শ্রোতাদের মতামত
‘রমজান: আত্মশুদ্ধির মহোৎসব’ সম্পর্কে মতামত
প্রিয় মহোদয়, আসসালামু আলাইকুম। আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানবেন। আজ (২২/০৪/২০২২, শুক্রবার) রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলো হল বিশ্বসংবাদ, দৃষ্টিপাত, রমজান: আত্মশুদ্ধির মহোৎসব ও আলাপন। অনুষ্ঠান শোনা শেষ করেই চিঠি লিখতে বসেছি। পরিকল্পনা ছিল সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুষ্ঠান আলাপন নিয়ে আজকের মতামত দেবো।
আজকের আলাপনে ঢাকায় নিউমার্কেটে ছাত্রদের সাথে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ এবং এ বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে দৈনিক মানব জমিনের সম্পাদক, সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার জনাব মতিউর রহমান চৌধুরী’র আলোচনা আমাদের খুবই ভালো লেগেছে। তাঁর মতামতগুলোর সাথে নিঃসন্দেহে সহমত পোষণ করছি।
কিন্তু চিঠি লিখতে বসে বারবার শুধু ‘রমজান: আত্মশুদ্ধির মহোৎসব’ অনুষ্ঠানের কথাই মনে আসছে। আজ (২২/০৪/২০২২, শুক্রবার) এর ২০তম পর্ব প্রচারিত হয়। মূলতঃ লাইলাতুল ক্বদর ও আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ.)’কে নিয়েই আজকের অনুষ্ঠান। এমন দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরে ভীষণ ভীষণ ভালো লাগছে।
একথা সর্বজনবিদিত যে, লাইলাতুল ক্বদর মহান আল্লাহর বিশেষ উপহারের রজনী। এ রজনী অন্য সহস্র রজনীর চেয়েও উত্তম। কেননা, শবে ক্বদরের রাতে নামায, যাকাত ও অন্যান্য নেক আমলগুলো অন্য সময়ের এক হজার মাসের আমলগুলোর চেয়েও উত্তম। আল্লাহ তার বান্দাকে উচ্চ মাকামে পৌঁছার কত সুযোগই না করে দিয়েছেন। আসলে দৈনন্দিন ইবাদতের মাধ্যমে কোন বান্দা উচ্চ মাকামে পৌঁছতে পারবে না। কিন্তু আল্লাহ চান যে, তার প্রতিটি বান্দাই যেন উচ্চ মাকামে পৌঁছতে পারে। সেজন্য তিনি শবে ক্বদরের মাধ্যমে বান্দাকে এ সুযোগ করে দিযেছেন।
অন্যদিকে এ অনুষ্ঠান থেকে আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ.) এর শাহাদত বরণ এবং এর তাৎপর্য সম্পর্কেও জানতে পেরেছি। বিশে রমজানের রাত তথা একুশে রমজান আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ.)'র শাহাদত-বার্ষিকী। এ প্রেক্ষিতে অনেকেই মনে করেন যে, আজকের রাত তথা ২০ রমজানের দিবাগত রাতটি পবিত্র শবে ক্বদর। অনেকে আবার ২৩ রমজানের রাতকেই শবে কদর বলে মনে করেন।
তবে অনেক ইসলামি চিন্তাবিদ ২৭ রমজানকেই শবে কদর বলে মনে করেন। অবশ্য অধিকাংশের মতে, রমজানের শেষ দশ দিনের যে কোনো বেজোড় রাতই কদরের রাত হতে পারে। সেজন্য তারা এইসব রাতেই বেশি বেশি ইবাদত, কুরআন তিলাওয়াত ও ইসলামী জ্ঞান চর্চা করেন।
আজকের অনুষ্ঠানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর একটি মতামত আমার খুব ভালো লেগেছে। তাই তাঁর বক্তব্যটি হুবহু তুলে ধরলাম। তিনি বলেছেন, “আলী (আ.) ছিলেন যুবকদের জন্য বীরত্ব ও সাহসিকতার আদর্শ, সরকার-প্রধানদের জন্য ন্যায়বিচারের আদর্শ, ইবাদত, খোদা-প্রেম ও ভারসাম্যপূর্ণ অনাড়ম্বর জীবনের জন্য সব মুমিন মুসলমানের জন্যই আদর্শ। তাঁর মুক্তিকামিতা বিশ্বের সব মুক্তিকামীর আদর্শ এবং প্রজ্ঞাময় বক্তব্য ও চিরস্মরণীয় উপদেশগুলো আলেম, বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও চিন্তাবিদদের জন্য আদর্শ।”
কী অসাধারণ বাণী! কি চমৎকার কথা! হযরত আলী (আ.) শুধু মুসলমানদের নয়, বরং বিশ্বের সকল সাহসী যুবকদের আদর্শ, শুধু ইসলামের নয়, বরং সকল ন্যায় বিচারকের আদর্শ, শুধু ইমানদারদের নয়, বরং সকল মুক্তিকামী মানুষের আদর্শ। হযরত আলী (আ.)-এর উপদেশগুলো শুধু সাধারণ মানুষের জন্য নয়, বরং দার্শনিকের জন্যও আদর্শ। আমরা প্রতিটি মানুষ যেন ইসলামের এই মহান নেতা হযরত আলী (আ.) এর আদর্শ জীবনের প্রতিটি ক্ষণে অনুসরণ করে চলতে পারি- সেটাই কামনা করি।
ধন্যবাদান্তে,
মোঃ শাহাদত হোসেন
সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৩