ইরানের সর্বোচ্চ নেতার দৃষ্টিতে একজন প্রেসিডেন্টের পছন্দীয় বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?
(last modified Sun, 07 Jul 2024 14:27:41 GMT )
জুলাই ০৭, ২০২৪ ২০:২৭ Asia/Dhaka
  • ইরানের সর্বোচ্চ নেতার দৃষ্টিতে একজন প্রেসিডেন্টের পছন্দীয় বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?

ইরানের বিদায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে শহীদ প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসির নানা বৈশিষ্ট্যের কথা তুলে ধরেছেন সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেছেন, দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার ও কর্মকর্তাদের জন্য আদর্শ স্থাপন করে গেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট রায়িসি।

গতকাল ইরানের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ মুখবের ও শহীদ রায়িসির মন্ত্রিসভার সদস্যরা ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।

সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, জনাব রায়িসি জনগণকে ভালোবাসতেন। মানুষের পাশে থেকে বাস্তবতা উপলব্ধি করতেন। জনগণ যা বলতেন তা শুনতেন এবং জনগণের যা প্রয়োজন তার ভিত্তিতে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতেন। ইসলাম ধর্মও ঠিক এটাই করতে বলে।

তিনি আরও বলেন, শহীদ রায়িসি সত্যিকার অর্থেই দেশের অভ্যন্তরীণ শক্তি-সামর্থ্যকে গুরুত্ব দিতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন আমরা আমাদের নিজস্ব সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে দেশের অনেক সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম।

আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, বিপ্লবী এবং ধর্মীয় অবস্থান ঘোষণার ক্ষেত্রে অকপটতা ছিল শহীদ রায়িসির আরেকটি বৈশিষ্ট্য। বিপ্লবী অবস্থান সুস্পষ্ট ভাবে প্রকাশ করলে নির্দিষ্ট কিছু মানুষ, কিছু গোষ্ঠী, কিছু ব্যক্তিত্ব মন খারাপ করতে পারে- এমন আশঙ্কা বিবেচনায় নিতেন না রায়িসি।

শহীদ প্রেসিডেন্ট রায়িসির অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা তুলে ধরে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, আমি বারবার জনাব রায়িসিকে একটু বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছিলাম। কিন্তু তিনি সবসময় বলতেন তিনি কখনই ক্লান্ত হন না। সত্যিই তাই, এটা অবাক হওয়ার মতো বিষয়। মধ্যরাতে বিদেশ সফর থেকে ফিরে তিনি সকালে কারাজ শহরে জনসাধারণের সঙ্গে দেখা করতে চলে গেছেন।

সম্পর্ক-যোগাযোগ এবং সম্মান-মর্যাদা ছিল জনাব রায়িসির পররাষ্ট্রনীতির দু'টি বৈশিষ্ট্য। তিনি মাঝে মাঝে ফোনে ইউরোপের কোনো কোনো প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেড় ঘণ্টা ধরেও কথা বলতেন। তিনি এমন কঠোর ছিলেন না যে, অন্যরা তার থেকে দূরে সরে যাবে, কিন্তু তিনি অপ্রয়োজনীয় ছাড় দিতেন না। জনাব রায়িসির আরেকটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো- তিনি কখনোই অন্যের কটু কথায় হতাশ হতেন না। তিনি কষ্ট পেতেন এবং মাঝে মাঝে এই বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগও করতেন। কিন্তু তিনি কখনই হতাশ হননি বা তাঁর কাজে এসবের প্রভাব পড়ত না।

 

তিনি  বলেন, জনাব রায়িসি একজন নম্র, সহনশীল, ধৈর্যশীল মানুষ ছিলেন। যাদের সাথে মতপার্থক্য ছিল তাদের প্রতিও তিনি সহনশীল ছিলেন। কোনো কোনো মতপার্থক্য এমন পর্যায়েও হতো যা কর্মক্ষেত্রে বিরোধ সৃষ্টি করতো। শহীদ রায়িসি আল্লাহর স্মরণের পাশাপাশি তাঁর কাছে আশ্রয় চাইতেন এবং তাঁর কাছে দোয়া করতেন। তিনি আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করতেন, তার মন ছিল পরিষ্কার। এগুলোই একজন মানুষের জন্য মুক্তি নিয়ে আসে এবং এগিয়ে নিয়ে যায়।

১৯ মে সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আজারবাইজান প্রদেশে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় শহীদ হন। 

নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। তিনি নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। এ কারণে শহীদ রায়িসির সরকারের সদস্যরা আজ সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাত করেন।#

পার্সটুডে/এসএ/৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে  লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ