গাজায় ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা
গাজা উপত্যকায় হামাস-ইসরাইলের মধ্যকার ৪ দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু
সাত সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আজ (শুক্রবার) ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল সাতটায় এ যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। যুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজায় ফিরতে শুরু করেছেন ফিলিস্তিনিরা।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর খাদ্য ও জ্বালানি তেল বহনকারী ট্রাক মিশর থেকে রাফা ক্রসিং দিয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে। চুক্তি অনুযায়ী- গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন ৪ ট্রাক জ্বালানি এবং রান্নার গ্যাস ঢোকার অনুমতি পাবে। এছাড়া, মিশর থেকে গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন ২০০ ট্রাক ত্রাণ ও চিকিৎসাসামগ্রী আনা হবে।
এদিকে, বন্দি বিনিময়ের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসরাইলের জেলে থাকা ২৪ জন ফিলিস্তিনি নারী ও ১৫ জন পুরুষকে পশ্চিম তীরের রামাল্লা শহরের কাছে ওফার কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলেছে, ইসরাইল যদি সব ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়তাহলে আমরাও আমাদের হাতে থাকা ইসরাইলি সেনাদের মুক্তি দেব।
৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে পরিচালিত আল-কুদস তুফান অভিযানের হামলার সময় হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মধ্যে মোট ৫০ বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস। পরিবর্তে ইসরাইল কমপক্ষে ১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।
মানবিক যুদ্ধবিরতি চলাকালে এই চার দিনে হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেডসহঅন্যান্য ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন এবং দখলদার সেনাবাহিনী গাজায় তাদের সমস্ত সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখবে। এছাড়া, দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বিমান ও ড্রোন উড়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। আর উত্তর গাজায় সকাল ১০টা থেকে শুরু করে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ইসরাইলি বিমান ও ড্রোন উড়তে পারবে না।
ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যকার এ চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে কাতার, মিসর ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে বীরোচিত হামলা চালায় হামাস ও ইসলামি জিহাদ আন্দোলন। ইসরাইলের ভাষ্যমতে,এই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া দুই শতাধিক ব্যক্তিকে ইসরাইল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে বন্দি করে রেখেছে হামাস।
এই অভিযানের জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজাকে অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে আসছিল ইসরাইল। পাশাপাশি তারা গাজায় স্থল অভিযানও চালায় দখলদার বাহিনী। হামাস সরকারের তথ্যানুযায়ী,অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলায় ১৪ হাজার ৮৫৪ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬ হাজার ১৫০টি শিশু এবং ৪ হাজার নারী রয়েছেন। এছাড়া,৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজার ৬০ শতাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/জিএআর/ ২৪