায় আরেক ধাপ। এবার আর প্রার্থী নয়, তিন শ আসনে নির্বাচন আয়োজিত হয় প্রায় ভোটারবিহীনভাবে। বিরোধী দলগুলোর প্রার্থিতা বাতিল, প্রার্থী-কর্মী-এজেন্ট গ্রেপ্তার, (কখনো গুলিবিদ্ধ) বা এলাকাছাড়া হওয়ার পর এ নির্বাচনে ভোটারদেরও কষ্ট করতে দেয়নি কমিশন। নির্বাচনের আগের রাতে ভোট বাক্স ভরে ফেলার ব্যবস্থা করা হয় এবং প্রকৃত ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় বহু কেন্দ্রে। ভোটারবিহীন নির্বাচনে সৃষ্টি হয় ভোটের নতুন নতুন রেকর্ড। দুই শতাধিক কেন্দ্রে পুরোপুরি শতভাগ ভোট পড়ে (কিছু কেন্দ্রে তারও বেশি), হাজারের বেশি কেন্দ্রে প্রধান বিরোধী জোটের প্রার্থীরা পান শূন্য ভোট (কিছু কেন্দ্রে বিরোধী দলের সব প্রার্থী মিলে পান শূন্য ভোট) এবং বহু কেন্দ্রে সরকারি দলের প্রার্থীরা পান প্রায় শতভাগ ভোট! সরকারি দল ও তার মিত্ররা বিজয়ী হন ৯৬ শতাংশ আসনে!

এমন নির্বাচন আয়োজন করে বুক ফুলিয়ে চলতে সাহস নয়, প্রয়োজন হয় দুঃসাহসের। সেই দুঃসাহস কমিশন দেখায় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে। এত বড় দুঃসাহসী কাজ করেও কমিশন কোনো প্রশংসা পায়নি। এতে রাগ করেই কিনা জানি না কমিশন এবার উদ্যোগ নিয়েছিল আরও চমকপ্রদ একটি নির্বাচনের। তাদের উদ্যোগ সফল হলে পরবর্তী নির্বাচনটি হতো নির্বাচন কমিশনবিহীন নির্বাচন। এ জন্য তারা নিজেরাই কমিশনের বহু ক্ষমতাকে বাতিল করার প্রস্তাব করেছিল গণপ্রতিনিধিত্ব আইন সংশোধনীর একটি খসড়ায়।

নির্বাচন সফল করার জন্য অন্য অনেক কিছুর মতো প্রয়োজন নির্বাচনী এজেন্ট আর পর্যবেক্ষক নিয়োগ আর প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তার ক্ষমতা। আরও প্রয়োজন আইন লঙ্ঘনকারী প্রার্থীর প্রার্থিতা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বাতিলের ক্ষমতা। এসব বিষয়ে ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব গণপ্রতিনিধিত্ব আইনে আর কমিশনের হাতে না রেখে দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল স্বয়ং কমিশন!

২.কমিশনের উদ্যোগে ‘মুগ্ধ’ নাগরিকদের নিয়ে একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করেছিল সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) নামের সংগঠনটি। সেখানে আর ভুল করেননি অনেকে। নিজের সাংবিধানিক ও আইনি ক্ষমতা নিজে কমানোর উদার প্রস্তাবে মুগ্ধ হয়ে কেউ কমিশনকে প্রশংসাবাণী দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। কেউ প্রশংসা করেছেন করোনাকালে লক্ষাধিক ভোটার ‘হাজির’ করে চারটি আসনে উপনির্বাচন করানোর কীর্তিকে। কেউ প্রস্তাব করেছেন রকিবউদ্দীন আর নূরুল হুদার মতো দুজন সিইসি খুঁজে বের করতে পেরেছে যে সার্চ কমিটি, তাকে ধন্যবাদ জানানোর!

কমিশন এখন বলছে, তারা নাকি ভুল করে ক্ষমতা কমানোর প্রস্তাবগুলো করেছিল। তবে ওয়েবিনারে দেখলাম, কিছু গণ্যমান্য আলোচক সন্দেহ করছেন একবার যখন তারা এ চেষ্টা করেছে, ভবিষ্যতে আবারও করতে পারে তা। আমার নিজের অবশ্য মনে হলো করলেই ভালো একদিক দিয়ে। প্রার্থী, এজেন্ট, পর্যবেক্ষক, ভোটার কারও নিরাপত্তা দিতে আগ্রহী নয় কমিশন, এটি দেখা গেছে আগের নির্বাচনে। যথেষ্ট ক্ষমতাবান হয়েও তারা প্রশাসন আর পুলিশকে তাদের অন্যায় কাজে বাধা দেয়নি। সরকারি দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগের পরও তাদের প্রার্থিতা বাতিল বা মৃদু কোনো শাস্তিরও ব্যবস্থা নেয়নি। কাজেই অযথা ক্ষমতার বাতাবরণ রেখে প্রয়োজন কী?

আমি বরং প্রস্তাব করছি সামনের নির্বাচনে কারা প্রার্থী হতে পারবেন, সেটি নির্ধারণের ক্ষমতাও কমিশন দিয়ে দিক সরকারকে। জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের কাজ নাকি কমিশন সরকারকে দিয়ে দেওয়ার চিন্তা করছে। এ পরিচয়পত্র প্রদানের ক্ষমতা হাতে থাকলে সরকার ভোটার তালিকা করতে পারবে ইচ্ছেমতো। এর সঙ্গে প্রার্থী ঠিক করার ক্ষমতাও সরকারকে দিয়ে দিলে সব ঝামেলা চুকে যায়। কমিশনকে তখন আর গালমন্দ করতে পারবে না কেউ। যে ক্ষমতা আইনেই থাকবে না, সে ক্ষমতা প্রয়োগে অনীহা বা ব্যর্থতার অভিযোগ আর উঠবে না তাদের বিরুদ্ধে। নির্বাচন গোল্লায় যাক, কমিশনের পবিত্রতা তো রক্ষা হবে তাতে। দুধে-ভাতে কমিশনাররা থাকবেন বিনা অপরাধবোধে!

এমন মহৎ চিন্তার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত না?

৩. ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার কমিশনের ইচ্ছা বা প্রচেষ্টা অচিন্তনীয়ও বটে। ক্ষমতার জন্য কিনা করে মানুষ। রাজরাজড়ার যুগে এ ক্ষমতার জন্য নিজের পরিবারকে নিকেশ করে দেওয়ার বহু উদাহরণ আছে। মোগল সম্রাট আলমগীর অসাধারণ সমরনায়ক ও শাসক ছিলেন, তাঁর চার যুগের শাসনকাল প্রায় ভারত উপমহাদেশজুড়ে বিস্তৃত ছিল। কিন্তু এর আগে তিনি মসনদে অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য নিজের তিন ভাইয়ের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ান, অসুস্থ পিতা সম্রাট শাহজাহানকে আমৃত্যু বন্দী করে রাখেন আগ্রার দুর্গে।

একচ্ছত্র রাজতন্ত্রকালে ক্ষমতার জন্য এমন নিষ্ঠুরতা অবশ্য বিরল ছিল না পৃথিবীর কোথাও।

লিবারেটেরিয়ানদের ইতিহাস রচনায় অন্যতম থিমই হচ্ছে ক্ষমতার অদম্য লোভ এবং এর দূষিত প্রভাব। পরের যুগে দু-দুটো বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিরাষ্ট্র আর গণতন্ত্রের ধারণার প্রসার ঘটেছে। গণতন্ত্রকালে ক্ষমতায় যাওয়া বা থাকার জন্যও নানা ছলাকলা করা হয়েছে পৃথিবীর বেশির ভাগ রাষ্ট্রে। ক্ষমতায় থাকা সরকারের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে রেষারেষি হয়েছে ক্ষমতার ভাগ নিয়ে। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি, সংসদের সার্বভৌমত্ব, সরকারপ্রধানের দায়মুক্তি, সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচার থিওরি, জুডিশিয়াল রিভিউ, ডকট্রিন অব পলিটিক্যাল কোয়েশ্চেন, ফ্লোর ক্রসিং নামে নানা তত্ত্ব ও নীতির সৃষ্টি হয়েছে। এসবই নিজের ক্ষমতা সংহত করার জন্য বা অন্যের ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।

নিজের ক্ষমতা বাড়ানো বা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন দেশের নির্বাচন কমিশনও তৎপর হয়েছে। প্রয়োজনে তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। কিন্তু কোনো দিন কোনো কমিশন (বা সরকারি প্রতিষ্ঠান) নিজের ক্ষমতা কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে, এটি কোথাও হয়নি সম্ভবত।

এ উদারতার জন্য কেন পারলাম না আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করতে? হয়তো এ কারণেই কমিশন তার প্রস্তাব থেকে সরে আসার কথা বলছে এখন। হয়তো প্রশংসা বা প্রণোদনা অন্তত সরকার থেকে না পেলে তারা আর এগোবে না এমন উদার পথে! সত্যি অনন্য এই কমিশন!

শুরু হচ্ছে ভারত-চীনের নতুন লড়াই!-দৈনিক ইত্তেফাক

ভারত চীনের দীর্ঘ দিনের উত্তেজনার মধ্যে এবার নতুন করে দুদেশের মধ্যে লড়াই শুরুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর তা হবে থাইল্যান্ডের ক্রা ইসতমাস খাল নিয়ে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এমনটাই উঠে এসেছে।

খবরে বলা হয়, মালয় উপদ্বীপের সবচেয়ে সরু অংশ ওই থাই খালটি নিয়ে কথা হচ্ছিল লম্বা সময় ধরেই। এটি ভারত মহাসাগরে যেতে চীনের জন্য দ্বিতীয় সাগর রুট খুলে দিতে পারে। আর এপথে চীনের নৌবাহিনী দ্রুতগতিতে দক্ষিণ চীন সাগরে নবনির্মিত ঘাঁটিগুলো থেকে ভারত মহাসাগরে যেতে পারবে। যার ফলে দেশটির নৌ সেনাদের মালয়েশিয়ার দক্ষিণ অংশ হয়ে আরও ৭০০ মাইল ঘুরে আসতে হবে না। এ কারণে থাইল্যান্ডের এ খালটিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছে চীন।

জানা যায়, চীনের মধ্যে সীমান্ত বিরোধের ফলে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ভারতীয় ২০ জন সেনা। সাগর পথে ভারতকে ঘিরে ফেলতে বেশ কয়েকটি জোট গড়েছে চীন। চীনের নতুন ওই ঘাটির নাম মুক্তার মালা। চীন থাই খালটি খননে থাইল্যান্ডে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করলে দেশটির জন্য ওই পথ উন্মোচিত হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘ দিনের বিতর্কিত খালটি নিয়ে থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। একটি পার্লামেন্টারি কমিটি চলতি মাসে প্রস্তাবটির ব্যাপারে সুপারিশ করতে যাচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নামমাত্র মিত্রতা থাকলেও থাইল্যান্ড এখন প্রবলভাবে ঝুঁকছে চীনের দিকে। বিশেষ করে ২০১৪ সালে থাই সরকারের দায়িত্ব গ্রহণকারী সামরিক বাহিনীকে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাষ্ট্রের অস্বীকৃতির পর তারা বেইজিংমুখী হয়ে পড়েছে।

এদিকে, ভারত মহাসাগরে প্রাধান্য বিস্তারের ক্ষেত্রে চীনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হল মালাক্কা প্রণালী। সিঙ্গাপুর ও সুমাত্রাকে বিভক্তকারী এই সংকীর্ণ সাগর লেনটি দিয়েই চীনের সমুদ্র বাণিজ্য পরিচালিত হয়, দেশটি দক্ষিণ এশিয়ার দিকে তার নৌবাহিনীকেও পাঠায় এই পথ দিয়ে।

সংবাদ মাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের উদ্দেশ্য সফল হলে থাই খাল হয়ে ভারতকে ঘিরে ফেলাতে পরিষ্কার পরিকল্পনা নিতে পারছে বেইজিং।

এদিকে, সাগর পথে চীনের মোকাবেলা করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতও। হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ভারত আন্দামান ও নিকোবর আইল্যান্ডসে বিমান ও নৌ ঘাঁটিগুলোকে ব্যাপকভাবে আধুনিকায়নের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে মোদি সরকার। আর নয়াদিল্লির এসবের টার্গেট হবে কেবল চীন।

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় কিছুটা উত্তেজনা রয়েছে, বলছেন সেনা প্রধান-আনন্দবাজার পত্রিকা

লাদাখে যুদ্ধের প্রস্তুতি দেখতে গিয়েছেন সেনাপ্রধান মুকুন্দ নরবণে

যুদ্ধের’ প্রস্তুতি সরেজমিনে দেখতে এসে শান্তির পক্ষে সওয়াল করলেন জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নরবণে। শুক্রবার দু’দিনের লাদাখ সফরের দ্বিতীয় দিনে তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) উত্তেজনা রয়েছে। সতর্কতামূলক সেনা মোতায়েন করাও হয়েছে।’’ তবে সেই সঙ্গেই আত্মবিশ্বাসী ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত, আলোচনার মাধ্যমেই এলএসি-পরিস্থিতির সমাধান সম্ভব।’’

আড়াই মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই ফের লাদাখে পৌঁছে আজ জেনারেল নরবণে (এলএসি) সম্ভাব্য চিনা হামলা ঠেকাতে ভারতীয় সেনার প্রস্তুতির খতিয়ে দেখেছেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘এলএসি-তে মোতায়েন সেনা অফিসার এবং জেসিও (জুনিয়র কমিশনড অফিসার)-দের সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। ভারতীয় জওয়ানদের মনোবল তুঙ্গে। ভারতীয় সেনা যে কোনও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।’’ বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে একই ভাবে চিনা-চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দাবি করেছিলেন, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল বিপিন রাওয়ত। দৈনিকটির অন্য একটি খবরে লেখা হয়েছে, নজরে লাদাখ, আজ মস্কোয় মুখোমুখি রাজনাথ ও চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

লাদাখের ১০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা চীনের দখলে-দৈনিক হিন্দুর বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের এখবরে লেখা হয়েছে, 

বিতর্কিত লাদাখ সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) আশপাশে প্রায় ১ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখল করে নিয়েছে চীন। ভারতীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা কেন্দ্রীয় সরকারকে এই তথ্য জানিয়েছে। 

ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কেন্দ্রের কাছে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন গোয়েন্দারা। সেখানে বলা হয়েছে, লাদাখ সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর লাগাতার আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে চীন। এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করে ফেলেছে কমিউনিস্ট দেশটি। গত এপ্রিল মাস থেকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সৈন্য ও হাতিয়ার মজুত করা শুরু করেছে লালফৌজ। বিশেষ করে, দেপসাং প্লেন অঞ্চলে পেট্রোলিং পয়েন্ট ১০ থেকে ১৩ পর্যন্ত প্রায় ৯০০ বর্গ কিলোমিটার দখল করেছে চীন।গালওয়ান উপত্যকায় ১২ ও হট স্প্রিং এলাকায় ১২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখল করেছে চীনা বাহিনী। শুধু তাই নয়, প্যাংগং লেক বরাবর ফিঙ্গার ১ থেকে ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত বরাবর টহল দিয়ে এসেছে ভারতীয় ফৌজ। 

তবে চীনের দাবি, ফিঙ্গার ৮ থেকে ফিঙ্গার ৪ পর্যন্ত তাদের এলাকা। ফলে সংঘাত বাড়ছে দুই বাহিনীর মধ্যে। গত মে মাসে ওই এলাকায় আচমকাই ভারতীয় জওয়ানদের ওপর লাঠি ও পাথর নিয়ে হামলা চালিয়েছিল চীনা বাহিনী। 

ওই ঘটনার পর থেকেই প্রচুর সেনা মোতায়েন করেছে লালফৌজ। শুধু তাই নয়, ফিঙ্গার ৪ থেকে আর ভারতীয় জওয়ানদের টহল দিতে দিচ্ছে না চীনারা। বর্তমানে ওই ফিঙ্গার ৪-ই কার্যত সীমান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এহেন পরিস্থিতিতে গত ২৯ আগস্ট ও ৩০ আগস্ট রাতে প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে ভারতের জমিতে ঢোকার চেষ্টা করে লালফৌজ। ফলে ওই এলাকার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এদিকে, সংঘাত থামাতে ওই ঘটনার পর চুশুল বর্ডার মিটিং পয়েন্টে ব্রিগেড কম্যান্ডার স্তরে বৈঠক হয় দুই দেশের।

প্রধানমন্ত্রীকে খুনের নির্দেশ! NIA’এর হাতে হুমকি চিঠি-দৈনিক আজকাল/ সংবাদ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হত্যার হুমকি

মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই প্রধানমন্ত্রীর টুইটার হ্যান্ডেল হ্যাক হয়েছে। এরপরই প্রধানমন্ত্রীকে খুনের হুমকি! ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (NIA)-এর হাতে এই সংক্রান্ত একটি ইমেল এসেছে। এরপরই নড়েচড়ে বসেছে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। বাড়ানো হয়েছে নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) নিরাপত্তাও।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, “একটি Email আইডি থেকে NIA কিছু ইমেল পেয়েছে। যেখানে বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং সরকারি এজেন্সিকে হুমকি দেওয়া হয়েছে।” কী লেখা হয়েছে ওই ইমেলে? ৮ আগস্ট রাতে পাঠানো ওই ইমেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

সেফটি জোন, দিল্লিতে লাইনের দু’ধার থেকে ৪৮ হাজার বসতি সরানোর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের জন্য রাজধানী দিল্লিতে (Delhi) রেললাইনের দু’ধার থেকে বসতি উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) হলফনামা দিয়ে এমনই অভিযোগ করেছিল রেল (Indian Railways)। সেই প্রেক্ষিতে সোমবার শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছে যে, রেললাইনের দু’ধার থেকে ৪৮ হাজার বসতি উচ্ছেদ করতে হবে।

দফায় দফায় তিন মাসের মধ্যে খালি করে দিতে হবে রেলের ‘সেফটি জোন’। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বা অন্য কোনও ধরনের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না। এর আগে নিম্ন আদালতে বসতি উচ্ছেদের ওপরে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, সেই রায় কার্যকরী হবে না। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছে, “সেফটি জোন থেকে জবরদখলকারীদের সরিয়ে দিতে হবে তিন মাসের মধ্যে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বা অন্য কোনও হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না। কোনও কোর্ট যদি উচ্ছেদের ওপরে স্থগিতাদেশ দিয়ে থাকে তাও গ্রাহ্য করা হবে না।”#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/‌৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।


 

ট্যাগ