ফিলিস্তিনিদের কূটনৈতিক বিজয়
অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। বাংলাদেশের সময় আজ (বুধবার) ভোররাত চারটার দিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় প্রস্তাবটি পাস হয়। প্রস্তাবে মানবিক কারণে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে সেখানে ব্যাপকভাবে ত্রাণ তৎপরতা চালানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে মৌরিতানিয়া ও মিসর এই প্রস্তাব তুলেছিল। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও ইরানসহ ১৫৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ ১০টি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। ভোটদানে বিরত ছিল ২৩টি দেশ।
সবগুলো আরব ও মুসলিম দেশ এবং এশিয়া মহাদেশের মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সবগুলো দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে। এমনকি এশিয়া মহাদেশে আমেরিকার কৌশলগত মিত্র হিসেবে পরিচিত জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
যে ১০টি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে সেগুলোর মধ্যে আমেরিকা ও ইসরাইল ছাড়া উল্লেখযোগ্য দেশ হচ্ছে অস্ট্রিয়া, লাইবেরিয়া গুয়েতেমালা ও প্যারাগুয়ে। এছাড়া, ভোটদানে বিরত থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে জার্মানি, নেদারল্যান্ড, ব্রিটেন ও ইউক্রেন।
ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ওঠা প্রস্তাবে বেশির ভাগ সময় জাতিসংঘের ১৪০টি বা তার বেশি দেশ ভোট দিয়ে আসছিল। তবে গাজায় ইসরাইলের হামলা বন্ধের দাবিতে তোলা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট সেই সংখ্যাও ছাড়িয়ে গেছে।
বাধ্যতামূলক নয় তবে ফিলিস্তিনিদের জন্য কূটনৈতিক বিজয়
গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি যে পাস হবে তা আগেই ধারণা করা হচ্ছিল। অবশ্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাব মানা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু ১৫০টির বেশি দেশের ভোটে প্রস্তাবটি পাস হওয়ার ঘটনাকে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ যুদ্ধবিরতির দাবিতে সোচ্চার হওয়ায় নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দেয়া থেকে বিরত থাকতে আমেরিকার ওপর চাপ তৈরি হবে। চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তোলা হতে পারে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব তুলেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে প্রস্তাবটিতে ভেটো দেয় নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে গাজায় রক্তপাত থামানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
জাতিসংঘের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস
ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতা ইজ্জাত আর-রিশক জাতিসংঘ সাধাণ পরিষদের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এখন আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে ইহুদিবাদী ইসরাইলকে বাধ্য করা। তিনি বলেন, ইসরাইলকে অবশ্যই ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন, গণহত্যা ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বন্ধ করতে হবে। #
পার্সটুডে/এমএমআই/১৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।