আমাদের তেল ট্যাংকার বিপদে পড়লে আমেরিকাও কোথাও নিরাপদ থাকবে না: রুহানি
(last modified Sun, 24 May 2020 10:42:05 GMT )
মে ২৪, ২০২০ ১৬:৪২ Asia/Dhaka
  • ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি
    ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ক্যারিবিয়ান সাগরে মার্কিন উস্কানিমূলক তৎপরতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, 'ক্যারিবিয়ান সাগর বা অন্য কোথাও যদি আমাদের তেল ট্যাংকার আমেরিকার হাতে বিপদের সম্মুখীন হয় তাহলে তারাও (আমেরিকা) অন্য কোথাও একই ধরনের বিপদের মুখে পড়বে।'

তিনি গতকাল কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলে সানি’র সঙ্গে এক টেলিফোনালাপে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, 'ইরান নিজের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার পাশাপাশি বিশ্বের যেকোনো স্থানে নিজের স্বার্থ রক্ষার অধিকার সংরক্ষণ করে। কাজেই আমি আশা করছি আমেরিকা কোনো ভুল করবে না।'

ইরান ও ভেনিজুয়েলার মধ্যে সমুদ্র বাণিজ্য অব্যাহত থাকায় মার্কিন কর্মকর্তারা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ও হতাশ। পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর মার্কিন সরকার ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এখন তারা আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ইরানের তেলবাহী জাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করছে যা সম্পূর্ণ বেআইনি। ভেনিজুয়েলার উদ্দেশ্যে ইরানের তেলবাহী জাহাজ রওনা দেয়া থেকে সমুদ্র  বাণিজ্যের গুরুত্বের বিষয়টি উপলব্ধি করা যায়।

বর্তমানে বিশ্বের ৯০ শতাংশের বেশি বাণিজ্য সমুদ্র পথে হয়ে থাকে এবং এ সুবিধা থেকে কেউ কাউকে বিরত রাখতে পারে না। সব দেশেরই সমুদ্র ব্যবহার করার অধিকার রয়েছে। সমুদ্র পথে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য হওয়ায় এবং সমুদ্রে গ্যাস ও তেলের মতো জ্বালানির উৎস থাকায় সমুদ্রে নিরাপত্তা বিধান সব দেশের জন্যই জরুরি। কারণ মানুষের জীবন ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য সমুদ্রের ভূমিকা অস্বীকার্য।

ইরানের দক্ষিণে রয়েছে পারস্য উপসাগর, ওমান সাগর ও উন্মুক্ত সাগর এবং দেশটির উত্তরে রয়েছে কাস্পিয়ান সাগর। কাস্পিয়ান সংলগ্ন দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের রয়েছে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য সম্পর্ক। সমুদ্র পথে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়টিকে ইরান বিশেষ গুরুত্ব দেয়। ইরানের নৌবাহিনী নিজস্ব সমুদ্র উপকূলসহ আন্তর্জাতিক পানি সীমায় নিরাপত্তা দেয়ার কাজ করছে। এ অবস্থায় ভেনিজুয়েলায় ইরানের তেল ট্যাংকারের যাত্রা আন্তর্জাতিক অধিকার এবং এ ক্ষেত্রে আমেরিকা কোনো বিঘ্ন সৃষ্টির চেষ্টা করলে ইরানও শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য হবে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা হোসেন দেহকান বার্তা সংস্থা ইরান প্রেসকে দেয়া সাক্ষাতকারে ভেনিজুয়েলার সঙ্গে ইরানের সমুদ্র বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হুমকির প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ইরানের নীতি স্পষ্ট আর তা হচ্ছে আমেরিকা যদি কোনো ভুল করে বসে তাহলে অবশ্যই তারা ইরানের পক্ষ থেকে অনুশোচনামূলক জবাব পাবে।

ইরানের ইতিহাসে এ দেশটি কখনো যুদ্ধ শুরু করেনি। কিন্তু নিজ স্বার্থ রক্ষায় তারা কোনো ছাড় দেয়নি। ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী আইআরজিসির প্রধান কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পর ইরানও ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি গুড়িয়ে দেয়া থেকে বোঝা যায় ইরান যে কোনো মূল্যে নিজের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে বদ্ধ পরিকর। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৪

ট্যাগ