ইনস্টেক্স বন্ধের জন্য ইরানকে দায়ী করা ইউরোপের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা: ইরান
(last modified Fri, 10 Mar 2023 13:28:42 GMT )
মার্চ ১০, ২০২৩ ১৯:২৮ Asia/Dhaka

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানি ইউরোপীয়দের মাধ্যমে ইনস্টেক্স বন্ধ করার বিষয়ে বলেছেন, ইনস্টেক্স বন্ধের জন্য ইরানকে দায়ী করা ইউরোপের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা মাত্র।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) ইউরোপীয় ত্রোয়িকা-ইংল্যান্ড, ফ্রান্স এবং জার্মানি-ইরানকে দোষারোপ করে একটি যৌথ বিবৃতিতে ইনস্টেক্স ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সহজতর করা এবং তেহরানকে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার জন্য ‘ইনস্টেক্স’ নামক ওই ম্যাকানিজম চালু করার দাবি করেছিল ইউরোপীয় ত্রোয়িকা। কিন্তু কার্যত ইনস্টেক্স-এর কোনো সুবিধাই ইরান পায় নি।

২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান এবং ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল। ওই বিবৃতিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে ইরানের সাথে কার্যকর আর্থিক চ্যানেল বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি ইরানের তেল ও গ্যাস রপ্তানির সম্ভাব্যতার কথাও বলা হয়েছিল। বিবৃতির একাংশে তারা এই প্রক্রিয়াকে "একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে গঠিত ইউরোপীয় উদ্যোগ" বলে উল্লেখ করেছিল। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার অব্যাহত থাকবে বলেও বলা হয়েছিল। সেইসঙ্গে ইউরোপীয় রপ্তানিকারক ও আমদানিকারকরা ইরানের সাথে আইনি প্রক্রিয়ায় বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাবে বলে জানানো হয়েছিল।

২০১৮ সালের ৮ মে তারিখে আমেরিকা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাবার পর তিন ইউরোপীয় দেশ, ইংল্যান্ড, জার্মানি এবং ফ্রান্সের পক্ষ থেকে তেহরানের সাথে ডলার-বহির্ভূত বাণিজ্যের সুবিধার্থে ওই ইনস্টেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীকালে ত্রোয়িকার সঙ্গে ইনস্টেক্সে যোগ দিয়েছিল বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, হল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, স্পেন, সুইডেন এবং নরওয়ে।

কিন্তু বাস্তবে এই ইনস্টেক্স কোনো কাজে আসে নি। সেকথা স্বীকারও করেছেন ইনস্টেক্সের পরিচালক মাইকেল বক। ২০২১ সালের মার্চে তিনি বলেছিলেন: ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপের বৃহৎ ব্যাংকগুলোর কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণেই তারা ইনস্টেক্সের সাথে কাজ করতে পারছে না। সুতরাং এই স্বীকারোক্তির পর ইনস্টেক্স বন্ধ ঘোষণার জন্য ইরানকে দায়ী করা হাস্যকর।

ইউরোপীয় ত্রোয়িকা আসলে ইনস্টেক্সের মাধ্যমে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরও যেন ইরান সমঝোতার সব শর্ত মেনে চলে-সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা পেতে চেয়েছিল। কিন্তু ইরানও সর্বোচ্চ চাপের নীতি অব্যাহত রাখার প্রতিক্রিয়ায় ধীরে ধীরে তার কিছু পারমাণবিক প্রতিশ্রুতি হ্রাস করেছে।#

পার্সটুডে/এনএম/১০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।