জুলাই ১৮, ২০২১ ১৭:৩১ Asia/Dhaka

ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ভিয়েনা সংলাপে ইরানের প্রতিনিধিদলের প্রধান সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবনের সংলাপে অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলোকে ইরানের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি নিজের অফিসিয়াল টুইটার পেজে দেয়া এক পোস্টে লিখেছেন, 'আমরা এখন সরকার পরিবর্তনের কাজে ব্যস্ত রয়েছি এবং তেহরানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। কাজেই ভিয়েনা সংলাপকে ইরানে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। প্রতিটি গণতান্ত্রিক দেশে এই প্রক্রিয়া বিদ্যমান।' ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক রেজা যাবিহি ভিয়েনায় পরমাণু আলোচনা স্থগিত রাখার কারণ সম্পর্কে বলেছেন, ইরানের বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা স্বাভাবিক এবং নতুন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ পর্যন্ত সবাইকে  অপেক্ষা করতে হবে।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, ইসলামি ইরানে সরকার পরিবর্তন হলেও আন্তর্জাতিক যে কোনো প্রতিশ্রুতি বা চুক্তি মেনে চলার ব্যাপারে সব সরকারই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ইরানের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসি তার দেশের ওপর থেকে সমস্ত অন্যায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানানোর পাশাপাশি এও বলেছেন, প্রতিপক্ষ যদি তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অটল থাকে তাহলে ইরানও নিজের প্রতিশ্রুতিতে অটল থাকবে। এ থেকে বোঝা যায় সংলাপ প্রক্রিয়ায় ছোটখাটো কিছু বিষয়ে সরকারগুলোর মধ্যে পার্থক্য থাকলেও  আলোচনার লক্ষ্য উদ্দেশ্যের ব্যাপারে মৌলিক নীতিতে ইরানের কোনো সরকারের মধ্যে পার্থক্য নেই।

কিন্তু উল্টো চিত্র বিরাজ করছে মার্কিন সরকারের নীতিতে। তারা আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করে চলেছে। ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে তারা প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের যে জঘন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা আজো বহাল রেখেছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি অনুসরণ করে বর্তমান বাইডেন সরকারও পরমাণু বিষয়ক আলোচনায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের কর্মকাণ্ডের বিষয়টি শামিল করার দাবি জানাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ আবদার কখনোই পূরণ হবার নয়। তাই মার্কিন সরকার ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বাস্তবতাকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। সংলাপ আপাতত স্থগিত হওয়ার ব্যাপারে আরাকচির টুইট বার্তার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, আলোচনায় অচলাবস্থার ব্যাপারে জবাবদিহিতা এড়ানোর চেষ্টা করছে তেহরান। মার্কিন  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এমন সময় এ দাবি করল যখন ইরানের পরমাণু আলোচক দলের প্রধান আব্বাস আরাকচি সর্বশেষ ষষ্ঠ দফা পরমাণু আলোচনার পর আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, এবারের আলোচনায় খুব ভালো অগ্রগতি হয়েছে এবং আমরা বিশ্বাস করি অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে সমঝোতার খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছি আমরা সবাই। যদিও এখনো আরো মৌলিক কিছু বিষয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পরমাণু সমঝোতাকে পুনরুজ্জীবন করতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন রয়েছে। ইরানের স্বার্থকে বিপন্ন করতে যুক্তরাষ্ট্র নানা অজুহাত ব্যবহার করছে এবং এ কারণে আলোচনা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির নীতির ব্যর্থতার কথা স্বীকার করলেও তারা এখনো ওই নীতিতেই অটল রয়েছে।# 

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৮

ট্যাগ