গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনে হত্যাকাণ্ড এবং ধ্বংসযজ্ঞ ছাড়া কোনো সামরিক অর্জন নেই
আল-আকসা তুফান অভিযানের ৬০ তম দিনের প্রথম প্রহরে গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শহরের উত্তর এবং পূর্বে ইহুদিবাদী আগ্রাসী বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামী যোদ্ধাদের ভয়ানক এবং পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়েছে বলে প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলো জানিয়েছিল।
বর্তমানে গাজা শহরের বিভিন্ন ফ্রন্টে এবং গাজা উপত্যকার উত্তরে এবং এই অঞ্চলের দক্ষিণে খান ইউনিস শহরের উত্তর ও পূর্বে বিভিন্ন প্রতিরোধ যোদ্ধা এবং ইহুদিবাদী সামরিক বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ চলছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়ে ইহুুদিবাদী ইসরাইলের জঙ্গিবিমানগুলো গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের পাশাপাশি গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনুস শহরে উত্তর এবং পূর্বাঞ্চলে ফসফরাস বোমা দিয়ে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে। খান ইউনিসে অবস্থিত দার এস সালাম হাসপাতালের চিকিৎসক ও রোগীরা এই হাসপাতালের আশেপাশের এলাকায় ইহুদিবাদী বাহিনীর ব্যাপক হামলার পর সাহায্য চেয়েছেন। গাজা উপত্যকার উত্তরে অবস্থিত কামাল আদওয়ান হাসপাতালের ভেতরেও বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে।
একই সময়ে, ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর সেনারা দক্ষিণে বিশেষ করে খান ইউনিসে ভারী গোলাবারুদ এবং বিমান হামলার সমন্বয়ে স্থল অভিযানের মাত্রা বাড়িয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর নেতারা যারা গাজা উপত্যকায় এখনও পর্যন্ত শিশু ও অসহায় নারীদের হত্যা এবং এই এলাকার বাড়িঘর, স্কুল, হাসপাতাল এবং অন্যান্য অবকাঠামোর ব্যাপক ধ্বংস ছাড়া কিছুই অর্জন করতে পারে নি তারা ধারাবাহিকভাবে সেখানে যুদ্ধ এবং আগ্রাসন অব্যহত রেখেছেন।
যখন ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার দক্ষিণে ঘেরাও রিং কঠোর করছে তখন জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা গাজা উপত্যকার নারকীয় পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
ফিলিস্তিনি অঞ্চলে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী লিন হেস্টিংস এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছেন যে গত ১ ডিসেম্বর থেকে এবং সাত দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সামরিক হামলা ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেয়ার কারণে বোমা হামলার পাশাপাশি খাবারের অভাবে আরো কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া হাজার ফিলিস্তিনি পানি, আশ্রয় ও নিরাপত্তার কারণে তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।
এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে গাজার জনগণের জন্য মানবিক সাহায্য পাঠানোর জন্য আর কোনো পরিস্থিতির অবশিষ্ট নেই এবং এই অঞ্চলের জন্য একটি নারকীয় পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে, কারণ ত্রাণ কার্যক্রম আর এই অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করে না। গাজা যুদ্ধের আট দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইহুদিবাদী সেনাবাহিনী তার অতীত ব্যর্থতাগুলো ঢাকার জন্য গাজায় তাদের হামলা এবং আগ্রাসন আবার শুরু করেছে। তবে যুদ্ধের ময়দানের প্রমাণগুলো দেখলে বোঝা যাচ্ছে চলমান স্থল যুদ্ধে এই আগ্রাসী শাসক গোষ্ঠীর সেনাবাহিনী ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মঙ্গলবার সকালে স্বীকার করেছে যে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের বিরুদ্ধে স্থল যুদ্ধের সময় এই সরকারের একজন অফিসার এবং অন্য দুই সৈন্য নিহত এবং চারজন গুরুতর আহত হয়েছে। যাইহোক গাজায় স্থল হামলা থেকে এটা বলা যেতে পারে যে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর ব্যাপক হামলা পুনরায় শুরু করার ক্ষেত্রে তেল আবিব সরকারের একমাত্র অর্জন হলো যুদ্ধাপরাধ মামলার অবনতি এবং এর সামরিক ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি।#
পার্সটুডে/এমবিএ/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।