মার্চ ২৪, ২০২৪ ১৮:০৯ Asia/Dhaka
  • ১৭ হাজার নাগরিককে হত্যার সাথে জড়িত ইরানের সরকার বিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রতি ৮ মার্কিন সিনেটরের সমর্থন
    ১৭ হাজার নাগরিককে হত্যার সাথে জড়িত ইরানের সরকার বিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রতি ৮ মার্কিন সিনেটরের সমর্থন

আমেরিকার ৮ জন সিনেটর সরকারের কাছে একটি পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন যেখানে আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানায় অবস্থিত আশরাফ-তিন ক্যাম্পে ইরানের সরকার বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেক গোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আমেরিকার রিপাবলিক ও ডেমোক্রেট উভয়দের সদস্যরা সম্মিলিতভাবে সরকারের কাছে এ আহ্বান জানিয়েছে।

এই সিনেটররা ইরানের সরকার বিরোধী এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে এমন সময় মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যখন এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি ২০১০ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিদেশী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেত্রী 'মারিয়াম রাজাভি'

কারাবাস, শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং পাশ্চাত্য প্রভুর প্রতি দাসত্বের ভিত্তিতে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গঠিত হয়েছিল। সদস্যদেরকে জোরপূর্বক নিয়োগ, ক্যাম্পের ভিতরে সদস্যদেরকে বন্দী করে রাখা এবং বহির্বিশ্ব থেকে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা, জোরপূর্বক বিবাহবিচ্ছেদ কিংবা বিয়ে করানো হতো। এমনকি ব্রহ্মচর্যের মতো বিকৃত মতাদর্শ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই গোষ্ঠীর সদস্যদের ব্রেইনওয়াশ করা হতো। এরপর তাদেরকে ইরানের স্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন বিপজ্জনক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হতো।

১৯৮০-এর দশকে ইরানে ইসলামী বিপ্লব বিজয়ের পরের বছরগুলোতে, পাশ্চাত্যের মদদপুষ্ট এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইরানের অভ্যন্তরে ব্যাপক সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালায় এবং তখন থেকে ইরানের জনমনে তাদের প্রতি চরম ঘৃণা ও বিদ্বেষ তৈরি হয়ে আছে।

ইরানের বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের সময় ইরাকের সাবেক স্বৈরশাসক সাদ্দামের কাছে ইরানের জনগণের জন্য স্বাধীনতা চাওয়ার দাবিকারী এই সন্ত্রাসী মানসিকতাসম্পন্ন গোষ্ঠীটির ইরানি জনমনে তাদের কোনো স্থান নেই। আর এ কারণে ইরানে সবচেয়ে ঘৃণিত হয়ে উঠেছে এ সন্ত্রাসী মোনাফেক গোষ্ঠীর নাম।

ইরাকের স্বৈরশাসক 'সাদ্দাম'-এর সাথে সন্ত্রাসী 'মোনাফেক' গোষ্ঠীর সাবেক নেতা 'মাসুদ রাজাভি'র বৈঠক

সন্ত্রাসী 'মোনাফেক' গোষ্ঠী ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালালেও এবং বহু নিরীহ মানুষের রক্ত ঝরালেও আমেরিকার রাজনীতিবিদরা তাদের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

২০১৩ সালে, মার্কিন সরকার আলবেনিয়াকে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যদের শরণার্থী হিসাবে গ্রহণ করতে বাধ্য করেছিল।

আশরাফ ক্যাম্পে সন্ত্রাসী মোনাফেক গ্রুপের সদস্যরা

ইরানে ইসলামী বিপ্লব বিজয়ের শুরু থেকেই, সন্ত্রাসী মোনাফেক গোষ্ঠী বিভিন্ন সন্ত্রাসী অভিযান চালিয়ে ১৭ হাজারেরও বেশি ইরানি নাগরিককে হত্যা করেছে।

১৭ হাজার ইরানিকে হত্যাকারী মোনাফেক সন্ত্রাসীদের দল

বিপ্লবের শুরুতে ইরানে সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িত থাকার অপরাধে ইরানের বিচার বিভাগের রায়ে এই গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন সদস্যের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।

জন বোল্টনসহ অনেক উগ্র মার্কিন রাজনীতিবিদ সবসময় এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত এবং তাদেরকে সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে এসেছে।

চিত্র: জন বোল্টন এবং মরিয়ম রাজাভি

মরিয়ম রাজাভির নেতৃত্বে এই গোষ্ঠীটি ইরানবিরোধী বিক্ষোভ ও বিদেশী মিডিয়ায় ইরানের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায়।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মোনাফেকদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইরান বিরোধী মন্তব্য লিখছে

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, সন্ত্রাসী মোনাফেক গোষ্ঠীর সদস্যরা বিভিন্ন ভাষায় সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ইরানের বিরুদ্ধে এবং আমেরিকান নিষেধাজ্ঞার সমর্থনে মন্তব্য লিখছে। আর এ ভাবে তারা ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ধ্বংসাত্মক তৎপরতায় লিপ্ত। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ