নভেম্বর ১২, ২০২৩ ১৮:৩৫ Asia/Dhaka

শহীদ দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার গাজা যুদ্ধ নিয়ে সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহ দ্বিতীয় দিনের মতো ভাষণ দেন। লেবাননের হিজবুল্লাহ মহাসচিবের প্রথম ভাষণের এক সপ্তাহ পর দেওয়া এই ভাষণে দুটি নতুন বিষয় ছিল।

সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর বক্তৃতার প্রথম দিকটি ছিল গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইল কিছুই অর্জন করতে পারেনি।গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী গোষ্ঠীর যুদ্ধের ৩৭ দিন পেরিয়ে গেছে। এই যুদ্ধের ফলে যা ঘটেছে তা হল গাজার জনগণের ওপর গণহত্যা, হাসপাতাল, চিকিৎসা কেন্দ্র, আবাসিক এলাকায় নির্বিচারে বোমা হামলা। শরণার্থী শিবির এবং সাধারণভাবে বেসামরিক মানুষের জীবনযাত্রার অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর অনেক সংগঠন ও ব্যক্তিত্ব গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত এবং পাশবিক হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে।

ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠী যুদ্ধের সামরিক ও বেসামরিক উভয় দিকই হারিয়েছে। সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই যুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক লক্ষ্য ছিল বন্দীদের মুক্তি, হামাসকে ধ্বংস করা এবং এর সামরিক বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধার করা। গত ৩৭ দিন পেরিয়ে গেলেও বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়নি এবং বন্দীদের মুক্ত করতে নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভার অক্ষমতার প্রতিবাদে দখলকৃত অঞ্চলে প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হামাস নিখোঁজ তো হয়নিই বরং তারা ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনাদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহ বিশ্বাস করেন: "আজ, ইসরায়েল তার সবচেয়ে শক্তিশালী ব্রিগেডকে গাজায় পাঠিয়েছে, এবং এটি তাদের ব্যর্থতা দেখায় কারণ তারা কিছুই অর্জন করতে পারেনি... এবং তাদের জয় করার মতো একটি উপাদানও নেই।"

লেবাননের হিজবুল্লাহ মহাসচিবের বক্তৃতার দ্বিতীয় বিষয়টি ছিল যুদ্ধক্ষেত্র সম্পর্কিত। লেবাননের হিজবুল্লাহর মহাসচিব তার শ্রোতাদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং কৌশলগত বিষয় তুলে ধরে বলেন, "আপনার চোখ মাঠের দিকে রাখুন, বক্তৃতার দিকে নয়। মাঠই কথা বলবে। এই মন্তব্যের অর্থ হল লেবাননের হিজবুল্লাহ মহাসচিব এবং সাধারণভাবে প্রতিরোধের কাছে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর অপরাধযজ্ঞ বন্ধে কূটনীতির কোনো আশা নেই। আমেরিকা ইহুদিবাদীদের অপরাধযজ্ঞ বন্ধ করার যেকোনো কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে বাধা দিচ্ছে। আরব দেশগুলো বাস্তব পদক্ষেপের পরিবর্তে ঘোষণা নীতির দিকে ঝুঁকেছে এবং জাতিসংঘ এখন পর্যন্ত দেখিয়েছে যে তারা ইহুদিবাদীদের অপরাধ অবসান ঘটাতে অক্ষম, এমনকি সংস্থাটির মহাসচিব অত্যন্ত স্পষ্টভাবে এই অপরাধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং যুদ্ধ বন্ধে তার সংস্থার অক্ষমতার বিষয়ে স্বীকারুক্তি দিয়েছেন। 

সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর মতে, যুদ্ধের ফায়সালা মাঠেই নির্ধারিত হয়। ফিলিস্তিনের হামাস ও অন্যান্য প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর যোদ্ধা ছাড়াও লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনি সেনাবাহিনী, ইরাক ও সিরিয়ার প্রতিরোধ শক্তিও এই যুদ্ধে জড়িত। ফিলিস্তিনি, ইয়েমেনি এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ ইহুদিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং ইরাক ও সিরিয়ার প্রতিরোধও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত, প্রতিরোধ তাদের শক্তির একটি অংশ এই যুদ্ধে ব্যয় করেছে এবং যুদ্ধের বিস্তার রোধ করার চেষ্টা করছে। যাইহোক, যদি যুদ্ধক্ষেত্র এমন দিকে অগ্রসর হয় যেখানে ইহুদিবাদী এবং আমেরিকানদের বিরুদ্ধে আরও হামলা চালানোর জন্য প্রতিরোধের প্রয়োজন হয়, তবে প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলো এটি করে যাবে। প্রকৃতপক্ষে লেবাননের হিজবুল্লাহর মহাসচিব এখনও জায়নিস্ট এবং আমেরিকানদেরকে প্রতিরোধকামী শক্তিগুলোর ভয় বজায় রেখেছেন।#

 

পার্সটুডে/এমবিএ/১২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ