মে ০৫, ২০১৯ ১৮:০৯ Asia/Dhaka
  • যুদ্ধ জাহাজে নামাজরত অবস্থায় ইরানের নৌ সেনারা
    যুদ্ধ জাহাজে নামাজরত অবস্থায় ইরানের নৌ সেনারা

"আমেরিকার কঠোর নিষেধাজ্ঞা ও সর্বনিম্ন সুযোগ সুবিধা না থাকা সত্বেও স্থল, সমুদ্র ও আকাশ প্রতিরক্ষা এবং ইলেক্ট্রনিক্স যুদ্ধে ব্যাপক পারদর্শীতা অর্জন করেছে। প্রতিরক্ষা শিল্পে ইরান আজ সমৃদ্ধ একটি দেশ।"

ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি এসব কথা বলেছেন। তিনি গত ৪০ বছর ধরে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ইরানের ওপর চাপিয়ে দেয়া নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, "তেল বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে আরেকটি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু এবারও তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে।"

ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর চাপিয়ে দেয়া আট বছরের যুদ্ধের কারণে এবং আমেরিকার পক্ষ থেকে একের পর এক হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিরক্ষা শক্তিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করে ইসলামি ইরান। বর্তমানে যেকোনো হুমকি মোকাবেলার ক্ষমতা ইরানের রয়েছে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ইরানের সাফল্যের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিকের মধ্যে উন্নতমানের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি, ডুবোজাহাজ নির্মাণ, জাহাজ বিধ্বংসি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কথা উল্লেখ করা যায়।

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিএসআইএস)'র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান বর্তমানে আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। দেশটি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য প্রচলিত অস্ত্রশস্ত্রে এতো বেশি শক্তি অর্জন করেছে যে পারস্য উপসাগর তো বটেই এমনকি ওমান সাগর ও লোহিত সাগর এলাকার বিশাল অঞ্চল জুড়ে প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা রাখে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক আরো দুটি গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা পিজিসিসিভুক্ত আরব দেশগুলো ২০১৭ সালে তাদের সামরিক শক্তির পেছনে  ৯৫০০ থেকে ১২৮০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। কিন্তু এ সময়ে ইরান সামরিক খাতে মাত্র ১৫০০ থেকে ১৬০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

ইরানের দ্রুতগামী সামরিক স্পিডবোড

২০০৬ সাল থেকে সামরিক ক্ষেত্রে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও প্রতিরক্ষা খাতে দেশটি বহুদূর এগিয়ে গেছে।

সামরিক বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার এক তদন্ত প্রতিবেদনে জানিয়েছে প্রচলিত যুদ্ধাস্ত্র, জনবল, ভৌগোলিক ও আর্থিক অবস্থানসহ মোট ৫০টি ক্যাটাগরিতে ব্যাপক বিচার বিশ্লেষণের পর দেখা গেছে বিশ্বের ১৩৬টি দেশের মধ্যে সামরিক শক্তিতে ইরানের অবস্থান ১৩তম।

ইরান কখনোই আগে কোনো যুদ্ধ শুরু করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না। কিন্তু তাই বলে যদি কেউ হামলার দুঃসাহস দেখায় তাহলে উপযুক্ত জবাব দেবে ইরান। অর্থাৎ নিজের নিরাপত্তা প্রশ্নে ইরান কোনো ছাড় দেবে না। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ তার দেশের মোকাবেলায় ওয়াশিংটনের অন্ধ অনুসরণের জন্য সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, "এ অঞ্চলে যেকোনো সংঘাত সৃষ্টি হলে কোনো দেশই নিরাপদ থাকতে পারবে না।"     

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৫

 

ট্যাগ