ইসরাইলি সংবাদপত্রের শিরোনামের পর্যালোচনা | নেতানিয়াহু ট্রাম্পের নীতিকে "আমেন" বলছেন: দৈনিক হাইয়্যুম
-
• ইসরাইলী দৈনিক হাইয়্যুম পত্রিকা
পার্সটুডে- সোমবার, ইসরাইলের দৈনিক হাইয়্যুম পত্রিকা হামাস কর্তৃক দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী অর্থাৎ (ইসরাইলি-আমেরিকান) বন্দীর মুক্তি এবং ইরান-মার্কিন পারমাণবিক আলোচনাকে তাদের সংবাদের শীর্ষে স্থান দিয়েছে।
পার্সটুডে জানিয়েছে, ইসরাইলি দৈনিক হাইয়্যুম তাদের প্রথম পৃষ্ঠায় শিরোনামে লিখেছে: ইরান-মার্কিন পারমাণবিক আলোচনা আরো আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য "সমঝোতার" মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। রবিবার ট্রাম্প প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘোষণা করেছেন যে কারিগরি দিকগুলোতে মনোযোগ দিয়ে ইরানের সাথে আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। ওমানে অনুষ্ঠিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চতুর্থ দফার পারমাণবিক আলোচনার সমাপ্তির পর এই ঘোষণা আসে। পদস্থ কর্মকর্তারা জানান, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ হুইটেকার মাস্কাটে ইরানি প্রতিনিধিদের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ আলোচনা করেছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন: "ইরানের সাথে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে যাতে কারিগরি নানা দিক নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে পারি।"
অন্য একটি প্রবন্ধে, ইসরাইলি দৈনিক হাইয়্যুম দ্বৈত-নাগরিক (ইসরাইলি-আমেরিকান) বন্দী এডেন আলেকজান্ডারের মুক্তির বিষয়ে বলেছেন, "সামরিক চাপের জন্য ধন্যবাদ": প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ট্রাম্প-হামাস চুক্তিকে বৈধতা দেয়। হাইয়্যুম লিখেছে: প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় আমেরিকান জিম্মির মুক্তিকে ইসরাইলের সামরিক চাপের কৌশলের ন্যায্যতা হিসেবে উপস্থাপন করছে।
অন্য একটি প্রবন্ধে, এই ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের পশ্চিম এশিয়া সফরের কথা উল্লেখ করে প্রশ্ন তুলেছে: ট্রাম্প কি মধ্যপ্রাচ্যে তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন? এই প্রবন্ধে, হাইয়্যুম একজন প্রবীণ সৌদি গবেষক আজিজ আল-ঘাশিয়ানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন যে তিনি বিশ্বাস করেন না যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরের পর মার্কিন-সৌদি সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনও গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসবে।
দৈনিক হাইয়্যুম তেল আবিব এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে যে বিভেদ তৈরি হয়েছে তা তুলে ধরে নেতানিয়াহুর নীতির সমালোচনা করে বলেছে যে ট্রাম্প যা কিছু করবেন নেতানিয়াহু তা মেনে নিবেন। নিবন্ধটিতে বলা হয়েছে: ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপারে আশা করেছিলেন: তিনি হামাসের উপর চাপ সৃষ্টি করবেন, ইরানকে হতাশ করবেন, হুতিদের উপর আক্রমণ করবেন এবং সৌদি আরবের সাথে একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, জিম্মিরা গাজাতেই রয়ে গেছে, হোয়াইট হাউস ইসরাইলকে ইরানে আক্রমণ করতে বাধা দিয়েছে এবং ইসরায়েলের "প্রিয়" প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, যিনি শপথ নিয়েছিলেন যে জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া হলে হামাসের উপর নরক নামিয়ে আনবেন, তিনি ইসরাইলে না গিয়ে রিয়াদে উড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ইসরাইলি বিমান সংস্থাগুলোর বয়কট আরেকটি ঘটনা যা নিয়ে দৈনিক হাইয়্যুম শিরোণাম করেছে, "ইসরাইলে প্রধান বিমান সংস্থাগুলোর ফ্লাইট বাতিলের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে"। এই মিডিয়ায় এসেছে; প্রধান আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলি এখনও ইসরাইলে ফ্লাইট পুনরায় চালু করেনি এবং সাম্প্রতিক দিনগুলোতে কিছু বিমান সংস্থা তাদের স্থগিতাদেশের মেয়াদ ফের বাড়িয়েছে। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ১৪ জুন পর্যন্ত ইসরাইলে তাদের ফ্লাইট বাতিল করে দীর্ঘতম স্থগিতাদেশের ঘোষণা দিয়েছে। আইবেরিয়া এক্সপ্রেস ৩১ মে পর্যন্ত ইসরাইলে তাদের ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
এই ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমটির নিবন্ধে আরও লেখা হয়েছে: উইটকফের সফর কি একটি বড় চুক্তি এবং ইসরাইলের জন্য আরো ছাড়ের সুবিধা করে দেবে? মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের ইসরাইলের সাথে উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতি পরিচালনা করছেন এবং ইরানের সাথে আলোচনার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে কথা বলবেন।
হাইয়্যুম অবশেষে তার প্রধান কলামে এই শিরোনামে লিখেছে: ইসরাইল কর্তৃক হত্যার ভয়ে হিজবুল্লাহ লেবানন থেকে ইরানি অফিসারদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। হাইয়্যুম আরো লিখেছে: হিজবুল্লাহ এ জন্য উদ্বিগ্ন যে তেহরানের জন্য সমস্যা তৈরি করতে এবং ওয়াশিংটনের সাথে তাদের আলোচনা ব্যাহত করতে ইসরাইল ইরানি সামরিক অফিসারদের হত্যা করতে পারে। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ওমানে চলমান পারমাণবিক আলোচনার সাফল্যের জন্য হিজবুল্লাহও আশাবাদী বলে জানা গেছে।#
পার্সটুডে/এমআরএইচ/১৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।