যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি
ইরানি জাতির সঙ্গে বলদর্পী ভাষায় কথা বলার অধিকার কারো নেই: প্রেসিডেন্ট
ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসি যুক্তরাষ্ট্রকে হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, তার দেশ নিজের অধিকার ও যৌক্তিক অবস্থান থেকে পিছু হটবে না এবং ইরানি জাতির সঙ্গে বলদর্পী ভাষায় কথা বলার অধিকার কারো নেই।
তিনি গতকাল পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে মার্কিন কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক দাবির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এ কথা বলেছেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, মার্কিনীরা বলছে ইরানকে অবশ্যই পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসতে হবে অথচ বাস্তবতা হচ্ছে ইরান কখনোই পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যায়নি বরং যুক্তরাষ্ট্রই পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘন করেছে এবং এ থেকে বেরিয়ে গেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের একই সময়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট এসব কথা বলেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন গতকাল ইসরাইল সফরে এসেছেন। ইসরাইল ও ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা শেষে তিনি সৌদি আরব যাবেন। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট বাইডেন সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও ওমানকে নিয়ে গঠিত পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা পিজিসিসির শীর্ষ বৈঠকে অংশ নিবেন। পিজিসিসির বৈঠক শেষে ইরাক, জর্দান ও মিশরের শীর্ষ নেতাদের সাথেও তার সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কয়েকটি আরব দেশের সাথে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করা, মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ইরান আতঙ্ক সৃষ্টি করা, অতিরিক্ত তেল রপ্তানি করতে সৌদি আরবকে উৎসাহিত করা মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যপ্রাচ্য সফরের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। প্রেসিডেন্ট বাইডেন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এক নিবন্ধে লিখেছেন, যতদিন পর্যন্ত ইরান পরমাণু সমঝোতায় ফিরে না আসবে ততদিন পর্যন্ত দেশটির ওপর অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া, তেলআবিব পৌঁছে তিনি ইসরাইলের একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছেন, তার ভাষায় প্রয়োজনে ইরানে সামরিক অভিযান চালাবে মার্কিন সেনাবাহিনী, তবু দেশটিকে পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে দেবে না ওয়াশিংটন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা পরমাণু সমঝোতা ব্যর্থতার জন্য এমন সময় ইরানকে দায়ী করার চেষ্টা করছেন যখন ইরান আদৌ পরমাণু সমঝোতা থেকে বের হয়ে যায়নি। বরং আমেরিকাই ২০১৮ সালের ৮মে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেছে এবং বর্তমান বাইডেন প্রশাসনও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি অনুসরণ করে ইরান বিরোধী নীতি অব্যাহত রেখেছে।
যাইহোক, মার্কিন কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের একই সময়ে ইরানভীতি ছড়ানোরও চেষ্টা করছেন যাতে ইসরাইলের প্রতি সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি আর্থ-রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে অচলাবস্থা থেকে ইসরাইলকে বের করে আনা যায়। ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা যতই আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করুক না কেন তাতে ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে না তারা।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।