আলবেনিয়ায় ইরানি দূতাবাসে হামলা: তেহরানের প্রতিক্রিয়া
-
আলবেনিয়ায় ইরানি দূতাবাস
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি এই সংঘে আলবেনিয়ার প্রতিনিধিকে দেয়া এক চিঠিতে ইরানের কূটনৈতিক ও কনস্যুলার ভবনের ওপর আলবেনিয় সরকারের সহিংস কর্মকাণ্ড ও তল্লাশির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। একই চিঠির একটি কপি জাতিসংঘ মহাসচিব অন্থ্যেনিও গুতেরেসের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলবেনিয়ার পুলিশ ইরানি দূতাবাসে জোরপূর্বক ঢুকে তল্লাশি চালায়। এক্ষেত্রে আলবেনিয়ার সরকার ইরানি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি। আলবেনিয়া সরকারের এ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত যেখানে কূটনৈতিক স্থান ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ কারণে ইরান কূটনৈতিক মিশনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আইন পুরোপুরি মেনে চলতে আলবেনিয়া সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আলবেনিয়া সরকার অভিযোগ করেছে সেদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামোর বিরুদ্ধে ইরানের পক্ষ থেকে ব্যাপক সাইবার হামলার কারণে তাদের দূতাবাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং তল্লাশি চালানো হয়েছে।
আলবেনিয়া সরকার গত বুধবার সাইবার হামলার অভিযোগ তুলে তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। এরপর ইরান আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আলবেনিয়ার এ পদক্ষেপকে কাণ্ডজ্ঞানহীন ও অদূরদর্শী পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করে। বাস্তবতা হচ্ছে, আমেরিকা, ব্রিটেন ও ন্যাটোসহ পাশ্চাত্যের সমর্থন নিয়ে আলবেনিয়া ইরানের বিরুদ্ধে এ শত্রুতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা সমন্বিতভাবে সাইবার হামলার জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করেছে।
প্রকৃতপক্ষে, যুক্তরাষ্ট্র নিজেই বিভিন্ন দেশে সবচেয়ে বড় সাইবার হামলাকারী হিসেবে পরিচিত। আমেরিকা ও ইসরাইল মিলে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় স্ট্রুক্সনেট ভাইরাস দিয়ে সাইবার হামলা চালিয়ে এটাকে তারা তাদের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষা হিসেবে অভিহিত করেছিল। কিন্তু আমেরিকা নিজে অথবা ন্যাটোর সদস্য আলবেনিয়ার মতো মিত্রদেশগুলো যখন সাইবার হামলার স্বীকার হয় তখন তারা অন্য দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে এবং প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দেয়।
আলবেনিয়ায় সাইবার হামলায় ইরান জড়িত রয়েছে বলে ওয়াশিংটন ও লণ্ডন যে অভিযোগ করেছে তা প্রত্যাখ্যান করে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কেনয়ানি বলেছেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনার বিরুদ্ধে সাইবার হামলার বিষয়ে আমেরিকা ও ব্রিটেন সম্পূর্ণ নীরব রয়েছে। এমনকি প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে তারা ইরানে সাইবার হামলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। এ অবস্থায় ইরানের বিরুদ্ধে তাদের সাম্প্রতিক অভিযোগেরও কোনো ভিত্তি নেই।
ইরান সরকারের বিরুদ্ধে আলবেনিয়া সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইরান নিজেই সাইবার হামলার শিকার এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়। বাস্তবতা হচ্ছে, ওয়াশিংটনের উস্কানিতে আলবেনিয়া সরকার ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও শত্রুতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে।
ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠীকে ইরাক থেকে বিহিস্কার করার পর ন্যাটো সামরিক জোট ও আমেরিকার নির্দেশে আলবেনিয়া সরকার ওই সন্ত্রাসীদেরকে আশ্রয় দিয়েছে যাতে তাদেরকে ব্যবহার করে ইরানের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা যায়। এ বিষয়ে ইরান প্রথম থেকেই আলবেনিয়া সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।