আ. লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে: প্রেস সচিব
(last modified Mon, 12 May 2025 13:13:44 GMT )
মে ১২, ২০২৫ ১৯:১৩ Asia/Dhaka
  • প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম
    প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে দেশের মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

আজ (সোমবার) দুপুরে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের সব অধিকার খর্ব করেছিল। এ জন্য আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যুক্ত সব রাজনৈতিক দলের সমর্থন ছিল। সব দলের সঙ্গে সরকারের কনসালটেশন (পরামর্শ) হয়েছে।

শফিকুল আলম বলেন, এই সিদ্ধান্তে দেশের মানুষের সমর্থনও ছিল। তাই কোথাও কোনো আন্দোলন হয়নি।

ডিআরইউ সাগর-রুনি মিলনায়তনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর গত ৯ মাসে কেন আওয়ামী লীগের বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে ম্যাচুরিটির (পরিপক্বতা) বিষয় আছে। জনগণ আওয়ামী লীগের মধ্যে ন্যূনতম অনুশোচনা দেখতে চেয়েছে। কিন্তু দুই হাজার মানুষ মারা গেলেও গত ৯ মাসে তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা দেখিনি। এ জন্য আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে।’

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করা জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে সরকারের অবস্থান কী, জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, এ বিষয়ে তো ২০১২ সালে আওয়ামী লীগই অ্যাকশন নিয়েছে। একাত্তরের পরে তাদের (জামায়াত) ব্যান (নিষিদ্ধ) করা হয়েছে। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান হচ্ছে, ইমেডিয়েট পাস্টে (নিকট অতীতে) যা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সেসব অপকর্ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চব্বিশের অভ্যুত্থানের পূর্ববর্তী ঘটনাগুলোর আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তাহলে কি সরকার একাত্তরকে এড়িয়ে যাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘একাত্তর নিয়ে আমরা অনেক স্টেটমেন্ট (বিবৃতি) দিয়েছি। নতুন কিছু বলতে চাই না। একাত্তর আমরা পুরোপুরি ধারণ করি।’

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, ১৪ দলের কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগের কথা বলা হয়েছে। সেখানে শেখ হাসিনার ভূমিকা বারবার স্পষ্ট হয়েছে। ১৪ দলের অন্য দলগুলোর কথা সেভাবে আসেনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ত্রুটি বা ব্যর্থতা পেলে মন খুলে লেখার আহ্বান জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা কারও মুখ বন্ধ করছি না। সবাইকে অনুরোধ, আপনারা আমাদের কোনো ফেইলিউর (ব্যর্থতা) পান, লেখেন। সমালোচনা করার জায়গা পেলে করুন। আপনার মুখ বন্ধ করা হবে না। মিডিয়া হাউস বন্ধ করা হবে না। কিন্তু মিথ্যা কথা লিখবেন না।’

ভারতে বাংলাদেশি সাতটি টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘এটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। আমরা এটি দেখছি। এতে বোঝা যায়, তারা আসলে সত্য কথাকে নিতে পারছে না। তবে আমরা পাল্টা অ্যাকশনে যাব না। এতে তাদের (ভারত) অ্যাকশনকে বৈধতা দেওয়া হবে। আমরা জানি, তাদের মিডিয়া প্রতিদিন তামাশা করে।’

জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘৩০ কর্মদিবসের মধ্যে এটি হবে। সে পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাই।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘এ জন্য হাই পাওয়ার তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তাঁরা দেখবেন, কার কী কী রোল ছিল, কী ত্রুটি ছিল, সব তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’

প্রেস সচিব আরও বলেন, গত ১৫ বছর সাংবাদিকদের অনেকে সরকারের ভয়াবহ রকমের চামচামি করেছেন। এ জন্য জাতিসংঘের কার্যালয়কে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘চিঠিতে আমরা বলছি, তারা যেন ইনডিপেনডেন্ট (স্বাধীন বিশেষজ্ঞ) এক্সপার্ট নিয়ে এসে বাংলাদেশের সাংবাদিকতা কীভাবে গত ১৫ বছরে ফেইলিউর হয়েছে, সেটি বের করে। আমরা এই ফেইলিউরগুলো জানতে চাই।’#

পার্সটুডে/জিএআর/১২