গাজা যুদ্ধ: অর্জন নেই ইসরাইলের, বাড়ল হামাসের জনপ্রিয়তা
(last modified Sun, 26 Nov 2023 07:12:11 GMT )
নভেম্বর ২৬, ২০২৩ ১৩:১২ Asia/Dhaka

গাজায় যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিন চলছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রথম দুই দিনে হামাস ২৬ জন ইসরাইলি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে, আর ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে ৭৮ জন ফিলিস্তিনি। ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের শর্ত মেনে এই যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছে দখলদার ইসরাইল।

গাজার উপর সর্বাত্মক যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অন্যতম লক্ষ্য ছিল হামাসকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা। একইসঙ্গে তারা গাজার মানুষের মন থেকেও হামাসসহ অন্য প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল। তারা ভেবেছিল অসহনীয় হত্যা-নির্যাতনের শিকার হয়ে গাজাবাসী হামাসকে দোষারোপ করতে থাকবে এবং হামাসকে ত্যাগ করবে। কিন্তু এখন ফলাফল হয়েছে উল্টো।

বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, এই যুদ্ধের মধ্যে গাজায় হামাস তথা প্রতিরোধ আন্দোলনের জনপ্রিয়তা আগের চেয়ে আরও বেড়েছে। মার্কিন গণমাধ্যম দ্য ডেইলি বিস্ট জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলি হামলার পর গাজা উপত্যকার পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও হামাসের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশন পরিচালিত জনমত জরিপের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, প্রায় সব ফিলিস্তিনিই জানিয়েছেন ইসরাইলের সঙ্গে সহাবস্থান সম্ভব নয়। এই জনমত জরিপ অনুযায়ী পশ্চিম তীরে হামাসের জনপ্রিয়তা ৯০ শতাংশে পৌঁছে গেছে। গাজায় মাহমুদ আব্বাসের স্বশাসন কর্তৃপক্ষকে হামাসের বিকল্প হিসেবে দাঁড় করানোরও একটা পরিকল্পনা ইসরাইলের ছিল, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে উল্টো পশ্চিম তীরেও স্বশাসন কর্তৃপক্ষের জনপ্রিয়তা কমে যাচ্ছে।

গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশ মানুষই দক্ষিণ ফিলিস্তিন থেকে বিতাড়িত অভিবাসী। ইহুদিবাদীরা তাদের বাপ-দাদার ভিটেমাটি থেকে উৎখাত করার পর ফিলিস্তিনিরা গাজায় এসে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের সবার স্বপ্ন ফিলিস্তিন একদিন পুরোপুরি মুক্ত হবে, এর বিকল্প তারা মেনে নেবে না।

ইসরাইল গাজার দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায়। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তারা উত্তর গাজাকে মানবশূন্য করতে চেয়েছিল, কিন্তু ভয়াবহ হামলার পরও উত্তর গাজার ফিলিস্তিনিরা এলাকা ছাড়েনি। গাজায় ইসরাইলের ৪৮ দিনের পাশবিক হামলার পর হামাসসহ প্রতিরোধ সংগ্রামীদের সমরাস্ত্র, টানেল ব্যবস্থা এবং কমান্ডাররা অক্ষত রয়েছে।

হাসপাতালের নিচে হামাসের টানেল ও কমান্ড সেন্টার রয়েছে বলে গুজব রটিয়ে সেখানে হামলা চালানোর ঘটনায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের জনমতেও বিরূপ প্রভাব পড়েছে। অবৈধ ইসরাইলের শাসক গোষ্ঠীর অজ্ঞতা ও অক্ষমতা স্পষ্ট হয়ে গেছে। হামাস ও ইসলামি জিহাদ আন্দোলন যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানালেও তারা স্পষ্টভাবে বলেছে, অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য তারা পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। তারা যতদিন প্রয়োজন যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।#  

পার্সটুডে/এসএ/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ