'আগ্রাসীরা অবশ্যই চরম পরিণতি ভোগ করবে'
ইরানের পরমাণু স্থাপনা মার্কিন হামলা সম্পর্কে আইআরজিসির বিবৃতি
ইরানের ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুদ্ধবিমান। ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে অবৈধভাবে সামরিক আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)। বিবৃতিতি হুবহু উপস্থাপন করা হলো:
পরম করুণাময় আল্লাহর নামে
হে, ইরানের সম্মানিত ও বীর জাতি!
আজ সকালে, মার্কিন সরকার ইসরাইলের সাথে সমন্বয় করে, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে অবৈধভাবে সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে এমন স্পষ্ট ও নজিরবিহীন অপরাধ করেছে যা জাতিসংঘের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন, এনপিটি চুক্তি এবং দেশগুলোর জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধার মৌলিক নীতিমালাগুলোর লঙ্ঘন।
ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রথম মুহূর্ত থেকেই, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর কাছে এটা স্পষ্ট ছিল যে, আমেরিকার ব্যাপক সমর্থন এবং সহযোগিতা এই আগ্রাসনের পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে বড় ভূমিকা রেখেছে। এতে প্রমাণ হয় যুদ্ধ ক্ষেত্রে ইসরাইল প্রকৃতপক্ষে অক্ষম এবং তাদের না আছে উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষমতা, না আছে পাল্টা আঘাত থেকে পালানোর ক্ষমতা।
আমেরিকার অতীতের ব্যর্থ দুঃসাহস দেখানোর পুনরাবৃত্তি থেকে বোঝা যায় তারা এ অঞ্চলের বাস্তবতা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে। বারবার ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরিবর্তে, ওয়াশিংটন শান্তিপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলোতে সরাসরি আক্রমণ করে তারা আগ্রাসনের সামনের সারিতে নিজেকে বসিয়েছে। আল্লাহর রহমতে এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর ব্যাপক গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে, এই আগ্রাসনে অংশগ্রহণকারী বিমানগুলো উড্ডয়নের স্থানগুলো চিহ্নিত এবং পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। যেমনটি আমরা বারবার বলেছি, এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির সংখ্যা, এ বিস্তৃতি এবং বিশালতা কোনও শক্তি নয় বরং এটা তাদের দুর্বলতাকে দ্বিগুণ করেছে।
আমরা আপনাকে দৃঢ়ভাবে মনে করিয়ে দিচ্ছি যে, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের দেশীয় ও শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তি কোনও আক্রমণের মাধ্যমে ধ্বংস করা যাবে না; বরং, এই আক্রমণ ইরানের তরুণ ও দৃঢ়চেতা বিজ্ঞানীদের অগ্রগতি ও উন্নয়নের ইচ্ছাকে আরো শক্তিশালী করবে।
ইরানের মহান জাতি এবং বিশ্বসমাজ স্পষ্টভাবে জানে যে ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) এই সম্মিলিত এবং পূর্ণাঙ্গ চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের অবস্থা সম্পর্কে ভালভাবে অবগত আছে এবং ট্রাম্প, হোয়াইট হাউস ও তেল আবিবের অপরাধী চক্রের হৈ চৈ -এ কখনই ভীত হবে না।
ইসরাইলি আগ্রাসনের জবাবে ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-থ্রি’ সামরিক হামলা শুরু করেছে, যার ফলে ইসরাইলিরা এখন পর্যন্ত ২০টি ওয়েভের সম্মুখীন হয়েছে। এছাড়া, ইসরাইলের অবকাঠামো, কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহ এবং তাদের নানা স্বার্থের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট এবং ভয়াবহ হামলা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়াও, সন্ত্রাসী আমেরিকার আজকের আগ্রাসনের ফলে আত্মরক্ষার বৈধ অধিকারের কাঠামোর মধ্যে থেকেই আমরা বিকল্প এমন পদেক্ষপ নিয়েছি যা তাদের কল্পনারও বাইরে এবং ইরানে আগ্রাসীরা অবশ্যই দুঃখজনক ও অনুশোচনামূলক চরম পরিণতি ভোগ করবে।
সর্বশক্তিমান আল্লাহ শক্তির উপর নির্ভর করে, সর্বোচ্চ কমান্ডার-ইন-চিফের ব্যবস্থাপনা ও নির্দেশের অধীনে থেকে, মহান ইরানি জাতির সমর্থনে এবং ইসলামী প্রতিরোধ ফ্রন্ট ও বিশ্বের ডানপন্থী ও স্বাধীনতাকামীদের সাহচর্যে, আমরা ইরানের সম্মান ও নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আল্লাহর দয়ায়, আমরা ইরান, ইরানিদের জন্য এবং প্রকৃতপক্ষে সমগ্র মুসলিম জাতির জন্য ইতিহাস সৃষ্টিকারী বিজয় প্রত্যক্ষ করব।#
পার্সটুডে/এমআরএইচ/এমএআর/২২
