ফেইসব বুক ও ইনস্টাগ্রামে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার অ্যাকাউন্টগুলো ব্লক করার রহস্য
(last modified Fri, 09 Feb 2024 13:18:03 GMT )
ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৪ ১৯:১৮ Asia/Dhaka

মেটা প্ল্যাটফর্মস নামক মার্কিন কোম্পানি ফেইস বুক ও ইনস্টাগ্রামে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামনেয়ির অ্যাকাউন্টগুলো ব্লক করেছে।

মেটার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার অ্যাকাউন্টগুলো বিভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান ও বিপজ্জনক ব্যক্তিদের বিষয়ে এই কোম্পানির নীতিমালার পরিপন্থী হওয়ায় সেগুলো বাতিল করা হয়েছে! 

অতীতেও টুইটারসহ পাশ্চাত্যের নিয়ন্ত্রিত এ ধরনের সামাজিক মাধ্যমগুলোতে থাকা ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ইউজার অ্যাকাউন্টগুলোকে কখনও বাতিল ও কখনওবা সীমাবদ্ধ করা হয়েছিল এ ধরনের কিছু অযৌক্তিক ও মিথ্যা অজুহাতে। 

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতার অ্যাকাউন্ট ব্লক করার আসল কারণ হল ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতি তাঁর সমর্থন এবং ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিক ও বিশেষ করে গাজার হাজার হাজার নারী ও শিশুদের ওপর চলমান গণহত্যা তথা জাতিগত নির্মূল অভিযানের মত মানবতা-বিরোধী মহা-অপরাধে জড়িত ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে আঞ্চলিক সরকারগুলোর ওপর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই বিপ্লবী নেতার চাপ বাড়তে থাকা। ফলে এ অঞ্চলের জনগণ অত্যন্ত খুশি হলেও চরম ক্ষুব্ধ হয়েছে পশ্চিমা নেতৃবৃন্দ ও তাদের নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমগুলোর কর্তৃপক্ষ।

সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার অনুসারী বা ফলোয়ারের সংখ্যা বেশ কয়েক মিলিয়ন এবং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি গ্রাহকের কাছে এই বিপ্লবী নেতার ইসলামী, যৌক্তিক ও মানবিক আবেদনগুলো যাতে দ্রুত বা যথাসময়ে পৌঁছতে না পারে ও কাঙ্ক্ষিত প্রভাব ফেলতে না পারে সে জন্যই এ ধরনের বিদ্বেষী পদক্ষেপ নিয়েছে এইসব মাধ্যমের কর্তৃপক্ষ। আর এ থেকে বাক-স্বাধীনতার প্রতি তাদের অশ্রদ্ধা ও শত্রুতাও ফুটে উঠেছে। অথচ পশ্চিমা সরকার ও গণমাধ্যমগুলো  এবং এমনকি সেখানকার সাধারণ নাগরিকরাও নানা অজুহাতে ইসলাম-বিদ্বেষী তৎপরতার অংশ হিসেবে সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে পবিত্র কুরআন ও ইসলামের মহানবীর (সা) অবমাননার মত জঘন্য তৎপরতা চালাতেও দ্বিধা বোধ করে না বাক-স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে! 

গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার ব্যাপারে পশ্চিমা সরকারগুলো ও তাদের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার অবস্থান ও বিশ্বের প্রায় দুইশ কোটি মুসলমানের পবিত্রতার প্রতি তাদের অবমাননা থেকে মানবাধিকার ও বাক-স্বাধীনতার বিষয়ে গোটা পাশ্চাত্য ও তাদের গণমাধ্যমের দ্বিমুখী নীতি বা ভণ্ডামি স্পষ্ট হয়ে গেছে। অন্যদিকে পবিত্র ইসলাম ধর্মের দৃষ্টিতে প্রত্যেক মানুষই স্বাধীন ও সবার রয়েছে সমান অধিকার।

ফিলিস্তিনিদের বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধ-যুদ্ধ মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী ও ইহুদিবাদী দাম্ভিক মহল গাজার বেসামরিক জনগণের মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার লক্ষ্যে ও তাদের নতজানু করার লক্ষ্যে সেখানে গণহত্যা চলতে দেয়ার পাশাপাশি যুদ্ধ-কবলিত মজলুম ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সাহায্য দেয়ার কাজে নিয়োজিত জাতিসংঘের ত্রাণ-সংস্থাকে অর্থ সাহায্য দেয়াও বন্ধ করে দিয়েছে।

এ অবস্থায় মজলুম ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলার দায়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার পেইজ বা অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়ার পশ্চিমা পদক্ষেপ বাক-স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের বিষয়ে তাদের কপটতাকে আবারও বিশ্ববাসীর কাছে স্পষ্ট করেছে। ফলে বিশ্বের মুক্তিকামী জনগণ ও মজলুম জনগণ তাদের প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সর্বাত্মক সহায়তার ব্যাপারে আরও সচেতন হবে বলে আশা করা যায়।  #

পার্সটুডে/এমএএইচ/০৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।