হামাসের হাতে আটক নিজেদের ৩ বন্দিকে হত্যা করলো ইসরাইল:
প্রবল চাপে নেতানিয়াহু সরকার: বন্দি বিনিময় চুক্তির জন্য দৌড়ঝাঁপ
ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস যোদ্ধাদের হামলায় তাদের আরো দুই সেনার নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। এর ফলে গত ২৭ অক্টোবর গাজায় স্থল অভিযান শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গাজায় ১২১ ইহুদিবাদী সেনা নিহত হলো।
ইসরাইলি দখলদার বাহিনী বলেছে, নিহত দুই সেনার একজন জেরুজালেমের অধিবাসী মাস্টার সার্জেন্ট (রিজার্ভিস্ট) জোসেফ আভনার ডোরান (২৬)। গাজা উপত্যকার উত্তর অংশে নিহত এই সেনা শাইয়্যেতেত-১৩ কমান্ডো বাহিনীর হয়ে গাজায় যুদ্ধ করছিল।
অন্যদিকে রামাত ইশায়ি শহরের অধিবাসী সার্জেন্ট মেজর (রিজার্ভিস্ট) শালেভ জাল্তসম্যান (২৪) দক্ষিণ গাজায় নিহত হয়েছে। ইসরাইলের ৫৫তম প্যারাট্রুপার ব্রিগেডের হয়ে সে গাজায় যুদ্ধ করছিল।
ইসরাইলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গাজায় ১২১ জন ইহুদিবাদী সেনা নিহত হলেও হামাস বলছে, প্রকৃত নিহত দখলদার সেনার সংখ্যা এর কয়েকগুণ বেশি। তবে হামাসের পক্ষ থেকে স্বতন্ত্র কোনো সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি।
নিহত ৩ বন্দির হাতে সাদা পতাকা ছিল
এদিকে, গাজা উপত্যকার শুজাইয়া এলাকায় শুক্রবার হামাসের হাতে আটক নিজেদের তিন বন্দিকে ভুল করে গুলি করে হত্যা করার ঘটনায় প্রবল অভ্যন্তরীণ চাপে পড়েছে ইসরাইল সরকার। শনিবার ইসরাইলের একজন সামরিক কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, ভুল করে তিন ‘পণবন্দি’কে গুলি করে হত্যা করার সময় তাদের হাতে সাদা পতাকা ছিল। ওই কর্মকর্তা বলেন, একজন সেনা শুক্রবার শুজাইয়া এলাকায় স্বল্প দূরত্ব থেকে ওই পণবন্দিদের বেরিয়ে আসতে দেখে। তাদের হাতে থাকা একটি লাঠিতে সাদা কাপড় বাঁধা ছিল।
ওই কর্মকর্তা বলেন, সংশ্লিষ্ট একজন ইসরাইলি সেনা তাদেরকে হামাস যোদ্ধা ও হুমকি মনে করে গুলি চালায়। ওই সেনাসদস্য তাদেরকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিলে অন্য সেনারাও গুলি চালায়।
নিজেদের ৩ বন্দিকে হত্যা করে প্রবল চাপে নেতানিয়াহু সরকার
ইসরাইলি সেনাদের হাতে পণবন্দি হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার রাতেই তেলআবিবে বড় ধরনের বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ইসরাইলি সেনা সদরদপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় অনেকে নেতানিয়াহু সরকারের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে বক্তব্য দেন।
বলপ্রয়োগ করে নয় বরং পণবন্দিদের মুক্ত করতে হামাসের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগে থেকেই ইসরাইলের ভেতরে প্রবল চাপ ছিল নেতানিয়াহু সরকারের ওপর। ওই তিন পণবন্দি নিহত হওয়ার পর সে চাপ আরো বেড়েছে। হামাসের হাতে থাকা ইসরাইলি বন্দিদের আত্মীয়-স্বজন বলছেন, বলপ্রয়োগ করে উদ্ধার করতে গেলে বাকি বন্দিদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে। #
পার্সটুডে/এমএমআই/১৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।