জুন ০৯, ২০২৪ ২১:০৬ Asia/Dhaka
  • ইহুদিবাদী ইসরাইল বিশ্বের সেরা কর্মকর্তা ও কর্মীদের হত্যাকারী

ইরান ও আরব দেশগুলো বিশেষ করে ফিলিস্তিন, মিশর, সিরিয়া, ইরাক ও লেবানন ইসরাইল কর্তৃক সন্ত্রাসের শিকার হয়ে সবচেয়ে বেশি জীবন উৎসর্গ করেছে।

ইহুদিবাদী ইসরাইলের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ সম্ভবত বিশ্বের অন্য যেকোনো গোয়েন্দা সংস্থার চেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। রনিন বার্গম্যানের রাইজ অ্যান্ড কিল ফার্স্ট বই অনুসারে এই হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা তিন হাজারের বেশি।

'ইউ কিল সুনার' বইটি ইহুদিবাদী ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা গঠনের পটভূমি এবং প্রক্রিয়ার একটি ইসরাইল বিবরণ এবং এই সংগঠনগুলোর মাধ্যমে পরিচালিত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করেছে। ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠী সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোকে তার শক্তি বলে মনে করে। এইভাবে ভুয়া ইসরাইলি শাসক গোষ্ঠী পশ্চিম এশিয়ার নিরাপত্তা সমীকরণে তার অবস্থান উন্নত করতে চায় এবং সন্ত্রাসী নীতির বাস্তবায়ন থেকে নিম্নলিখিত লক্ষ্যগুলি অনুসরণ করে থাকে:

ক) প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া এবং কৌশলগত কমান্ডের ধ্বংস করা বা ব্যাঘাত ঘটানো।

খ) ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তথ্য এবং অভিযানমূলক তৎপরতার ব্যর্থতার জন্য ফিল্ডে পুনরায় উদ্যোগ গ্রহণ করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের চেষ্টা করা।  

গ) সামরিক এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে নিজের ভাবমূর্তি উন্নত করা।

ঘ) অধিকৃত অঞ্চলের অভ্যন্তরে চলমান নানামুখী সঙ্কট ছেপে রাখা  এবং অভ্যন্তরীণ সমস্যা থেকে জনমতকে অন্যদিকে সরিয়ে দেয়া।

ইরান এবং আরব দেশগুলো বিশেষ করে ফিলিস্তিন, মিশর এবং লেবাননের জনগণ ইহুদিবাদী ইসরাইলের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছে এবং এই কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে স্পষ্ট ও প্রত্যক্ষ নথি না থাকা সত্ত্বেও ইসরাইলের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদই এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে প্রথম এবং প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে ধরা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরাইলের সবচেয়ে আলোচিত হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে একটি হল ইরান ও ইরাকের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি ব্যাহত করার লক্ষ্যে এই দুই দেশের বিজ্ঞানীদের ওপর গুপ্ত হত্যা চালিয়েছে তেল আবিব সরকার।

এভাবে ইহুদিবাদী ইসরাইল কিছু হত্যাকান্ড ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূখন্ডের অভ্যন্তরে এবং কিছু অধিকৃত ফিলিস্তিনের সীমানার বাইরেও ঘটিয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের মধ্যে একটি ছিল ফ্রান্সে ১৯৯২ সালে আতেফ বেসিসোর শাহাদাত। বেসিসো প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের একজন উচ্চ পদস্থ সদস্য ছিলেন। এই সংগঠনটি ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মধ্যে একটি জোট তৈরি করে আসছিল।

বার্গম্যান "ইউ কিল সুনার" বইতে বেসিসোর হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে,

ইসরাইলের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেছিলেন যে ইউরোপীয় গোয়েন্দা পরিসেবাগুলোর সঙ্গে বেসিসোর যোগাযোগ ইয়াসিন আরাফাতের আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে সম্পূর্ণরূপে বৈধ করার পাশাপাশি ইসরাইলকে বিচ্ছিন্ন করে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা আদায় করা তার একটি বড় পদক্ষেপ ছিল।

বেসিসোর হত্যাকাণ্ড নিয়ে বইটি এইভাবে বর্ণনা দিয়েছে:

শেষ মুহুর্তে বেসিসো বিমানে উঠার পরিবর্তে বন থেকে প্যারিস যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তার হোটেলও পরিবর্তন করেন। বেসিসো এই পরিবর্তনগুলো করেছিলেন কারণ তিনি তার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন। কিন্তু একটি দল হোটেলের লবিতে বেসিসোর জন্য অপেক্ষা করছিল এবং তাকে তার রুম পর্যন্ত অনুসরণ করেছিল। দুই ব্যক্তি তাকে পাঁচবার গুলি করে। তারা যে বন্দুকটি ব্যবহার করেছিল সেটি একটি সাইলেন্সার টাইপের বন্দুক ছিল এবং তারা তাকে হত্যা করার পরে তদন্তকে কাজকে কঠিন করে তোলার জন্য তারা অবিলম্বে সেটি সরিয়ে নিয়েছিল।#

পার্সটুডে/ বাবুল আখতার/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ